টি-২০’র এই যুগে ছয় মারা এখন আর আহামরি কোন ব্যাপার নয়। ক্রিজে এসেই ধুমধারাক্কা ব্যাটিংয়ে পারদর্শী এখনকার ব্যাটসম্যানেরা। কিন্তু তারপরেও ছয় বলে ছয় ছক্কা মারাটা এখনো আগের মতই কঠিন। সাথে যদি যোগ করা হয় ২০ বলে সেঞ্চুরিও, তাহলে সেটি হয়ে ওঠে আরও কঠিন, আরও মাহাত্ম্যপূর্ণ।
কঠিন এই কাজটিই করে দেখিয়েছেন ভারতীয় জাতীয় দলের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা। ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল আয়োজিত জে.সি. মুখার্জী ট্রফি ম্যাচে মোহনবাগানের হয়ে এই দ্বৈত কীর্তি করেছেন ঋদ্ধিমান। ছয় বলে ছয় ছক্কা মারার বিরল ক্লাবে নাম লেখানোর পাশাপাশি করেছেন ২০ বলে সেঞ্চুরিও।
মাত্র ২০ বলে অপরাজিত ১০২ রানের ইনিংস খেলার পথে ১৪ টি ছয় ও ৪ টি চার মেরেছেন সাহা! তার এই হারিকেন ইনিংসে ভর করেই ১৫২ রানের টার্গেট মাত্র ৭ ওভারেই পেরিয়ে গেছে মোহন বাগান, ম্যাচও জিতেছে ১০ উইকেটে।
প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে শুরু করা সাহা এরপর শুধু চার ছয়ের ফুলঝুরিই ছুটিয়েছেন। সাহার স্ট্রাইক রেটের মত অবিশ্বাস্য কিছু ক্রিকেটে খুব কমই দেখা যায়, ইনিংসটি খেলার পথে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৫১০! এর মধ্যে ইনিংসে সপ্তম ওভারে মিডিয়াম পেসার আমন প্রসাদের ৬ বলে ছয় ছক্কা মেরেছেন, একটি ওয়াইড সহ ওই ওভারে মোট রান এসেছে ৩৭। ওই ওভারেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছেন, শেষ ছক্কাটি মারার পথে পূর্ণ করেছেন সেঞ্চুরি।
ম্যাচ পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় সাহা বলেছেন, ‘প্রথম বল থেকেই আমি টের পাচ্ছিলাম আমি মাঝব্যাটে বল লাগাতে পারছি, সেজন্যই অমন চালিয়ে খেলেছি। পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কার পর ষষ্ঠ বলেও আমি ছক্কার জন্যই মারতে চেয়েছিলাম। খুব ভাল লাগছে যে আমি করতে পেরেছি সেটা।’
এপ্রিলের ৭ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে আইপিএল, আর সেটার কথাও যে তার মাথায় ছিল সেটা তার কথাতেই পরিষ্কার, ‘আমি জানিনা এটা কোন রেকর্ড কিনা। সামনেই আইপিএল, আমি তাই চাইছিলাম ভিন্ন ভিন্ন শট খেলতে। পরিকল্পনা কাজে লেগে গেছে।
আইপিএল শুরুর আগে নিজের এমন প্রস্তুতিতে খুশি সাহা, ‘ইনজুরির কারণে সাউথ আফ্রিকা থেকে ফেরত আসার পর আমাকে কামব্যাক করতে হত। আইপিএলের মত বড় টুর্নামেন্টের আগে সেঞ্চুরি করা অবশ্যই ভাল, তা সে যে ফরম্যাটের ক্রিকেটই হোক না কেন। আমি এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। ক্লাব ক্রিকেটের চেয়ে আইপিএলের মান অনেকটা বেশি।’
আগের মৌসুমগুলোতে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেললেও এবার ৫ কোটি ভারতীয় রুপিতে সাহাকে কিনে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। টি-২০ তে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেও সানরাইজার্সে বিধ্বংসী দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও শিখর ধাওয়ান থাকায় ওপেনিংয়ে নামার সম্ভাবনা নেই সাহার। তাই দলের প্রয়োজনে যে কোন পজিশনেই ব্যাট করতে প্রস্তুত তিনি।