মোস্তাফিজ-মিরাজদের মত প্রতিভা কিভাবে তৈরি করছে বাংলাদেশ? – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ক্রিকেট / মোস্তাফিজ-মিরাজদের মত প্রতিভা কিভাবে তৈরি করছে বাংলাদেশ?

মোস্তাফিজ-মিরাজদের মত প্রতিভা কিভাবে তৈরি করছে বাংলাদেশ?

তাঁর আগমন ঘটেছিল বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারতকে তাক লাগিয়ে দিয়ে। বাঁ হাতের জাদুতে ছিঁড়েখুঁড়ে খেয়েছিলেন বিধ্বংসী ভারতীয় ব্যাটিং লাইন-আপ। ওয়ানডে অভিষেকেই ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে স্মরণীয় এক জয় এনে দেয়া মোস্তাফিজুর রহমান ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমার ভাই পল্টু না থাকলে আজ আমার এই পর্যন্ত আসা হত না’।

সাতক্ষীরায় যেখানেই কোন ট্রায়াল, ট্রেইনিং ক্যাম্প কিংবা ম্যাচ হত, ৩৮ কিলোমিটার দূরের গ্রাম তেতুলিয়া থেকে বাইকের পেছনে করে ছোট ভাই মোস্তাফিজকে সেখানে নিয়ে যেতেন পল্টু। দুই বছর এভাবে এখানে সেখানে ঘোরার পর একটি বয়সভিত্তিক পেস বোলিং ক্যাম্পে পারফর্ম করে ২০১৩ সালে প্রথম ঢাকা আসেন মোস্তাফিজ।

গত দুই বছরে যেই ১৩ জনের অভিষেক হয়েছে বাংলাদেশ টেস্ট দলে, তাদের মধ্যে কেবল তাসকিন আহমেদই ঢাকা থেকে উঠে এসেছেন। বাকিরা এসেছেন জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, রংপুর, ময়মনসিংহের মত তুলনামূলক ছোট শহর থেকে। রাজশাহী, খুলনা, বরিশালের মত বিভাগীয় শহর থেকেও উঠে এসেছেন অনেকে। আগে যেখানে কেবল গুটিকয়েক জায়গা থেকেই খেলোয়াড় বেরিয়ে আসত, এখন সেখানে দেশের নানা প্রান্ত থেকে জাতীয় পর্যায়ে খেলার মত ক্রিকেটার উঠে আসছে।

সমাজ কিংবা অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশাল জনসংখ্যা অনেকাংশেই সমস্যার সৃষ্টি করে। আয়তনে বাংলাদেশ ভারতের ওডিশা রাজ্যের সমান প্রায়, জনসংখ্যার ঘনত্বও ভারতের প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু বিষয়টা যখন ক্রিকেট, এই বিপুল জনসংখ্যাই তখন বাংলাদেশের জন্য বড় একটি সুবিধা। ক্রিকেটের প্রতি মানুষের যে ভালবাসা ও প্যাশন, এবং জাতীয় দলের সাম্প্রতিক যে সাফল্য, এটিই দেশজুড়ে ক্রিকেটার তুলে আনার পেছনে সবচেয়ে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। ছোট ছোট শহর কিংবা গ্রাম থেকেই উঠে আসছে মোস্তাফিজ, মিরাজ ও মোসাদ্দেকদের মত বিস্ময়কর প্রতিভা।

অনেকেই দেশের এক প্রান্ত থেকে উঠে এসে মোস্তাফিজের সাড়া ফেলে দেয়াকে রূপকথার সাথে তুলনা দিয়ে থাকেন। আসলে এসব রূপকথা জাতীয় কিছুই নয়, দেশজুড়ে বিসিবির ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ও ট্যালেন্ট স্কাউটের ফসলই এই মিরাজ-মোস্তাফিজরা।

বোর্ডের গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির প্রধানের দায়িত্বে আছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। বোর্ডের আলাদা একটি হাই পারফরমেন্স ইউনিটও আছে, যার দায়িত্বে আছেন বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আনাম। গত ১০ বছরে এই ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম দেশের প্রত্যেক জেলায় পৌঁছেছে। মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে বয়স যাচাইয়ের পর আন্তঃ-বিভাগীয় দল গঠন করা হয়। এই দলের ছেলেদের খেলানো হয় ম্যাটের উইকেটে। এরপর এদের নিয়ে যাওয়া হয় বয়সভিত্তিক বিভাগীয় টুর্নামেন্টে, যেগুলো স্বাভাবিক উইকেটেই খেলা হয়। অনূর্ধ্ব ১৪ ও ১৬ দলের ছেলেদের জন্য দুই দিনের ম্যাচ, আর অনূর্ধ্ব ১৮ দলের ছেলেদের জন্য থাকে তিন দিনের ম্যাচ। তারপর দেশের সেরা বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের নিয়ে হয় তিন দলের চ্যালেঞ্জার সিরিজ। সেরা ক্রিকেটারদের তিন দলে ভাগ করে তিন দিনের এই টুর্নামেন্ট খেলানো হয় তাদের।

****

এই বছরের মার্চে কলম্বো টেস্টে অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন যখন ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নামলেন, শ্রীলঙ্কার ১ম ইনিংসের রানের চেয়ে বাংলাদেশ তখনো ৪৮ রান পিছিয়ে। আগের টেস্টেই যিনি ৯ উইকেট নিয়েছেন, সেই রঙ্গনা হেরাথকে প্রথমবারের মত খেলতে নেমে দারুণ পায়ের কাজ দেখিয়ে অফ সাইডে দুটো বাউন্ডারি মারলেন। দ্বিতীয় ইনিংসেই একই রকম আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেললেন হেরাথকে। বিশ্বের সেরা বাঁহাতি স্পিনারের বিপক্ষে ২১ বছরের এক অভিষিক্ত তরুণের এমন আত্মবিশ্বাসে অনেকে চমকালেও একটুও বিস্মিত হননি বিসিবির হাই পারফরমেন্স ম্যানেজার নাজমুল আবেদীন ফাহিম। মোসাদ্দেক যেভাবে একটার পর একটা সিঁড়ি ভেঙ্গে ধাপে ধাপে এই পর্যায়ে এসেছেন, সেটাই তাঁর মধ্যে ম্যাচের পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতার জন্ম দিয়েছে বলে বিশ্বাস নাজমুল আবেদীনের।

গত দুই দশকের মধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা কোচ নাজমুল আবেদীনের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের ঘরোয়া পর্যায়ের কোচদের উপর এখন নির্দেশ থাকে, তৃণমূল পর্যায় থেকে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার খুঁজে বের করার। ইএসপিন ক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ফাহিম বলেছেন, “মোসাদ্দেক ওর চারপাশের পরিবেশের সাথে খুব দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে। সব ধরণের পরিবেশেই ও স্বচ্ছন্দে খেলতে পারে। খুব বেশি ক্রিকেটারের মধ্যে এই সামর্থ্য থাকে না। মোসাদ্দেকের মত এত দায়িত্বশীল খেলোয়াড় সবসময় পাওয়া যায় না। শুধু রান করে বাঁ উইকেট নেয় এমন না, আমরা ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার খুঁজি”।

বয়সভিত্তিক পর্যায়ের সব ধাপ পার হয়েই আজ জাতীয় পর্যায়ে এসেছেন মোসাদ্দেক। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করার আগে অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়েও আলো ছড়িয়ে এসেছেন। ২০১৬ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দেশের সবচেয়ে সফল ক্লাব আবাহনী লিমিটেডের হয়ে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন, দেশের প্রথম এবং একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এক মৌসুমে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরিও করেছেন মোসাদ্দেক।

একই কথা ফাহিম বলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ কে নিয়েও, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়েই যিনি বিস্ময়কর আবির্ভাব ঘটিয়েছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে। দেশের আরেক সফল কোচ, সালাউদ্দিনের অধীনে খুলনা বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন মিরাজ, অধিনায়কত্বও পেয়েছেন খুব দ্রুতই।

ফাহিম বলছেন, ‘ঘরোয়া কোচেরা এখন বুঝতে শিখেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কি  ধরণের ক্রিকেটার আমাদের দরকার। শান্ত, মোসাদ্দেক, মিরাজ- এদের সবার মধ্যেই শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্ব আছে। এদের মত সাহসী  ক্রিকেটার আমাদের দরকার’।

****

২০১১-১২ এর দিকে সাতক্ষীরা শহরে প্রথমবার মোস্তাফিজুরকে খেলতে দেখেছিলেন সাতক্ষীরা বিভাগীয় হেড কোচ মুফাসসিনুল ইসলাম তপু। ‘একটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্টে খেলে ও আমাদের অনূর্ধ্ব ১৪ ক্যাম্পে এসেছিল। ওকে প্রথমবার দেখেই বুঝেছিলাম, আমাদের হাতে একটি বিশেষ প্রতিভা এসেছে’।

সাতক্ষীরার স্কাউটদের নজরে পড়ার পর মোস্তাফিজকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে একটি পেস বোলিং ক্লিনিকে। ওখানেই বিভিন্ন ধরণের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বল করতে করতে তাঁর বিখ্যাত কাটার ডেলিভারি আরও উন্নত হয় তাঁর। ২০১৪ সালের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে খেলার পর মোস্তাফিজকে নেয়া হয় বাংলাদেশ এ দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে। এরপর এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে চলে আসলেন জাতীয় দলেও।

ফাহিমের মতে, বোর্ডের ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম দেশজুড়ে কিভাবে ছড়িয়ে পরেছে তার সবচেয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মোস্তাফিজ। ‘ছোট শহরের ছেলেরাও এখন অনেক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। ছোট শহরের ছেলেরা আগে বুঝে পেত না কিভাবে ক্রিকেটার হতে হবে। এখন তাদের সামনে সাতক্ষীরার সৌম্য, মেহেরপুরের ইমরুল, খুলনার মিরাজদের মত দৃষ্টান্ত আছে। পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার রাস্তাটা এখন তারা চিনে গেছে’।

একজন ক্রিকেটারের সাফল্য যে ওই অঞ্চলের বাকিদের মধ্যেও ক্রিকেটীয় উন্মাদনা তৈরি করতে পারে, সেটিরও বড় প্রমাণ মোস্তাফিজুর, এমনটাই দাবি মোস্তাফিজের কোচ তপুর। তপুর ভাষ্যমতে, মোস্তাফিজের সাফল্যের পর যুব পর্যায়ে সাতক্ষীরার ক্রিকেটে আগ্রহী ছেলের সংখ্যা আগের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

গত বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই ক্রিস গেইলের উইকেট সহ মাত্র ১৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন রাজশাহীর অফ স্পিনার আফিফ হোসেন। কয়দিন আগেই সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করে দলকে জেতানো জাকির হাসানও উঠে এসেছেন বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খেলেই। এভাবেই একের পর এক বিস্ময়কর প্রতিভার জন্ম দিয়ে  চলেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট।

ইএসপিন ক্রিকইনফো অবলম্বনে

 

About Sanjoy Basak Partha

Check Also

প্রসিধ কৃষ্ণা: নেট বোলার থেকে আইপিএল মাতানো তরুণের গল্প

প্রথমবার যখন শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটের স্বাদ পেলেন, প্রসিধ কৃষ্ণার বয়স তখন ১৯ বছর। ২০১৫ সালে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *