অতীতের দিনগুলোতে ক্রমাগত জনসংখ্যার বৃদ্ধি ও শিল্প কারখানার বিপ্লবের কারণে দিন দিন খাবারের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর ফ্রিজের সহজলভ্যতার কারণে পচনশীল খাবার সংরক্ষন করাও অনেকটা সহজ হয়ে পড়ে। আর তৎকালীন সময়ে পশু পালন এতটা বিশাল আকারে না হবার কারণে মাংসের অন্যতম উৎস ছিল পাখি।
সে সময় কিছু কিছু খামারী ছিল যারা এই পাখি ব্যবসায়িক ভাবে লালন-পালন করত। কিন্তু তা ছিল বেশ ব্যয়বহুল। আর তৎকালীন সময়ে মেয়েদের পোষাকের কিছু প্রচলন শুরু হয় যাতে ব্যবহৃত হতো পাখির পালক। সব মিলিয়ে বুঝতেই পারছেন পাখির চাহিদা কেমন ছিল। এখন এত পাখি ধরবেন বা শিকার করবেন কিভাবে? চাহিদার কথা মাথায় রেখে আবিস্কার হয় “Punt Gun” নামের এই বন্দুকের।
বিশাল আকৃতির এই বন্দুক বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বসানো হত ভেলা বা লগি ঠেলা (Punt) এর উপরে। আর এই কারনেই বন্দুকের এই রকম নামকরণ করা হয়। নথি ঘাটলে দেখা যায়, ১৯ শতকে আর ২০ শতকের দিকে অনেকেই দাবি করে যে তারা একবারে এই বন্দুক দিয়ে ৯০টি পাখি শিকার করেছে। শিকারিরা দল বেঁধে এই বন্দুক দিয়ে শিকার করত। আর এতে দিনে ৫০০টির মত পাখি শিকার করা সম্ভব ছিল। বেশ বড় বন্দুক হবার কারণে এর ব্যবহার বেশ কঠিন ছিল। এছাড়াও গুলি ছোড়ার ধাক্কায় অনেক সময় নৌকা উল্টে যেত।
বিশাল আকৃতির এই বন্দুককে নৌকার সাথে এমন ভাবে সংযুক্ত করা হত যে লক্ষ্য স্থির করতে সম্পূর্ন নৌকাকেই আগে-পিছে নেওয়া লাগত। এত সংখ্যক পাখিকে এত কম সময়ের মধ্যে শিকার করার ফলে এই সকল এলাকাতে পাখির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে। আর এ কারণে আমেরিকাতে এর ব্যবহার আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয় কিন্তু ব্রিটেনের অনেক এলাকায় আজও এর ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। পকেটে করে এই বন্দুক নিয়ে ঘুরতে না পারলেও, হাতে করে এমন একটি অ্যান্টিক জিনিস বয়ে বেড়ানোর মজাই আলাদা!