২০১৬ সালে দুঙ্গাকে যখন বরখাস্ত করা হলো, ব্রাজিল তখন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে। সরাসরি তো দূরের কথা, প্লে অফেও খেলতে পারবে কি না, সংশয় ছিল সেটি নিয়েও। এরপর তিনি এলেন, দেখলেন, এবং সব বদলে দিলেন। বলা হচ্ছিল ব্রাজিলের বর্তমান কোচ তিতের কথা। দায়িত্ব নিয়েই বদলে দিয়েছেন ব্রাজিলকে, করে তুলেছেন এই বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট। কিন্তু কীভাবে বদলে গেলো ব্রাজিল? ফিফা বলছে, ব্রাজিলের বদলে যাওয়ার পেছনে আছে এই পাঁচ কারণ।
-
তিতের যোগাযোগ দক্ষতা ও খেলোয়াড়দের সাথে সৎ সম্পর্ক
ব্রাজিল খেলোয়াড়েরা বরাবরই তিতের যোগাযোগ দক্ষতার প্রশংসা করে এসেছেন। স্পষ্টবাদী এবং সহজ সরলভাবে কথা বলার জন্য ব্রাজিল দলে ভীষণ জনপ্রিয় তিতে। নিজের বক্তব্য এবং স্বচ্ছতা দিয়েই নিজের অবস্থান তৈরি করে দিয়েছেন তিতে।
আরেকটি বড় ব্যাপার হলো, তিতের দলে কেউ কারোর চেয়ে বড় নন, আবার কেউ কারোর চেয়ে ছোটও নন। দলের প্রত্যেককে সমান চোখে দেখার একটি সুস্থ সংস্কৃতি আছে তিতের দলে।
-
সকলের জন্য দরজা খোলা
দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই কোচিং স্টাফদের সাথে নিয়ে ইউরোপের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত চষে বেড়িয়েছেন তিতে। উদ্দেশ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিটি খেলোয়াড়কে নিজ চোখে দেখে নেয়া। তিতের দলের দরজা কোন খেলোয়াড়ের জন্যই বন্ধ ছিল না। পারফর্ম করলে সে সুযোগ পাবে, এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। খেলোয়াড়দের ক্লাব কোচের সাথে কথা বলেছেন তিনি, কে কোন পজিশনে খেলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, খোঁজ নিয়েছেন সেগুলোরও।
-
একতাবদ্ধ হয়ে খেলা
গত বিশ্বকাপের ব্রাজিলের কথা মনে আছে? নেইমারের বিদায়ের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল পুরো দল, বিধ্বস্ত হয়েছিল জার্মানির কাছে। কারণ পুরো দলটাই নির্ভরশীল ছিল নেইমারের উপর। কিন্তু তিতের দল কোন ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভরশীল নয়, বরং দলগত প্রচেষ্টায় বিশ্বাসী। একতাবদ্ধ হয়ে খেলাই এই ব্রাজিলের মূল শক্তিমত্তার জায়গা।
-
সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত
দায়িত্ব পাওয়ার পর কিটোতে ইকুয়েডরের বিপক্ষে নিজের প্রথম ম্যাচেই ১৯ বছর বয়সী তরুণ গ্যাব্রিয়েল হেসুসের অভিষেক করিয়ে দেন তিতে। রিও অলিম্পিক জয়ী দলের সদস্য হেসুস কোচের আস্থার প্রতিদান দেন জোড়া গোল করে। ক্যাসেমিরোকেও নিয়ে আসেন হোল্ডিং মিডফিল্ডার রোলে, যেই পজিশনে খেলেই আজ সফল তিনি। দুঙ্গার অধীনে ব্রাত্য হয়ে পড়া থিয়াগো সিলভা ও মার্সেলোদের মতো অভিজ্ঞদেরও দলে ফিরিয়েছেন তিনি। এরকম গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে নেয়ার কারণেই সফল তিনি।
-
দূরদর্শীতা:
দায়িত্ব নেয়ার পরপরই নিজের দূরদৃষ্টি দিয়ে তিতে বুঝে গিয়েছিলেন, রাশিয়া বিশ্বকাপে কারা হতে পারেন তার তুরুপের তাস। বাছাইকৃত সেই খেলোয়াড়দের তিনি তাই দীর্ঘ সময় ধরে একত্রে খেলিয়েছেন, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াতে সাহায্য করেছেন। সেটারই সুফল এখন ভোগ করছে ব্রাজিল।