পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আজ নারীরা মুক্ত, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে বলে বৃথাই আস্ফালন করা হয়। অফিসে, আদালতে, স্কুলে কলেজে এমনকি ঘরেও নারীদের অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হয় নি। হ্যা, নারীরা পুরুষের মতোই কাজ করতে পারছেন, পড়াশোনার অধিকার পাচ্ছেন কথাটা সত্য। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে ঘরের লাগামটা এখনো পুরুষদের হাতেই রয়েছে। নারীদের কথা বলবার খুব বেশি অধিকার আজো দেয়া হয় না। শুধুমাত্র তৃতীয় বিশ্বের দেশেই নয়, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও নারীদের অবস্থার আজ খুব বেশি হেরফের হয়নি। পত্র পত্রিকায় যৌন হয়রানি কিংবা ধর্ষণের খবরগুলো পড়লে শিউরে উঠতে হয়। দিন দিন কোথায় যাচ্ছে আমাদের সমাজ?
ছোট একটি ঘটনা বলি। গতকাল ছিল ৭ই মার্চ। বাঙালির ইতিহাসে এই দিনটির তাৎপর্য কতখানি, তা বিশেষ বলার কোনো অপেক্ষা রাখে না। বাঙালি জাতির পিতার ডাকে এইদিন মানুষের রক্ত টগবগ করে ফুটে উঠেছিল। হ্যা, স্বাধীনতাটা এবার ছিনিয়ে আনতেই হবে। রক্ষা করতে হবে এই মাতৃভূমিকে। দিনটি স্মরণ করবার জন্য সোহরাওয়ার্দী ময়দানে জমায়েত হয়েছিল হাজারো মানুষ। প্রতিদিনকার মতোই মানুষ কাজে গিয়েছিল, পড়াশোনায় গিয়েছিল স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ঘরে ফিরে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেখে শিউরে উঠি আমরা। এক কলেজছাত্রী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এই লজ্জায় তিনি ছি ছি করেছেন এই সমাজকে। জাতি হিসেবে আমাদের কি খুব গর্বের দিন ছিল গতকাল? আজকেই কিনা আবার নারী দিবস! এই লজ্জা আমরা কোথায় রাখি?
বেগম রোকেয়া কি এমন একটি সমাজ চেয়েছিলেন? তিনি ছিলেন শেকলভাঙা নারী। সমাজের চাপিয়ে দেয়া রীতি যাকে আবদ্ধ করতে পারে নি। ভাগলপুরের বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হয়েছিলেন নারীদের জন্য এক অনির্বাণ শিখা। কই, আজ তো তার মতো কেউ এমন করে ভাবে না! নারীরা আজ অফিসে যাচ্ছে, নিজেকে চাইছে পুরুষের সমকক্ষ করে ভাবতে। কিন্তু বেগম রোকেয়ার মতো একজন আইডল কি তৈরি হয়েছে? হয়েছে কিন্তু ধর্ষকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা পুরুষ সমাজ চায় নারীকে দাবিয়ে রাখতে, পায়ের তলায় পিষে ছিন্নভিন্ন করে দিতে। এগিয়ে আসতে হবে নারীকেই। শুধুমাত্র দিবসের দিন তাদের জ্বলে উঠলে হবে না, বছরের প্রতিটি দিন তাদেরকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যেতে হবে, একে অন্যকে সাহস যুগিয়ে যেতে হবে।
আসুন, নারী দিবস নিয়ে কিছু নারীর ভাবনা ছবিতে জেনে আসি-