কিছু কিছু মেয়েরা খারাপ ছেলেদের প্রেমে পড়ে। প্রতিটি মানুষ যেসব খারাপ কাজ ও অপকর্ম করে থাকে, ভিড়ের মধ্য থেকে তাদের জন্য সিটি বাজাবার জন্য কোনো না কোনো পাগলপারা নারী থাকবেই। মাঝে মাঝে হয়ত মনে হতে পারে যে আসল সাইকোপ্যাথ কারা? এই পাগলপারা নারীরাই নয়তো? তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই নারীরা কিন্তু এখানেই থেমে যান না। তাদের প্রিয় মানুষগুলোকে যখন জেলে পুরে দেয়া হয়, বিভিন্নভাবে অনুসরণ করতে থাকেন এই নারীরা। পাঠাতে থাকেন চিঠি, অদ্ভুত সব বার্তা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মানুষ খুন করে জেলে আসা এসব সাইকোপ্যাথদেরও ঘাড় বেয়ে শীতল ঘামের স্রোত নেমে যায় এসব অযাচিত নারীদের বার্তা পেয়ে। তাদেরই একজন ছিলেন কেনেথ বিয়াঞ্চি। আমরা খেলোয়ারের ফ্যান হই, অভিনেতার ফ্যান হই, লেখকের ফ্যান হই। তবে কেনেথ বিয়াঞ্চির ফ্যান ছিলেন ভেরোনিকা কম্পটন, যিনি আকৃষ্ট হয়েছিলেন কেনেথের খুনের ধরন দেখে। নিজেকেও কেনেথের সাথে তুলনা করতে চাইতেন তিনি, চাইতেন কেনেথ যেন তাকে প্রশংসা করে, গর্ব করে।
কেনেথ বিয়াঞ্চির খুন ও ধর্ষণ করবার ধরন দেখে তার এক ফ্যানগার্ল, ভেরোনিকা কম্পটন এতটাই মুগ্ধ হয়ে যান যে এটি নিয়ে একটি নাটক লিখে ফেলেন। নাটকের নাম ছিল ‘দ্য মিউটিলেটেড কাটার’। বিয়াঞ্চি দেখে খুশি হবে, এই ভেবে সে এই নাটকটি খুনীর কাছে পাঠিয়ে দেয়।
“আশা করি চিঠিটা তুমি পেয়েছো এবং নিজের ব্যস্ত সময় থেকে কিছুটা সময় বের করে নাটকটা পড়ে দেখবে। তোমার কাজ থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়ে আমি এই নাটকটি লিখেছি। প্লটটা খুবই ভালো লাগবে তোমার।” তবে চিঠির শেষের দিকে লেখা ছিল যে ভেরোনিকা একদিন বিয়াঞ্চিকে খুশি করতে পারবে। নিজেকে নিয়ে কোনো বাগাড়ম্বর করেনি এই মেয়েটি। গ্যানগার্লরা যে কতটা মারাত্মক আর বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে, তা এই ভেরোনিকাকে দেখলে খুব ভালো করে বোঝা যায়। ১৯৮০ সালের দিকে বিয়াঞ্চিকে খুশি করবার জন্য ভেরোনিকা একটি কপিক্যাট খুন করে বসে। এই খুনের মাধ্যমে সে পুলিশকে জানান দেয় যে কেনেথ বিয়াঞ্চি জেলে থাকলেও আসল খুনী এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেনেথই ধর্ষণ করেছে এটি বোঝাবার জন্য ভেরোনিকা জেল থেকে তার বীর্য সংগ্রহ করে এবং একটি মহিলাকে খুন করে তার শরীরের ওপর এই বীর্য ঢেলে দেয়। পুলিশ ধাঁধায় পড়ে যায়। বিয়াঞ্চি যদি জেলে থাকে, তাহলে এই নারীর ওপর যে বীর্য রয়েছে, সেটি কার? ডিএনএ টেস্টে স্পষ্টভাবে দেখানো হচ্ছে যে এখানে বিয়াঞ্চিই এসেছিল। তবে!
দ্বিতীয় খুনটি করবার সময় আর চালাকির পরিচয় দিতে পারেনি ভেরোনিকা। তার শিকার হাত থেকে পালিয়ে যায় এবং পুলিশকে ফোন করে বসে। অকুস্থল থেকে পালাতেও পারেনা ভেরোনিকা কারণ দ্বিতীয় শিকারটি তাকে বেশ জব্দ করে আটক করে ফেলেছিল। পুলিশ এসে এবার কপিক্যাট কিলার ভেরোনিকা কম্পটনকে জেলে পুরে দেয়। কেনেথ বিয়াঞ্চির মতোই পরিণতি ঘটে তার ফ্যানগার্লের। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, জেলে থাকাকালীন সময়ে ভেরোনিকার সাথেও ঠিক একই কাজ ঘটতে থাকে। জেমস ওয়ালেস নামক এক ব্যক্তি এবার ভেরোনিকার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তবে না, কপিক্যাট কিলার তাকে হতে হয়নি কিংবা তিনি কোনো খুনও করেননি। যেটি করেছেন, সেটি নিজের পরিবারের সাথেই। ৩৭ বছর বয়সী জেমস ওয়ালেস নিজের পরিবার ছেড়ে দিয়েছিলেন ভেরোনিকার কাছে নিজের মন দেবার জন্য। তার কথা অনুযায়ী,
“ভেরোনিকা জেলে থাকুক কিংবা না থাকুক, তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। আমি মেয়েটিকে ভালোবাসি, ওর জন্য সবকিছু ছেড়ে আসতে আমার কোনো আপত্তি নেই।”