ভয়ংকর সুনামির ১৩ বছর: বীভৎস সেই দুর্যোগের আদ্যপান্ত – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ইতিহাস / ভয়ংকর সুনামির ১৩ বছর: বীভৎস সেই দুর্যোগের আদ্যপান্ত

ভয়ংকর সুনামির ১৩ বছর: বীভৎস সেই দুর্যোগের আদ্যপান্ত

১৩ টি বছর পার হয়ে গেছে, অথচ এখনো ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের মানুষের কাছে সেই স্মৃতি যেন চোখের সামনে ভাসে। ভাসারই কথা, সমুদ্রের সেই প্রলয়ঙ্করী রূপ তারা ভুলবে কি করে? চোখের পলকে নিজেদের সর্বস্ব হারাতে দেখেছেন যেই মানুষগুলো, দুঃসহ সেই স্মৃতি কি এত সহজে ভুলে যাওয়া যায়?

আজ সেই দিন, ২৬ ডিসেম্বর। ১৩ বছর আগেও এই দিনটি শুরু হয়েছিল অন্য দশটি দিনের মতই। কিন্তু এরপর যা হল, তা যেন তাদের কাছে এক দুঃস্বপ্ন। যেন কোন এক বিভীষিকাময় কালঝড় এসে তছনছ করে দিয়ে গেল লাখো মানুষের জীবন, স্বপ্ন, সবকিছু!

ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সময় তখন সকাল ৮টা। হঠাৎ করেই রাজধানী জাকার্তার জিও-ফিজিকাল সেন্টারে ধরা পরে সুমাত্রা উপকূলে ভয়ংকর এক ভূমিকম্পের সংকেত। রিখটার স্কেলে সেই ভূমিকম্পের মাত্রা দেখালো ৯.১ থেকে ৯.৩! সমুদ্রের নিচের ইন্ডিয়ান প্লেট ও বার্মা প্লেটের মুখোমুখি সংঘর্ষে সৃষ্টি হল ভয়ংকর এই ভূমিকম্পের।

তবে এরপর যেই প্রলয় ধেয়ে আসছিল, তার জন্য বোধহয় প্রস্তুত ছিলেন না উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষগুলো। আধ ঘন্টার মধ্যে, সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ৩০ মিটার উচ্চতার বিশাল সব ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল সুমাত্রা ও আচেহ উপকূলে। ৩০ মিটার দিয়ে হয়তো ঢেউগুলোর বিশালতা বোঝানো যাবে না, যতটা বোঝানো যাবে ১০০ ফিট শব্দদ্বয় দিয়ে। প্রায় ১০ তলা বিল্ডিংয়ের সমান উচ্চতার একেকটি ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল উপকূলে, ধ্বংস করে দিতে লাগল সবকিছু। সর্বগ্রাসী রূপ নিয়ে আসা, ঘণ্টায় ৫০০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার গতিবেগে ধেয়ে আসা সেই ঢেউগুলো কেড়ে নিল লক্ষ মানুষের প্রাণ, বিষয়-সম্পত্তি। বিশেষজ্ঞরা পরে হিসেব করে দেখিয়েছেন, গোটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যত পারমাণবিক বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়েছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ শক্তিসম্পন্ন ঢেউ সেদিন আছড়ে পড়েছিল ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত ও থাইল্যান্ডের উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে!

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিটা হয় ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে। ভূমিকম্পের ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে উপকূলে আছড়ে পড়তে থাকে বিশাল সব ঢেউ। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, প্রথম যে ঢেউটা আঘাত হানে, তার উচ্চতা ছিল একটি বিল্ডিংয়ের বেজমেন্টের সমান। কিন্তু পরের ঢেউগুলো দৈত্যাকৃতির আকার ধারণ করে আঘাত হানতে থাকে তীরে। উপকূল থেকে ২ কিলোমিটার দূরের এক বাসিন্দার ভাষ্যমতে, সুনামির আকার যেন ছিল একটি বিশাল কালো দালানের মত, আর এর শব্দ ছিল কানে তালা লাগিয়ে দেয়ার মত। আচেহর পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানা ঢেউগুলোর উচ্চতা ছিল ৪৯ থেকে ৯৮ ফিটের মত। বান্দা আচেহ উপকূলে আঘাত হানা ঢেউগুলোর উচ্চত ছিল প্রায় ৪০ ফিটের মত।

প্রায় একই সময় ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে জোরালো আঘাত হানে সুনামি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, দক্ষিণ আন্দামানে তিনবার আঘাত হানে সুনামির ঢেউ। এদের মধ্যে ৩য় ঢেউটি ছিল সবচেয়ে বিধ্বংসী। শ্রীলঙ্কার কোজ্ঞালা, গল, নোনাগামা, ওয়েলিগামা, দোদুনদাওয়া, আম্বালানগোডা, বেরুওয়ালা ও পাইয়াগালা অঞ্চলে আছড়ে পরে ভয়ংকর ঢেউ।

সুনামির ভয়ংকর তীব্রতায় কলম্বোর একটি যাত্রীবাহী ট্রেন সম্পূর্ণ উল্টে যায়, ফলে ১৭০০ যাত্রী এক জায়গাতেই প্রাণ হারায়। মৃত্যুসংখ্যার দিক থেকে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা। সমুদ্রের ঢেউগুলো ট্রেনের ছাদেরও প্রায় ১০ ফিট উঁচু ছিল।

দক্ষিণ থাইল্যান্ডের উপকূলেও আঘাত হানে সুনামির প্রলয়ঙ্করী ঢেউ। থাইল্যান্ডের সমুদ্র উপকূলগুলো সবসময়ই দেশি বিদেশী পর্যটকে ভর্তি থাকে, অমন সময়েই সুনামির এমন তীব্র রূপ প্রত্যক্ষ করে সেখানকার পর্যটক ও অধিবাসীরা। এক ঝটকায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে থাইল্যান্ড উপকূলে।

ইউএস জিওলোজিকাল সার্ভের হিসাব মতে, প্রলয়ঙ্করী এই সুনামিতে প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজার মানুষের প্রাণহানির নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয় ইন্দোনেশিয়াতেই, প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার মানুষ। এছাড়া প্রায় ৩৭ হাজার লোক নিখোঁজ হয় সুনামির তোড়ে। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় প্রায় ৩৫ হাজার, ভারতে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ও থাইল্যান্ডে প্রায় ৫ হাজার ৩০০ মানুষের প্রাণহানি হয়।

About Sanjoy Basak Partha

Check Also

মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য

তাঁকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে যেই নামটি চিরকাল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *