আসছে কুরবানীর ঈদ! (পর্ব ২- একান্ত সাক্ষাৎকারে মহেশ) – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ইন্টারভিউ / আসছে কুরবানীর ঈদ! (পর্ব ২- একান্ত সাক্ষাৎকারে মহেশ)

আসছে কুরবানীর ঈদ! (পর্ব ২- একান্ত সাক্ষাৎকারে মহেশ)

চারদিকে গরুর মোহনীয় হাম্বা হাম্বা রব আর ছাগলের ম্যা ম্যা। এর মাঝে আমি হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে আছি। ব্যাপারটা আসলে এখনো ঠিক আমার মাথায় ঢুকছে না। দুই মামার সাথে এই প্রথম এসেছি গাবতলীর গরুর হাটে এসেছি। মা বললেন,
“এটা নতুন একটা অভিজ্ঞতা হবে, বাবা। তাছাড়া তুই বড়ও হয়েছিস যথেষ্ট। গরুর হাটে যা, সংসারের কিছু দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিতে শিখতে হবে।”

আমিও মায়ের যুক্তি অকাট্য মনে করে মামাদের সাথে হৈ হৈ রৈ রৈ করে চলে আসলাম গাবতলী পশুর হাটে। এখন মনে হচ্ছে ফেঁসে গিয়েছি। মামাদের থেকে কিছুটা দূরে থাকাই বোধহয় বাঞ্ছনীয়। নিজের ওপর খুব মেজাজ খারাপও হচ্ছে। লাল রঙের একটা টিশার্ট পড়ে চলে এসেছি। আশেপাশের চারপেয়ে নিরীহ অবলা জীবগুলো আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। মাথা ঘোরাচ্ছে আমার। এমন সময় পেছনে কিসের যেন একটা গুঁতো খেয়ে চমকে গেলাম। একটা গরু নিবিষ্টমনে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ভয়ে আমি আরো কুঁকড়ে গেলাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে গরুটা বলে উঠল,
“ভয় পাবেন না প্লিজ। আমি আপনাকে গুঁতো দিব না।” 

আমি চমকে গেলাম। কি রে বাবা! গরু দেখি মানুষের মত কথা বলে! ইন্টারেস্টিং! ভেরি ভেরি ইন্টারেস্টিং! আমি চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম লোকজন দরদাম, গরু কেমন তা দেখার জন্য পিঠে চড়চাপড় দেয়া নিয়ে ব্যস্ত। আচ্ছা, গরুটার একটা ইন্টারভিউ নিলে কেমন হয়? আমি কথা বলা শুরু করলামঃ
আমি- আচ্ছা, আপনি কেমন আছেন?
গরু- (একটু বিরক্ত হয়ে) আচ্ছা মানুষ তো আপনি! গরুর হাটে দাঁড়িয়ে একটা গরুকে জিজ্ঞাসা করছেন সে কেমন আছে? এটা অন্যায়। বিরাট বড় অন্যায়!

আমি- আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন, শুনি। কুরবানীর হাটে আমি এবার প্রথম এলাম। ইতিহাসের পাতায় আমিই বোধহয় প্রথম যে কুরবানীর হাটে একটা গরুর সাথে কথা বলছে, তাই না?
গরু- কি জানি! হলেও হতে পারে। আসুন গল্প করি একটু। কে না কে কিনে নিয়ে যায় খানিক পর তা কে জানে। দুঃখের কথা একটু বলেই যাই।

আমি- কোথাকার গরু আপনি? আই মিন কোথা হতে এসেছেন?
গরু- দেখুন, প্রথমেই বলে নিচ্ছি। গরু গরু করবেন না। গরু সমাজে আমারও একটা দাম আছে। আমার নাম মহেশ। মূলত আমি একজন কবি। কবিতা লিখি।

আমি- তাই নাকি? শোনান একটা কবিতা।
মহেশ- (একটু গলা খাঁকারি দিয়ে) চারপাশে ঘাস, আমি করি হাঁসফাঁস, চারপায়ে দাঁড়িয়ে, সবাইকে মাড়িয়ে, সব সীমা ছাড়িয়ে… (এইপর্যন্ত বলে থেমে গেল মহেশ)

আমি- কি হল? ভালই তো চলছিল। থামলেন কেন?
মহেশ- আমি যে বাড়িতে থাকতাম, ঐ বাড়ির কথা মনে পড়ে গেল। কষ্টে দুঃখে চোখে পানি চলে আসছে ভাই।

আমি- বলুন কিছু আপনার সম্পর্কে।
মহেশ- ছোটবেলা থেকেই আমি থাকতাম গফুর চাচার বাড়িতে। সেখানে আমার জন্য ছিল পর্যাপ্ত ঘাস আর ভুসি। খেয়ে দেয়ে একেবারে তরতাজা হয়ে উঠছিলাম আমি। দিন দিন আশেপাশের সব গরুর হিংসার কারণ হয়ে উঠছিলাম। আমার মত ড্যাশিং আর হ্যান্ডসাম গরু রংপুরের হেতমপুরে আর একটাও নেই। দিন দিন গফুর চাচার চোখের মণি হয়ে উঠছিলাম আমি।

আমি- তারপর কি হল?
মহেশ- এই বছরেই তো শুরু হল বন্যা। সে কি বন্যা, তা তোমাকে আর কি বলব বল? ঘরবাড়ি যা কিছু আছে সব কিছু গেল তলিয়ে। গফুর চাচা নিজেরাই একবেলা খাবার ঠিকমত পেত না, আর আমাকে খাওয়াবে কি?

আমি- কোন সাহায্য যায় নি ওখানে?
মহেশ- হ্যা, সাহায্য গিয়েছে। এই যে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কি সুন্দর টিম করে চলে এল সাহায্য করতে। সরকারী ত্রাণও এসেছিল। মানুষের কষ্ট না দেখলে তুমি বুঝবে না বন্যার রুপটা কেমন ছিল।

আমি- গরুদের নিয়ে কিছু বলুন। আপনার যদি কোন পরামর্শ থাকে কিংবা কোন কথা গরুদের সম্পর্কে।
মহেশ- দেখুন, গরুরা খুবই অবলা প্রাণী। জীবনের প্রথম রচনাটা কিন্তু আপনারা তাদের নিয়েই পড়েন। আমরা আপনাদের দুধ দেই, আমাদের চামড়া থেকে আপনারা কাপড় বানান, আমাদের মাংস খেয়ে আপনারা বলেন, ‘উফফ! দারুণ মজা হয়েছে!’ আবার আমাদের মাংসের দাম যখন হু হু করে বাড়তে থাকে, তখন আপনারা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন। আমাদের মনুষ্য সমাজে গরুর ভূমিকা কিন্তু অনেক। হাম্বা!

আমি- এই হাম্বা ডাকটা কেন আবার?
মহেশ- উত্তেজিত হয়ে গেলে আমি হাম্বা ডাক দেই। একটা কবিতা মাথায় এসেছে। বলে ফেলি?

আমি- জ্বি জ্বি অবশ্যই। বলুন।
মহেশ- গরু বলে আমাদের কর না কো হেলা, গরু নিয়ে কাটে তোমাদের দিন বেলা… (আবার চুপ হয়ে গেল)

আমি- আবারও থেমে গেলেন যে? কি হল?
মহেশ- বন্ধুদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। কে জানে তারা আজ কে কোন হাটে! একসাথে বড় হয়েছি, ঘাস খেয়েছি, রাস্তাঘাট দাপিয়ে বেড়িয়েছি, আর আজ- (একটা নিঃশ্বাস ফেলল মহেশ)

আমি- ঢাকা কেমন লাগছে? এটাই তো প্রথম নাকি?
মহেশ- হ্যা এটা প্রথম। চারদিকে কেবল বাতি আর বাতি, আলোর ঝলমল, ফুড কোর্ট, ছেলেমেয়েদের হাসাহাসি, অফিস ফেরা মানুষের ব্যস্ততা। ভালোই লাগছে। আচ্ছা, তোমাদের ফুড ক্যাফেগুলোতে নাকি বিফ আইটেমগুলোর খুব ডিমান্ড! আমার এক শহুরে বন্ধু বলল সেদিন। কথাটা শুনে খুব ভালো লেগেছে। একটা গান মাথায় আসছে এখন।
“ঢাকা শহর আইসা আমার, আশা ফুরাইছে… আরে লাল লাল নীল নীল বাত্তি দেইখা, নয়ন জুড়াইছে এ এ এ…” (আবার মন খারাপ হয়ে গেল মহেশের) আচ্ছা, রাজ্জাক সাহেব শুনলাম মারা গিয়েছেন। খুব কষ্ট লেগেছে কথাটা শুনে। নজু মামার টি স্টলের সামনে মাঝে মাঝে একটা মাঠে ঘাস খেতে যেতাম। তখন উনার ছবি দেখেছি। আহা! কি অভিনেতাই ছিলেন একটা!

আমি- হ্যা, এটা অবশ্য ঠিক বলেছেন। খুব খারাপ লেগেছে মহানায়কের এই প্রয়াণে।
মহেশ- যাই হোক, তোমরা মানুষকে মাঝে মাঝে গরু বলে গালি দাও। বিষয়টা খুব খারাপ লাগে। একদম ভালো লাগে না। এই কাজটা আর না করলে খুশি হব।

আমি- ঐ যে, মামারা ডাকছেন। যাবার সময় যদি কিছু উপদেশ দিতেন…
মহেশ- নিয়মিত ঘাস খাবে। ঘাস চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। ঘাস খেলে আমার মত তরতাজা হয়ে উঠতে পারবে। তারপর কুরবানীর হাটে…

আমি- আরে আরে, এসব কি বলছেন?
মহেশ- কথার মাঝে বাগড়া দিলে কেন? দাঁড়াও তোমাকে দেখাচ্ছি মজা! (মহেশ তেড়ে আসছে আমার দিকে। আমি পড়িমরি করে দৌড় দিলাম)

এমন সময় মামার ঝাঁকুনিতে ঘুম থেকে উঠে গেলাম। এতক্ষণ তাহলে সব স্বপ্ন ছিল? তাই তো বলি! পিক আপ থেকে লাফ দিয়ে নেমে গেলাম। চলে এসেছি গাবতলী গরুর হাটে। মিশন কাউ হান্ট!

About ahnafratul

লেখালেখি করতে ভালোবাসি। যখন যা সামনে পাই, চোখ বুলিয়ে নেই। চারদিকে তাকাই, উপলব্ধি করার চেষ্টা করি। দুনিয়াটা খুব ছোট, তারচাইতেও অনেক ছোট আমাদের জীবন। নগদ যা পাই, হাত পেতেই নেয়া উচিত। তাই না?

Check Also

‘ঠিক জায়গায় বল করতে পারলে আমার বলে কেউ রান তুলতে পারবে না’- রশিদ খান

এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা টি-২০ বোলার মানা হচ্ছে তাঁকে। বিশ্বজুড়ে প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেই খেলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *