মৃত্যুর পরের জীবনটা আসলে কেমন হবে? সেখানে কী অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য? ঈশ্বর দেখতে কেমন হবেন? সত্যিই কি আমাদের স্বর্গ কিংবা নরকের দেখা পেতে হবে নিজ নিজ কর্মফল অনুযায়ী?
এমন অনেক হাজারো প্রশ্নের মাঝে ঘুরপাক খেতে হয় মানুষকে। যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন, তারা নিজ নিজ ধর্মের বই অনুযায়ী মেনে চলেন সবকিছু। অবিশ্বাসীদের মনে জাগে হাজারো প্রশ্ন। এদের মাঝে তো আবার কেউ কেউ আছেন যারা বলে বসেন মৃত্যুর পরের জীবন তারা দেখে এসেছেন! কীভাবে? কারণ, তাদের পুনর্জন্ম ঘটেছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন তাদের কথা, কেউ কেউ ফুঁৎকারে উড়িয়ে দেন। আসলেই কি তা সম্বব নাকি? আবার এমন অনেক তথ্য প্রমাণ হাজির করা হয় তাদের সামনে যে অবিশ্বাসীরাও মাথা চুলকাতে শুরু করে। তৈরি হয় নানা ধরনের গুঞ্জন। আজকে এমনই এক বৃদ্ধের গল্প শোনাবো, যার কাছে ছিল প্রাচীন এক শহরের গল্প। যে গল্প ধন্দে ফেলে দিয়েছিল প্রত্নতাত্ত্বিকদেরও।
সারা জীবনভর আর্থার ফ্লাওয়ারডিউকে তাড়া করে এসেছিল একটি বিভীষিকা। তিনি একটি স্বপ্ন দেখতেন। রহস্যময় ও ব্যাখ্যার অতীত এ স্বপ্নে তিনি দেখতেন একটি মরুভূমি ও মন্দিরে ঘেরা একটি শহরকে। শহরটি অবস্থান করত একটি উঁচু পাহাড়ের চূড়ায়। বিবিসির একটি প্রামাণ্যচিত্রতে দেখা যায়, আর্থার তার স্বপ্নে যে শহরটি দেখতেন, সেটি আসলে জর্ডানের পেট্রা নগরী। এই নগরীর বর্ণনার সাথে হুবহু মিলে গিয়েছে।
এমন একটি স্বপ্নের কথা তো চেপে রাখা যায়না। আর্থার তার এই অদ্ভুত স্বপ্ন কিছু মানুষের সাথে বিনিময় করলেন। বিবিসি তার সাথে যোগাযোগ করে বলল, তাকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করতে চায়। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা পেট্রায় নিয়ে চলল আর্থারকে। উদ্দেশ্য, তিনি সত্য বলছেন কিনা, সেটি যাচাই করা। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, আর্থার খুব সহজেই পেট্রা নগরীর আনাচে কানাচে খুঁজে বের করল। এমনকি যেসব সাইট তখন অনাবিষ্কৃত ছিল, সেগুলোও দেখিয়ে দিলো সে। একটি প্রাচীন যন্ত্র আবিষ্কার করা হয়েছিল পেট্রা নগরীর কাছেই। এটির ব্যবহার কী, তা জানতেন না বিজ্ঞানীরা। আর্থার বিজ্ঞানীদের দেখিয়ে দিলো সেটি কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে, একটি গার্ড স্টেশন দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন আর্থার। তিনি বলতে থাকেন যে এখানেই তাকে ছুরিবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছিল!
অনেকেই মনে করেন আর্থারের এই স্বপ্ন একটি বানোয়াট ও মিথ্যা বানানো স্বপ্ন। আসলে এমন কোনো স্বপ্ন তিনি কখনও দেখেননি। কেবলমাত্র মিডিয়া কাভারেজ পাবার জন্যই এমনটা করেছিলেন। তবে আর্থারের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী কখনওই মনে হয়নি যে এমন একটি শহর সম্পর্কে বানিয়ে বানিয়ে কথা বলার দক্ষতা তার রয়েছে। তাছাড়া নগরী সম্পর্কে এত বিশদ জ্ঞান তখন বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষাবিদদেরও ছিল না। তাহলে আর্থার কী করে পাবেন এমন সব তথ্য? নগরীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা, নগরী সম্পর্কে এমন সব তথ্য কেবল এমন একজনের পক্ষেই জানা সম্ভব, যিনি কিনা আগেও এখানে থেকেছেন।
তাহলে আর্থারের কি সত্যিই পুনর্জন্ম হয়েছিল? বিজ্ঞানের কাছে আজও এটি একটি মহাবিস্ময়।
(সূত্রঃ Rankerz)