আমরা সকলেই কম বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছি। ভেজাল খাদ্যের মোড়কে হারিয়ে যাচ্ছে আসল খাদ্য। তাই রোগ বালাই ও বাড়ছে। কম বেশি সবাই কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগী। আমাদের কোলেস্টেরল সম্পর্কে সঠিক ধারনা আসলে নেই। আমরা মনে করি তেল বা চর্বিযুক্ত খাদ্য পরিহার করলেই আমরা ভালো থাকবো, কিন্তু শরীরে তো তেল চর্বিরও প্রয়োজন রয়েছে। আসুন তবে আজ জেনে নেই,
কোলেস্টেরল কি?
কোন খাদ্যে কোলেস্টেরলের পরিমান বেশি?
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কী খাওয়া উচিত? আর কি পরিহার করা উচিত?
কোলেস্টেরল কি?
মোমের মত নরম চর্বি জাতীয় পদার্থ যা তেল বা চর্বি জাতীয় খাবার খেলে আমাদের দেহকোষের দেয়ালে উৎপন্ন হয় তাই কোলেস্টেরল। নিদির্ষ্ট মাত্রায় কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। শরীরের গুরুত্বপূর্ন হরমোন তৈরীতে সাহায্য করে। চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন পরিপাক ও ভিটামিন ডি তৈরী করে যা আমাদের দেহের জন্য খুব জরুরী।
কিন্তু কোলেস্টেরলের পরিমাণ যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি, রক্ত চলাচলে বিঘ্ন কিংবা উচ্চ রক্তচাপ সহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা যায়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কী খাওয়া উচিত?
উদ্ভিজ আমিষ
লিগিউমিনেসি গোত্রের যেসব উদ্ভিদ যেমনঃ ডাল, মটর শুঁটি, শিমের বীচি ইত্যাদি এসব আঁশ জাতীয় উদ্ভিদে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ থাকে না বললেই চলে। তাই প্রাণিজ আমিষ গ্রহণ কমিয়ে উদ্ভিজ আমিষ গ্রহণ করুন। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমে এবং শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
মাছ
মাছে তুলনামূলক ভাবে কোলেস্টেরল থাকে না বললেই চলে। বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ যেমনঃ স্যামন, টুনা এসব চর্বিযুক্ত মাছে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে বলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে এসব চর্বিযুক্ত সামুদ্রিক মাছ খুব উপকারী।
গ্রীণ টি
আমরা কম বেশি সকলেই চা পান করি। সাধারণত আমরা যে চা পান করি তা ব্ল্যাক টি যাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। ব্ল্যাক টি এর পরিবর্তে যদি আমরা গ্রীণ টি পান করি তা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। গ্রীণ টি আমাদের শরীরের কোষ গুলোতে অতিরিক্ত শর্করা প্রবেশ করতে দেয় না। ফলে শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে গ্রীণ টি উপকারী।
অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল এতে যে তেল উপাদান রয়েছে তা ক্ষতিকর কোলেস্টেরলকে উপকারী কোলেস্টেরলে পরিণত করে বলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন ১ চামচ অলিভ অয়েল সহায়ক ভূমিকা রাখে।
কাজু বাদাম/ কাঠ বাদাম
অধিক ক্যালরি সম্পন্ন বাদাম বা বাদাম জাতীয় কাজু ও কাঠ বাদাম । যা খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু ভুলবেন না যেন বাদাম অধিক ক্যালরি সম্পন্ন তাই পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করুন।
আর কি পরিহার করা উচিত?
কোলেস্টেরল কমাতে শুধু খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনলেই চলবে না পাশাপাশি আপনার দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।যেমনঃ
- নিয়মিত কিছু সময় নিয়ে ব্যায়াম করা।
- ধূমপান পরিহার করা।
- অ্যালকোহল গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তা অবশ্যই ত্যাগ করা।
- রেড মিট যথা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- ডায়াবেটিস জনিত সমস্যা থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করুন।
সুস্থ থাকতে সচেতনতা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আপনার খাদ্যাভাস নিয়মতান্ত্রিক এবং পরিমিত হলেই আপনার সুস্থতা নিশ্চিত হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং প্রিয়লেখার সঙ্গেই থাকুন।