ধর্মীয় সৌহার্দ্যের প্রতীক ঢাকার গুরুদুয়ারা নানকশাহী – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ফিচার / ধর্মীয় সৌহার্দ্যের প্রতীক ঢাকার গুরুদুয়ারা নানকশাহী

ধর্মীয় সৌহার্দ্যের প্রতীক ঢাকার গুরুদুয়ারা নানকশাহী

একেশ্বরবাদ ও স্রষ্টার সার্বভৌমত্বের বাণী প্রচারেই জীবন কাটিয়ে দিয়েছিলেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক দেব। সাম্য ও সৌম্যের বাণী প্রচার করতে এসেছিলেন বাংলাদেশে। ১৬ শতকের শুরুর দিকে ঢাকার বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এসে অবস্থান করেছিলেন এ মহামানব। এর প্রায় এক শতক পর যেখানে তিনি অবস্থান করেছিলেন সেখানে গড়ে উঠে শিখদের পবিত্র উপসনালয় গুরুদুয়ারা নানকশাহী। ১৭ শতকের প্রারম্ভে শিখদের ষষ্ঠ গুরু হর গোবিন্দের ধর্ম প্রচারের উদ্যোগের অংশ হিসাবে বর্তমান গুরুদুয়ারা নানকশাহী প্রতিষ্ঠিত হয়।

চার শতকেরও বেশি সময় ধরে এ অঞ্চলে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সৌম্যের বার্তা বহন করছে এ স্থাপনা। দাঁড়িয়ে আছে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও সৌহার্দ্যের প্রতীক হিসাবে। ঢাকার গুরুদুয়ারা নানকশাহী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে অবস্থিত একটি শিখ ধর্মের উপাসনালয়। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কলাভবনের পাশে অবস্থিত। এই গুরুদুয়ারাটি বাংলাদেশে অবস্থিত ৯ থেকে ১০টি গুরুদুয়ারার মধ্যে বৃহত্তম।

শিখ ধর্মের ৬ষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ সিং এর সময়কালে (১৫৯৫-১৬৪৪ খ্রিঃ) ভাইনাথ (মতান্তরে আলমাস্ত) নামের জনৈক শিখ ধর্ম প্রচারক এই স্থানে আগমন করে গুরুদুয়ারাটি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কারো কারো মতে, গুরুদুয়ারাটি নির্মাণের কাজ শুরু হয় ৯ম শিখ গুরু তেগ বাহাদুর সিং এর সময়কালে (১৬২১-১৬৭৫ খ্রিঃ)। ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে এর নির্মাণকার্য সমাপ্ত হয়। পরবর্তীতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি ভগ্নদশা প্রাপ্ত হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ১৯৭২ সালে গুরুদুয়ারাটির ভবনের কিছু সংস্কার করা হয়। ১৯৮৮-৮৯ সালে এটির ব্যাপক সংস্কার সাধন করা হয়, এবং বাইরের বারান্দা ও সংলগ্ন স্থাপনা যোগ করা হয়। সংস্কার কার্যের অর্থায়ন করা হয় বাংলাদেশে ও বিদেশে অবস্থানরত শিখ ধর্মাবলম্বীদের দানের মাধ্যমে। ঢাকার আন্তর্জাতিক পাট সংস্থার তদানিন্তন প্রধান সর্দার হরবংশ সিং এর নির্মাণকার্য তদারক করেন।

একসময় গুরুদুয়ারা নানকশাহীর বিপুল পরিমাণ ভূসম্পত্তি ছিল। আজকের মতো বিরাট ও জমকালো উপাসনালয় না থাকলেও তখন গুরুদুয়ারা নানকশাহীর আয়তন ছিল বিপুল। এর উত্তর দিকে ছিল একটি প্রবেশদ্বার। দক্ষিণদিকে ছিল কূপ ও সমাধিস্থল এবং পশ্চিমে ছিল একটি শান বাঁধানো পুকুর। মূল উপাসনালয় ছাড়াও ভক্তদের থাকার জন্য ছিল কয়েকটি কক্ষ। তবে সেসবের এখন আর অবশিষ্ট নেই। বর্তমান উপাসনালয়টি সীমিত জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে এবং বারবার সংস্কারের ফলে বর্তমান রূপ পরিগ্রহ করেছে।

উঁচু প্রাচীরবেষ্টিত গুরুদুয়ারা নানকশাহীর বর্তমান প্রবেশপথটি রয়েছে দক্ষিণদিকে। উপাসনালয়টির সামনে রয়েছে চমৎকার সবুজ লন। এর বাম দিকে আছে শিখ রিসার্চ সেন্টার, ডানদিকে দোতলা দরবার হল। সামনে পতাকা টাঙানোর স্ট্যান্ড, বৈশিষ্ট্যময় এই উপাসনালয়টি শিখদের নিজস্ব স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত। উপাসনালয়টির ওপর পৃথিবী আকৃতির একটি কাঠামো নির্মিত। তার চারদিকে শিখ ধর্মীয় চিহ্ন খাণ্ডা শোভিত। উপাসনালয়ের শীর্ষে রয়েছে ছাত্রার। এটি শিখদের উপাসনালয়ের চিহ্ন। গুরুদুয়ারা নানকশাহীর ঠিক মাঝখানে রয়েছে একটি বড় কক্ষ। এই কক্ষের চারদিকে চারটি দরজা আছে। মাঝখানে কাঠের তৈরি বেদির ওপর রয়েছে শিখ ধর্মগ্রন্থ গ্রন্থসাহেব। এটাকে বলা হয় শ্রী দরবার সাহিব। বেদির সামনে নবম শিখগুরু তেগ বাহাদুর সিংয়ের ব্যবহূত একজোড়া খড়ম একটি কাচের বাক্সের মধ্যে যত্নসহকারে রাখা আছে। এ কক্ষের মেঝেতে লাল রঙের কার্পেট পাতা আছে। তাতে ভক্তরা বসে গ্রন্থসাহেব পাঠ শোনেন। কক্ষের চারদিকে বারান্দা আছে।

গুরুদুয়ারা নানকশাহীতে একেক সময় একেকজন গ্রন্থির (পুরোহিত) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১৫ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত শ্রীচন্দ্র জ্যোতি নামে এক শিখসাধু এই উপাসনালয়ের পুরোহিত ছিলেন। ১৯৪৭ সালের পর থেকে ষাট দশক পর্যন্ত উপাসনালয়টি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংস্কার করে এর বর্তমান রূপ দেওয়া হয়। বর্তমানে ভাই পিয়ারা সিং প্রধান গ্রন্থির দায়িত্ব পালন করছেন।

গুরু নানকশাহীতে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা দুবার গ্রন্থসাহেব পাঠ ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। তা ছাড়া প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত সাপ্তাহিক জমায়েত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। পুরোহিত গ্রন্থসাহেব পাঠ ও কীর্তন করেন। গুরুদুয়ারার এই কীর্তন ভক্তদের আকুল করে তোলে। সংগীতশিল্পী কিরনচন্দ্র রায় এই গুরুদুয়ারার অতিথিনিবাসে থেকে দীর্ঘদিন এখানে কীর্তন পরিবেশন করেন। কীর্তন ও প্রার্থনা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এখানে শুক্রবারে আগত অতিথিদের জন্য মধ্যাহ্নভোজেরও ব্যবস্থা আছে। গুরুদুয়ারায় আয়োজিত বার্ষিক অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী এবং পয়লা বৈশাখ। এ দুটি পর্ব এখানে অত্যন্ত ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়।

গুরুদুয়ারায় কারও প্রবেশে বাধা নেই, জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সব বয়সী নারী ও পুরুষ এখানে প্রবেশ, প্রার্থনায় অংশগ্রহণ এবং প্রসাদ পেতে পারেন। ঢাকায় বসবাসরত শিখ সম্প্রদায়ের লোকজন নিয়মিত এই গুরুদুয়ারায় আসেন। তা ছাড়া অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকজনকেও শুক্রবার এই উপাসনালয়ে আসতে দেখা যায়। স্থানীয় ভক্ত ও বিদেশি দাতাদের সাহায্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় নির্বাহ হয়।

About farzana tasnim

Check Also

কথা বলবার সময় আমরা ‘অ্যা’, ‘উম’ এসব উচ্চারণ করি কেন?

কথা বলবার সময় আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে ‘অ্যা’, ‘উম’ ইত্যাদি আওয়াজ নিঃসরণ করে থাকি। এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *