হ্যারি হুডিনি বনাম স্যার আর্থার কোনান ডয়েলঃ প্ল্যানচেট যেখানে খুলে দিয়েছিল সত্যের মুখোশ! – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / অন্যান্য / হ্যারি হুডিনি বনাম স্যার আর্থার কোনান ডয়েলঃ প্ল্যানচেট যেখানে খুলে দিয়েছিল সত্যের মুখোশ!

হ্যারি হুডিনি বনাম স্যার আর্থার কোনান ডয়েলঃ প্ল্যানচেট যেখানে খুলে দিয়েছিল সত্যের মুখোশ!

হুডিনি জাদুশিল্পী, সর্বকালের সেরাদের অন্যতম। এটুকু তো কমবেশি আমরা সবাই জানি। কিন্তু তিনি যে ভণ্ড প্রতারক, গণক, জ্যোতিষীদের মুখোশ খুলে দিতেন এ খবর আমাদের কজনের জানা? হুডিনি তার সময়কার একজন পেশাদার প্ল্যানচেটকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন। আর এই পেশাদার প্ল্যানচেটকারী আর কেউ নন, শার্লক হোমসের স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের স্ত্রী! অতিপ্রাকৃত বিষয়াদি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে হুডিনি হাত দিয়ে ফেলেন সমাজের অতি উচ্চ স্তরে, যে ভুলের মাশুল তাকে দিতে হয়েছিল জীবন দিয়ে। চলুন তবে জেনে আসা যাক বিস্তারিত ঘটনা।

হুডিনি ১৮৭৪ সালের ২৪ মার্চ হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সামুয়েল ভাইস্‌; তিনি ছিলেন একজন ইহুদি সম্প্রদায়ভুক্ত হিব্রুভাষার পন্ডিত ব্যক্তিত্ব। জন্মের পর হুডিনির নাম রাখা হয় এরিখ ভাইস্ (Erich Weiss)। এরিখের জন্মের অল্প কিছুদিন পরেই তার পুরো পরিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরীতে চলে আসে; তবে সেখানে বিশেষ কোন সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় তারা অল্পকালের মধ্যেই উইসকন্সিন-এর আপলটন নগরীতে চলে আসে। এখানে ১৮৮৮ সালের নভেম্বর মাসে, মাত্র ১৪ বছর বয়সে, দারিদ্রের মোকাবেলায় এরিখ্ এক নেকটাই তৈরির কারখানায় চাকুরি নেন এবং এখানে চাকুরি করার সময়ই তিনি মাজিকের প্রতি প্রবল আকর্ষণ অনুভব করেন ও ম্যাজিশিয়ান বা জাদুকর হবেন বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন।

 

জাদুর ব্যাপারে এরিখের সহযোগী হন জ্যাকভ হাইমান নামের তার একজন সহকারী মজুর। সিদ্ধান্ত অনুযায়ি তারা কাজ শুরু করেন এবং বিখ্যাত ফরাসি জাদুকর জাঁইউজিঁ রাবার্তো হুডিনির নামাণুসারে নিজের নাম রাখেন হুডিনি। এরিখ এবং হাইমান জুটিরনাম হল হুডিনি ব্রাদার্স; অবশ্য জ্যাকভ শেষ পর্যন্ত তার সাথে থাকেননি। তাই বলে অবশ্য হুডিনিকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক আশ্চর্য সব জাদুর কলাকৌশল দেখিয়ে তিনি দর্শকচিত্ত জয় করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশে দেশে তার নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়ে।

হুডিনিকে নিয়ে যে সিনেমাটা তৈরি হয়েছে তা হয়তো আমাদের অনেকেরই দেখা। দ্য পিয়ানিস্ট খ্যাত অভিনেতা এড্রিয়েন ব্রডির হুডিনি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। হুডিনি সাধারণ গরীব ইহুদী ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন। লেখাপড়া তেমন নেই। ভবিষ্যতে জাদু দেখিয়ে মানুষকে বিনোদন দেয়াই তার পেশা হবে। কিন্তু এই “জাদুকে” তিনি বিজ্ঞানের কৌশল আর তার নিজের দক্ষতা ছাড়া অন্য কোন নেপথ্য কারণ বলতে নারাজ। অথচ অনেকেই তাকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী মনে করতেন। সেই ১৯২৫ সালে যখন তিনি খ্যাতির তুঙ্গে তখন নিজেকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকার হিসেবে ঘোষণা করলে তার প্রতাপ-প্রতিপত্তি বেড়ে যেত আরো। কিন্তু তিনি সব সময়ই বলছেন, না, তিনি কোন অলৌকিক ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন না কারণ তিনি তার কোন প্রমাণ পাননি।

মায়ের মৃত্যুর পর হুডিনির জীবনে একটা নাটকীয় পরিবর্তন আসে। হুডিনি প্ল্যানচেটের মাধ্যমে তার মৃত মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান, কারণ আত্ম নিয়ে কাজ করা “অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারীরা” তাকে জানিয়েছে তারা তাকে তার মৃত মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে পারবেন। হুডিনি ইংল্যান্ডের তখনকার নামকরা সব প্ল্যানচেটকারীদের সভায় যেতে থাকেন। আত্মা নেমে আসে। হুডিনির মায়ের আত্মা কথা বলে উঠে। কিন্তু হুডিনির চোখকে ফাঁকি দেয়া তো ছেলেখেলা নয়। প্রতারকদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। ১০ হাজার ডলার ঘোষণা করেন হুডিনি- কেউ যদি তাকে অতিপ্রাকৃত কোনো কিছু প্রমাণ করে দেখাতে পারেন তাকে দেয়া হবে এই পুরস্কার।

সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হলো, শার্লক হোমসের স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল ছিলেন একজন অলৌকিক ও আধ্যাত্বিকে বিশ্বাসী মানুষ। এটি কোন বড় ঘটনা নয়, বড় ঘটনা হলো তিনি সে সময় এ বিষয়ে নানারকম বক্তৃতা, সেমিনারের আয়োজন করে প্রচারও চালাতেন। হুডিনির জাদুশিল্প দেখে তিনি মুগ্ধ ছিলেন। হুডিনিকে বলেন, আপনার নিশ্চয় আধ্যাত্বিক ক্ষমতা আছে নইলে কেমন করে খেলাগুলো দেখান! হুডিনি অস্বীকার করেন তার অলৌকিক ক্ষমতাকে। তিনি বলেন এসব তার নিজস্ব কৌশল। স্যার আর্থার একজন শিক্ষিত মানুষ। পেশায় ডাক্তার। তার মত মানুষ কেমন করে প্ল্যানচেটের মত প্রতারণাময় একটা কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন ভাবলে বিস্মিত হতে হয়।

তারই হাত দিয়ে কঠিন যুক্তিবাদী চিন্তাশীল শার্লক হোমসের মত চরিত্র বেরিয়ে এসেছে। অথচ স্যার আর্থারের স্ত্রী প্ল্যানচেটে আত্মা নামানোর দাবী করতেন। হুডিনিকে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়ার কথা বলেন তিনি। ইংল্যান্ডের সেই সমাজে স্যার আর্থারের প্রতাপ-প্রতিপত্তি ছিল সাংঘাতিক। লেডি আর্থারকে সেরকম বাস্তবতায় প্রতারক বলে ঘোষণা করা, তাও গণমাধ্যমে- চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু প্রতারকদের বিষয়ে হুডিনি তখন যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। ফাঁস করে দেন স্যার আর্থার দম্পত্তির মিথ্যাচার। মানুষকে ঠকানো, সরল বিশ্বাসী মানুষদের বিশ্বাসকে পুজি করে এইসব আধ্যাত্বিকবাদীদের মুখোশ উন্মোচনে নেমে পড়েন হুডিনি। চ্যালেঞ্জের পুরস্কারের টাকাও বাড়িয়ে দেন হুডিনি- যদি কেউ তাকে প্রমাণ দেখাতে পারেন অতিপ্রাকৃত কিছু আছে তাহলে তিনি পাবেন ২৫ হাজার ডলার।

হুডিনি জানতেন এইসব প্রতারকদের সমাজে খুটির জোর কতদূর এবং এসব করতে গিয়ে তার পরিণতি কি হতে পারে। হয়েছিলও তাই। ১৯২৬ সালে এক আততায়ীর আক্রমণে ভীষণভাব আহত হয়ে শেষ পর্যন্ত মারা যান এই জাদুশিল্পের মহান মানুষটি। না দেখে, যাচাই না করে বিশ্বাস না করার যে ব্রত তিনি তার সময়ে কঠিনভাবে জারি রেখেছিলেন, ইউরোপের তখনকার তরুণদের মধ্যে নিশ্চয় তার একটা প্রভাব ফেলেছিল যুক্তি ও যাচাইকে প্রাধান্য দেয়ার, তার জন্য এখনো পর্যন্ত তিনি শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় স্মরণীয় হয়ে আছেন ইতিহাসের পাতায়, মানুষের হৃদয়ে।

About farzana tasnim

Check Also

২৪ বছর পর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে খুঁজে পেলেন বাবা-মা!

কি বলবেন একে, অবিশ্বাস্য? রূপকথার গল্প? লেখাটা পড়ার পর তা আপনি বলতেই পারেন। এ যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *