গত বছর এই শেষ ষোলর লড়াইয়েই বার্সেলোনার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের। যেই নেইমার একা হাতে তাদের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন, সেই নেইমারকেই এবার ছোঁ মেরে নিয়ে এসেছে ২২২ মিলিয়নের বিশ্বরেকর্ড গড়ে। তাতেও কাজের কাজ কিছুই হল না। এবারও সেই শেষ ষোলতেই হেরে আরও একবার হতাশাজনকভাবে বিদায় নিতে হল নাসের আল খেলাইফির পিএসজিকে। পার্থক্য, এবার হন্তারক বার্সা নয়, বার্সারই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ। নিজেদেরই মাঠে রিয়ালের কাছে ২-১ গোলে হেরে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ গোলের বড় ব্যবধানে হার বরণ করল তারা।
অথচ কেবল এই চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ের আশায় মিলিয়ন মিলিয়ন অর্থ বিনিয়োগ করেছেন খেলাইফি। নেইমার, কাভানি, এম্বাপ্পে, ডি মারিয়া, ড্র্যাক্সলার, দানি আলভেজ, থিয়াগো সিলভা- কে নেই এই দলে! তারপরেও ইউরোপের কুলীন আসরে এসেই কেন জানি বারবার খেই হারিয়ে ফেলছে খেলাইফির দল। লীগ ওয়ানে দাপটের সাথে জিতে আসা দলটাই চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এসে হয়ে যায় কেমন বিবর্ণ!
গতবারের অবিশ্বাস্য হারের পর এবার আরও বেশি মরিয়া হয়ে ছিলেন খেলাইফি, আর সেই মরিয়া হয়ে থাকার ফসল নেইমার। শুধু নেইমারেই সন্তুষ্ট হলেন না, এরপর আনলেন আলভেজ আর এম্বাপ্পেকেও। নেইমার অবশ্য ইনজুরির কারণে ছিলেন না, কিন্তু কাভানি-এম্বাপ্পে-ডি মারিয়ারা পারেননি খেলাইফির মুখে হাসি ফোটাতে।
পিএসজি ফ্যানেরা ঘোষণা দিয়েছিলেন পার্ক ডি প্রিন্সেসকে রণক্ষেত্র করে তোলার। তা তারা করেছেন বটে, কিন্তু সেই রণক্ষেত্র থেকেই রাজার বেশে বেরিয়ে গেলেন রোনালদো-ক্যাসেমিরোরা। ম্যাচের শুরুতে অবশ্য বড় চমকই দিয়েছিলেন জিদান। ক্রুস-মদ্রিচকে একসাথে বসিয়ে দুই উইংয়ে নামালেন অ্যাসেন্সিও-ভাস্কুয়েজকে। ফাটকাটা কাজে লেগেছে বলত হবে, এই দুয়ের বোঝাপড়াতেই ম্যাচে নিজেদের প্রথম গোল পেয়েছে রিয়াল, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সৌজন্যে। এই গোলের মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্টে প্রতিটি ম্যাচেই গোল করার ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন সিআর সেভেন।
ম্যাচে ফিরে আসার যদিওবা হালকা সুযোগ ছিল পিএসজির, সেটিও শেষ হয়ে যায় ৬৬ মিনিটে মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে। তবে তার ৫ মিনিট পরেই পিএসজির আশার প্রদীপে নিভু নিভু হয়ে জ্বলতে থাকা সলতেতে আলো জ্বালান নেইমারের অনুপস্থিতিতে দলটির সবচেয়ে বড় ভরসার নাম এডিনসন কাভানি। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিতে হলেও কোন গোল না খেয়ে কমপক্ষে আরও ২ গোল করতে হত পিএসজিকে। সেটি তো হলই না, বরং ৮০ মিনিটে ক্যাসেমিরোর গোল আরও একবার বিদায় নিশ্চিত করে দিয়েছে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটির।