ডায়াবেটিস রোগীদের নিত্য ঝামেলার মধ্যে অন্যতম একটি হল খাবার সমস্যা। কি খাব, কি খাব না তা নিয়ে রোগীরা তো তটস্থ থাকেনই, তার চেয়েও বেশি উদ্বিগ্ন থাকেন রোগীর স্বজনেরা। ডায়াবেটিস রোগীদের তাই বুঝেশুনে খাবার খাওয়া উচিত। প্রিয়লেখার পাতায় আজ থাকছে ডায়াবেটিস রোগীরা কি খাবেন আর কি খাবেন না তার একটি তালিকা।
ডায়াবেটিস রোগীরা যেসব খাবার খাবেন –
ফলমূল
প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকায় ফলের উপস্থিতি থাকা উচিত। আপেল, নাশপাতি, জাম, পেঁপে ইত্যাদি সতেজ ও রঙ্গিন ফলমূল রাখা উচিত রোগীর খাদ্যতালিকায়। এসব ফলে কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল, ভিটামিন ও ফাইবার রয়েছে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
শস্যদানা
সাদা আটার রুটির পরিবর্তে গম, ভুট্টা, বাদামী চাল, বার্লি প্রভৃতি শস্যদানা খাওয়ার অভ্যাস করুন। এসব খাবারে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
সবুজ ও অনমনীয় সবজি
বিভিন্ন অনমনীয় সবজি, যেমন মটরশুঁটি, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, মরিচ এগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এসব সবজিতে কম মাত্রায় চর্বি ও উচ্চ মাত্রায় ফাইবার রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সবুজ শাকসবজি, যেমন লেটুস পাতা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি ইত্যাদিও ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকায় রাখা ভালো। রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর হাই ফাইবার কার্বোহাইড্রেট সময় নিয়ে হজম হয়, তাই রক্তে চিনির মাত্রা মাত্রাতিরিক্ত বাড়তে পারে না।
বাদাম জাতীয় খাদ্য
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অল্প করে বাদাম জাতীয় খাবার, যেমন আখরোট, কাজুবাদাম এগুলো রাখার চেষ্টা করুন।
চর্বিজাতীয় খাবার
উদ্ভিজ্জ তেল , কম চর্বিযুক্ত মেয়োনেজ ইত্যাদি খাবার রাখা যেতে পারে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যতালিকায়।
ওটস
ওটস জাতীয় খাবার রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।সকালে নাস্তা হিসেবে ভাত কিংবা রুটির বদলে ওটস খাওয়া বেশ কাজে দেবে।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সম্পন্ন খাবার
টুনা মাছ সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড রয়েছে । এসব খাবার ব্রেইন ও হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস রোগীরা যা খাবেন না –
সাদা চালের ভাত
সাদা চালের ভাত যত খাবেন, রোগীদের ঝুঁকি তত বাড়বে।গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা চালের ভাত খেলে প্রতিদিন ১১% হারে ঝুঁকি বাড়ে। সাদা চালের ভাত রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই সাদা চালের পরিবর্তে বাদামী চালের ভাত খেতে পারেন, এতে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
কলা ও তরমুজ
এই দুইটি ফলে গ্লুকোজের পরিমাণ অতিরিক্ত বেশি। তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন।
ডোনাট/পেস্ট্রি জাতীয় খাবার
এসব খাবার মুখরোচক হলেও খাওয়া বারণ, কারণ এগুলো প্রক্রিয়াজাত সাদা চাল থেকে তৈরি হয় যাতে উচ্চমাত্রার ফ্যাট ও সোডিয়াম রয়েছে।
লাল মাংস
যত পারবেন লাল মাংস কম খাবেন। লাল মাংসের পরিবর্তে কম চর্বিযুক্ত মাংস খাবেন। মাছ এবং ডিম খান, কিন্তু বেশি করে ভাজবেন না সেগুলো। গুঁড়া দুধ, ভেজিটেবল অয়েল এগুলো এড়িয়ে চলুন।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে এটি ,মোটেও উপাদেয় কোন খাবার না এটি ।
আরো পড়ুন
আপনার প্রতিদিনের খাদ্যাভাস আপনাকে অনেকটা সুস্থ রাখতে পারে । ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের নির্দেশ মতো তৈরী করা খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। সহজ কথায় চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা, শর্করা জাতীয় খাবার খেতে হবে পরিমিত,ঘি-মাখন-চর্বি-ডালডা জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে যদিও তেল খেতে তেমন বাধা নেই। ~ ডায়াবেটিসের 3D সমাধান ~