কোন রিয়াল মাদ্রিদ ভক্ত হঠাৎ করে এরকমটা শুনলে নির্ঘাত চমকে উঠবেন। এক সপ্তাহও হয়নি ইতিহাস গড়েছেন, এরই মধ্যে জিদান রিয়ালের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন কেন! চমকে যাওয়ার মতো ঘটনাই ঘটেছে, সংবাদ সম্মেলনে আকস্মিকভাবে রিয়ালের ম্যানেজারের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জিদান।
রিয়াল মাদ্রিদের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে আকস্মিক এক সংবাদ সম্মেলনে মাদ্রিদ ছাড়ার আকস্মিক ঘোষণা দিয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী এই ফ্রেঞ্চম্যান।
নিজের এরকম আকস্মিক সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সাংবাদিকদের জিদান বলেছেন, ‘আগামী বছর রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে চালিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। কিছুটা অদ্ভুত লাগতে পারে, তবে এটাই সবার জন্য উপযুক্ত সময়। সকলের ভালোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে হতো আমাকে। ক্লাবের ভালোর জন্য, খেলোয়াড়দের ভালোর জন্য, এবং আমার নিজের ভালোর জন্য। এই দলকে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তিন বছর পরে পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। নতুন কোন কণ্ঠস্বর, নতুন কোন কাজের ধারা।’
‘আমি এই ক্লাবকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। সভাপতিকেও ভীষণ ভালোবাসি, যিনি আমাকে সবকিছু দিয়েছেন। খেলোয়াড় হিসেবে এমন একটা দুর্দান্ত ক্লাবে খেলার সুযোগ দিয়েছিলেন। এর জন্য আমি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকব। আমার নিজের জন্য, সকলের জন্য একটা পরিবর্তন দরকার ছিল। তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
জিদানের এমন সিদ্ধান্তে পেরেজের বক্তব্য কী? সংবাদ সম্মেলনে জিদানের পাশেই থাকা পেরেজ বলেছেন, পারলে আজীবন জিদানকে ধরে রাখতেন তিনি! ‘আমি চেয়েছিলাম ও আজীবন এখানে থেকে যাক। ওকে বোঝানোর চেষ্টাও করেছিলাম আমি। কিন্তু আমি জানি, ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে তবেই এসেছে।’
‘আমি ওকে কেবল একটা কথাই বলতে চাই, “খুব শিগগিরই আবার দেখা হবে”। কারণ আমি জানি, ও আবার এখানে ফিরবে। হয়তো একটু বিরতির পর।’
আপাতত যে নতুন কোন দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন না, জিদান নিশ্চিত করেছেন সেটিও, ‘আগামী মৌসুমে আমি কোচিং করাচ্ছি না। নতুন কোন দলও খুঁজছি না আমি।’
গত ফেব্রুয়ারিতেই তিনি জানিয়েছিলেন, কেবল তখনই ক্লাব ছাড়ার চিন্তা করবেন যখন অনুভব করবেন তাঁর আর ক্লাবকে নতুন করে কিছু দেয়ার নেই।
তবে লিভারপুলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনাল জেতার পর বার্নাব্যুতে উদযাপন অনুষ্ঠানে এমন বিদায়ের কোন অগ্রিম আভাসও দেননি জিদান, বলেছিলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ক্লাব। ১৩ টি ইউরোপিয়ান কাপ জয়ী ক্লাব এটি। রিয়ালের হয়ে এমন ইতিহাসের অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। আমরা কি অর্জন করেছি, সেটা ভাবার সময় এখন। এই মুহূর্ত উদযাপন করার সময় এখন। উদযাপন করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
যাওয়ার আগে রিয়ালের ইতিহাসের অন্যতম সেরা কোচ হিসেবেই বিদায় নিচ্ছেন জিদান। মাত্র তিন বছর কোচিং করিয়েই অমরত্বের খাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন, টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ছাড়াও দুইটি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ও একটি লা লিগা। এছাড়া উয়েফা সুপার কাপও জিতেছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনাকে হারিয়ে।