বর্তমানের বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তার মতো শক্তিমান অভিনেতা খুব কমই আছে। দ্য বয় নেক্সট ডোর চরিত্র কিংবা কঠোর কোনো পুরুষের চরিত্রে- দুটোতেই খুব ভালো নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন তিনি। বারেলি কি বারফি, ট্র্যাপড, নিউটন এই তিনটি ছবির মাধ্যমে অভিনয় করে জিতে নিয়েছেন দর্শকদের মন। কিছুদিন আগেই এসেছে হানসাল মেহতার ওমের্তা। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ আতঙ্কবাদীর ভূমিকায় কেমন অভিনয় করেছেন রাজকুমার রাও, সেটিই এখন দেখবার বিষয়। সাক্ষাৎকার দেবার সময় রাজকুমার রাও ফিল্মফেয়ারকে বলেছিলেন কোনো ধরনের ভায়োলেন্স তিনি পছন্দ করেন না এবং তাকে যেন এই ধরনের চরিত্র থেকে দূরে রাখা হয়। আসুন, ফিল্মফেয়ারকে দেয়া সে সাক্ষাৎকারের কিয়দংশ জেনে নিই।
আহমেদ ওমর সাঈদের মতো একটি চরিত্রর খোলসে নিজেকে নিতে কেমন মনে হয়েছিল?
দেখুন, এটা একটা অন্ধকার জগত। এই মানুষটি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা আমার ছিল না। সে কী করত, কোথা থেকে উঠে এসেছে, কিছুই জানতাম না। স্ক্রিপ্ট পড়ে, ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে তার সম্পর্কে জেনেছি। দাড়ি রাখতে শুরু করলাম, পেশীর ওপর কাজ করা শুরু করলাম। ওমর একজন শক্তিশালী পুরুষ। তাই নিজেকে এই চরিত্রের জন্য তেমনভাবেই গড়তে হবে। লন্ডনে তিন সপ্তাহের মতো ছিলাম। সেখানকার সংস্কৃতি, মানুষ কীভাবে কথা বলে, তাদের ভাবধারা যতটুকু সম্ভব নিজের মাঝে আয়ত্ব করবার চেষ্টা করেছি। ওমর সাঈদ যা করেছে, সেটি কোনো মানুষের কাজ নয়। হানাহানিকে সমর্থন জানানোর মাঝে কোনো কৃতিত্ব নেই। বার্তালাপের মাধ্যমে কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। হানাহানি কেবলমাত্র হানাহানি ছাড়া ভালো আর কিছু বয়ে আনতে পারে না।
হানসাল মেহতার সাথে ওমের্তা আপনার চতুর্থ চলচ্চিত্র। কী ভেবে এই দুটি মানুষ একসাথে এতগুলো কাজ করে ফেলল?
যে ধরনের গল্পে আমরা কাজ করি, সেগুলো বৈশ্বিক। মানুষ এই গল্পের চরিত্রগুলোর সাথে নিজেদের একাত্ম করতে পারে। সততার সাথে এই চরিত্রগুলোর সাথে আমরা কাজ করি এবং বাড়তি কোনো চাকচিক্য দেখাই না। মনের একটি শুদ্ধ অবস্থান থেকেই এই চরিত্রগুলো পর্দায় ফুটে ওঠে।
বিশ্বের অনেক ফেস্টিভ্যালেই ওমের্তা প্রদর্শিত হয়েছে। সবচেয়ে সেরা অনুভূতি কোন কথাটি শুনে হয়েছিল?
হানসাল স্যার আর আমার একসাথে করা কাজগুলোর মাঝে এটিই এখন পর্যন্ত সবচাইতে সেরা। সত্যি কথা বলতে গেলে, দর্শকেরা এই চরিত্রটিতে আমাকে দেখে ভয় পাবেন। ওমের্তা এখন পর্যন্ত সেরা কাজ বলেই মনে করি ক্যারিয়ারে। অভিনেতা হওয়া খুব দারুন একটা বিষয়। প্রতিটা ছবিতেই নিজেকে আরও ছাপিয়ে যাবার সুযোগ থাকে।
বাণিজ্যিক এবং সমান্তরাল, দুই ধারার ছবিতেই আপনি সমান তালে কাজ করছেন। এই ছবিটিকে কী বলবেন?
কাজটা পরিকল্পনা করে শুরু হয়নি, বরং কিছুটা হুট করেই হয়েছে বলা যায়। নিউটনের আগে ওমের্তার কাজ শুরু হয়েছিল। ট্র্যাপডের কাজ শেষ হবার সাথে সাথেই ওমের্তার কাজের জন্য শ্যুট করে ফেলি। নানা প্রদর্শনীতে ছবিটা নিয়ে যাই এবং এখন ছবিটা মুক্তির সময়ও চলে এলো (মুক্তি হয়ে গিয়েছে)। এই বছরই দর্শকরা ছবিটি দেখবার সুযোগ পাবে জেনে খুবই খুশি আমি। ওমের্তা, ট্র্যাপড, বারেলি কি বারফি- যাই বলুন না কেন, স্ক্রিপ্ট যদি চমৎকার হয়, আমাকে আকর্ষণ করতে পারে, তাহলে কাজ করবার জন্য সবসময়ই মুখিয়ে থাকি।
ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সাথে ফ্যানি খান করছেন। শ্রদ্ধা কাপুরের সাথে স্ত্রী, সোনম কাপুরের সাথে এক লাড়কি কো দেখা। কী মনে হচ্ছে আপনার?
কী মনে হচ্ছে, কখনও সেটিকে পাত্তা দিই না আমি। এমনসব ছবিতে কাজ করি, যেগুলো আগেরটার চাইতে সেরা। এখনও লাভ, সেক্স অউর ধোঁকা ছবির রাজকুমারই আছি আমি। কোনোকিছুই খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। মানুষ আমাকে গ্রহণ করছে, আমার নাম জানছে, এটিই সবচেয়ে বড় বিষয়।
ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা মুহুর্তটি উপভোগ করছেন, তাই না?
এখনকার জন্য বলব, হ্যা করছি। তবে আমি আরও ভালো কিছু চাই। এটাই সবচেয়ে ভালো হোক, সেটা কাম্য না। সবচেয়ে ভালো কাজ যেটি, সেটি যেন এর চেয়েও বেশি উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে আমাকে। এর চাইতে আকর্ষনীয় আর কিছুই হতে পারে না।
(সূত্রঃ ফিল্মফেয়ার ডট কম)