লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিস: ‘মেসি’ হতে পারত যে ছেলেটি – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / খেলাধুলা / লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিস: ‘মেসি’ হতে পারত যে ছেলেটি

লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিস: ‘মেসি’ হতে পারত যে ছেলেটি

শিরোনাম দেখে কি খানিকটা ভ্রু কুঁচকে গেল আপনার? একজন ফুটবল ইতিহাসের পাতায় এরই মধ্যে অমরত্ব পেয়ে যাওয়া রাজকুমারদের একজন। তাঁর পায়ের জাদুতে মোহাবিষ্ট হয়নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ফুটবল পায়ে মাঠে নামলে তিনি যেন পিকাসোর চেয়ে কোন অংশে কম যান না। মাঠ যেন তাঁর ক্যানভাস, ফুটবল তাঁর তুলি। ছোট ছোট স্পর্শে সেই ক্যানভাসে তিনি একে চলেন একের পর একে ভুবনভোলানো মুহূর্ত। সেই লিওনেল মেসির সাথে কিনা লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিসের তুলনা!

আপনার মনে এতক্ষণে প্রশ্ন না জেগে পারেই না, এই লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিস টা আবার কে? পেলে-ম্যারাডোনার সাথে নিত্য তুলনা হয় যে মেসির, তাঁর সাথে কিনা এমন একজনের নাম টানা হচ্ছে, যার নামই অজানা! দেপেত্রিসের নাম আপনার আমার কাছে অজানা থাকবে, এটাই বোধহয় তার নিয়তি ছিল। নাহলে আজ হয়তো সত্যিই লিওনেল মেসির সাথে এক কাতারে নিতে হত এই আর্জেন্টাইনের নাম!

হ্যাঁ, লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিস মেসির স্বদেশীই বটে। মিল শেষ হচ্ছে না এখানেই, বরং লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিস সম্পর্কে জানতে গেলে বারবার আপনার লিওনেল মেসির কথাই মনে আসবে।

মাঠে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির ফুটবলার। বাকিদের সাথে শারীরিক লড়াইয়ে জেতার মত শক্ত সমর্থ ছিলেন না দেপেত্রিস, কিন্তু বল পায়ে আসলেই দেপেত্রিস বুঝিয়ে দিতেন, শুধু গড়পড়তা মানের ফুটবলার হওয়ার জন্য জন্মাননি তিনি, কিংবদন্তি হতেই জন্ম তার।

মেসির মতই ঈশ্বর প্রদত্ত এক বাঁ পা ছিল দেপেত্রিসের। তিন-চার ফুটবলারকে কাটিয়ে যেতেন অনায়াসে, যেন এর চেয়ে সহজ এবং মজার কাজ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। ১২ বছর বয়সেই দেপেত্রিসের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল ভবিষ্যতের এক মহাতারকার প্রতিচ্ছবি।

আগামীর তারকাদের আঁতুড়ঘর হিসেবে ওই সময় নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবের বেশ সুখ্যাতি ছিল। ৯০ এর দশকের শেষ দিকে ছোট ছোট বাচ্চাদের সেভেন অ্যা সাইড ম্যাচগুলো যে শুধু তাদের পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবেরা দেখতে আসত তেমনটা কিন্তু না। বরং উৎসুক স্থানীয় লোকেদের ভিড়ে গ্যালারি প্রায়সময়ে ভরাই থাকত। এছাড়া স্থানীয় অনেক কোচ এবং ব্যবসায়ীরাও থাকতেন দর্শকসারিতে।

নিউওয়েলসের ’৮৭ ব্যাচে একজন লিওনেল মেসি সত্যিই ছিলেন। মেসির উঠে আসাও তো ওই একই ক্লাব থেকে। ’৮৮ ব্যাচে ছিলেন এই দেপেত্রিস। দুজনের মধ্যে ছিল অস্বাভাবিক মিল। দুজনেই বাম পায়ের খেলোয়াড়, ছোটখাটো দেখতে, আর দারুণ স্কিলফুল।

এখন মেসির খেলা দেখে অনেকে যেমন ভাবে, মেসির মত ফুটবলার আর কখনো আসবে না, তারা জানলে হয়তো খানিকটা অবাকই হবেন, সেই সময় দেপেত্রিসের ভবিষ্যৎই বরং মেসির চেয়ে বেশি উজ্জ্বল ঠেকছিল সবার কাছে। নিয়তির কি অদ্ভুত খেল দেখুন, আজ ২০ বছর পরে সেই মেসিই যখন সর্বকালের সেরাদের একজন, দেপেত্রিস তখন হারিয়ে যাওয়া এক তারা, যে কিনা নিরন্তর সংগ্রাম করছে ফুটবলে টিকে থাকার জন্য! যেখানে হোক, যেভাবেই হোক।

এই সপ্তাহেই ক্লদিও একাভেরি নামের রিভার প্লেটের ১১ বছর বয়সী এক ফুটবলার জুভেন্টাসের বিপক্ষে যুব টুর্নামেন্টের এক ম্যাচে নিজের দারুণ প্রতিভার পরিচয় দিয়ে চার গোল করেছেন। এরপরই সম্মুখে এসেছেন দেপেত্রিস, ফুটবল বিষয়ক ওয়েবসাইট গোল ডট কমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘ওই বয়সে আমিও ওর মত এমন কিছুই করতাম। হয়তো ওর চেয়ে বেশি ভালই করতাম। কিন্তু এরপর অনেক কিছু হয়ে গেল। আমি জানি না… জানি না আসলে কি বলব’।

সমবয়সী মেসি যখন বিশ্বসেরাদের একজন, ২৯ বছর বয়সে এসে এই দেপেত্রিস এখন আর্জেন্টাইন ক্লাব ট্রেবোলেন্স এ অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন! অথচ দেপেত্রিস এতদিনে এসি মিলানের হয়ে মাঠ কাঁপাতে পারতেন।

১১ থেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি বছর বেশ কয়েকবার মিলান যেতেন দেপেত্রিস। প্রতিবার গিয়ে ২০ দিন করে থাকতেন মিলানে। তার ও তার পরিবারের যাওয়া আসার খরচ সহ যাবতীয় সকল ব্যয়ভার বহন করত এসি মিলানই। মিলানের ট্রেনিং সেশনে অংশ নিয়েছেন, খেলেছেন প্রীতি ম্যাচেও। ১৪ বছর বয়সে মিলানের হয়ে পাকাপাকিভাবে চুক্তি করার কথা ছিল তার। কিন্তু তখনই সব এলোমেলো হয়ে গেল। মিলানের মত ক্লাবের হয়ে খেলতে পারাটাই যেখানে সৌভাগ্য হওয়ার কথা ছিল দেপেত্রিসের, তখন অতি লোভ কাল হয়ে দাঁড়াল তার জন্য। ছোট দেপেত্রিসকে অবশ্য দোষ দেয়া যায়না এর জন্য, তার চারপাশের লোকজনের লোভের কারণে চুক্তিটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ফলস্বরূপ, দেপেত্রিস এখন আর্জেন্টিনার মধ্যম সারির এক ক্লাবে জায়গা পেতেও লড়াই করেন।

মিলানের এই ঘটনাটাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেয় দেপেত্রিসকে। আস্তে আস্তে হতাশ হয়ে পড়তে থাকেন দেপেত্রিস। ১৪ বছর বয়সেও বল পায়ে যে কারিকুরি দেখাতেন, ১৫ তে এসেই তা কেমন যেন হারিয়ে ফেলতে লাগলেন। দেপেত্রিসের বিশ্বাস ছিল সে আর্জেন্টিনার প্রথম সারির লিগে খেলার যোগ্য। কিন্তু সেখানেও সুযোগ না পেয়ে আরও ভেঙ্গে পরে সে। শারীরিক পরিবর্তনও দেখা দিতে শুরু করে। আগের মত জোরে দৌড়ানো কিংবা বিধ্বংসী ফর্ম কোনটাই আর ফেরত পায় না সে। নিজের ক্ষিপ্রতাটাই হারিয়ে ফেলে সে। প্রথম বিভাগ তো দূরের কথা, দেপেত্রিসের ঠাই হয় সপ্তম বিভাগের এক ক্লাবে। সেখানেও আবার নিজের ১০ নম্বর জার্সি ও পজিশন দুটোই ছেড়ে দিতে হয় অন্য খেলোয়াড়ের জন্য, দেপেত্রিস হয়ে যান উইঙ্গার।

ততদিনে দেপেত্রিস নিজের সব খুঁইয়ে বসেছেন। যা কিছু তাকে বাকিদের থেকে আলাদা করেছিল, সবই হারিয়ে যায় দেপেত্রিসের। অবস্থা আরও খারাপ হয় যখন নিজের উপর অতিরিক্ত চাপ নিয়ে নেন তিনি। তার মা ছিলেন স্কুল শিক্ষক, বাবাও মোটামুটি সচ্ছল ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু পরিবারের জন্য আমাকে কিছু করতে হবে, এই চিন্তায় চিন্তায় দেপেত্রিস আরও হারিয়ে ফেলেন নিজেকে।

মেসি যেমন পথ দেখিয়ে চলার জন্য লা মাসিয়াকে পাশে পেয়েছেন, তেমনি কোন মেন্টরের অভাব এখনো খুব করে বোধ করেন দেপেত্রিস, ’১১ বছর বয়সে আমি মেসির চেয়ে বেশি বিখ্যাত ছিলাম। শুধু আমার খেলা দেখার জন্যই ২০০০ লোক মাঠে আসত, আমার সাথে ছবি তুলত। নিজের প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য এক ধরণের চাপ অনুভব করতে লাগলাম আমি। ওই সময় আমার মাথা ঠিক রাখার জন্যই কাউকে খুব দরকার ছিল’।

মেসির সাথে কাটানো দিনগুলোরও স্মৃতিচারণ করেছেন দেপেত্রিস, ‘অনুশীলনে আমরা একে অপরের বিপক্ষে খেলেছি। আমরা অনেকটা একই রকমই ছিলাম। নিউওয়েলসের হয়ে আমরা ৮৭ ও ৮৮ ব্যাচ একসাথে একবার পেরু সফরে গিয়েছিলাম। মেসি সেবার যেতে পারেনি, সেজন্য আমি আমার দলেও খেলি, আবার সিনিয়র দলেও খেলি। আশ্চর্যজনকভাবে আমি সিনিয়র দলেই বেশি ভালো খেলেছিলাম’।

একইসাথে একই রকম প্রতিভাধর দুজন খেলোয়াড়ের জীবনের বাঁকবদল হয়ে যাওয়াটা ক্রীড়া ইতিহাসে নতুন কিছু নয়। শচীন টেন্ডুলকার-বিনোদ কাম্বলির কথাই ধরুন না, একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মত সম্ভাবনা থাকলেও কাম্বলি আজ দূর আকাশের ছায়া কেবল। লিওনেল মেসি লিয়ান্দ্রো দেপেত্রিসের কাহিনীও তাই ফুটবল জগতে আক্ষেপের নাম হয়েই থাকবে। আর্জেন্টিনার ফুটবলে কি আরও বেশি দীর্ঘশ্বাস পড়বে না দেপেত্রিসের জন্যে? কে জানে, মেসি-দেপেত্রিস মিলেই হয়তো আকাশি-সাদাদের এনে দিতে পারতেন বড় কোন সাফল্য!

তথ্য ও ছবি কৃতজ্ঞতা- গোল ডট কম

About Sanjoy Basak Partha

Check Also

রিকি পন্টিংঃ সেরা ব্যাটসম্যান নাকি সেরা ক্যাপ্টেন !

তিনি কি ছিলেন ? সেরা ব্যাটসম্যান নাকি সেরা ক্যাপ্টেন ? ক্রিকেটের ইতিহাসে এ রকম কয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *