১৩ টি করে ম্যাচ শেষ দুই দলেরই। সানরাইজার্সের ইতোমধ্যে প্লে অফ নিশ্চিত, শুধু তাই নয় শীর্ষস্থানও অনেকটাই নিশ্চিত। তবে কলকাতার ভাগ্য এখনো নিশ্চিত হয়নি। শেষ ম্যাচে সানরাইজার্সকে হারাতে পারলে প্লে অফ নিশ্চিত হয়ে যাবে সাকিব আল হাসানের সাবেক দল কলকাতার। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে দুই দলের পরিস্থিতিতে চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক একবার।
সানরাইজার্সের কথা তো বলাই হলো, নিজেদের ভাগ্য নিজেদের হাতে রাখতে শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই কলকাতার। হারলেও প্লে অফে যাওয়ার সুযোগ থাকবে, তবে সেক্ষেত্রে পড়তে হবে নেট রান রেটের মারপ্যাঁচে। প্রতিটি দল যেভাবে গায়ে গা ঘেঁষে চলছে, জয় ভিন্ন অন্য কিছু তাই ভাবার কথা নয় কলকাতার।
টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়ভাগে এসে নিজেদের মোমেন্টাম খুঁজে পেয়েছে দীনেশ কার্তিকের দল। শেষ ছয় ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই জয় তুলে নিয়েছে তারা। খেলোয়াড়দের মধ্যে একাগ্রতাও বেড়েছে অনেকটা। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে মিসফিল্ডিংয়ের পর কুলদীপ যাদবের প্রতি অধিনায়ক কার্তিকের অসন্তোষ, কিংবা ক্রিস লিনের দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ শেষ করে আসা, সবেতেই দলটির প্লে অফে যাওয়ার ইচ্ছা ফুটে উঠছে, এখন শুধু শেষ বাধাটা পার হওয়ার অপেক্ষা।
তবে কলকাতার জন্য নেগেটিভ পয়েন্ট হতে পারে যেটি, সেটি হলো ম্যাচের ভেন্যু। খেলা হবে হায়দ্রাবাদের হোম ভেন্যু রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে, যেখানে দলটির রেকর্ড দারুণ। তুলনামূলক বড় মাঠ আর কিছুটা স্লো উইকেটে ভয়ংকর হয়ে ওঠা রাশিদ খান আর সাকিব আল হাসানকে সামলাতে তাই ভালো পরীক্ষাই দিতে হবে কলকাতার ব্যাটসম্যানদের।
ইডেন গার্ডেন্সে এর আগের দেখায় সম্মিলিত পারফরম্যান্স দেখিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছিল হায়দ্রাবাদ। কলকাতাকে ৮ উইকেটে ১৩৮ রানে আটকে দেয়ার পর অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ৪৪ বলে ৫০ রানের ইনিংসের সুবাদে এক ওভার হাতে রেখেই জয় পায় হায়দ্রাবাদ।
তবে এই ম্যাচে চাইলে কিছুটা কৌশলী হতে পারে কলকাতা। হায়দ্রাবাদের ইমপ্যাক্ট বোলার রাশিদ খান এবারের আসরে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বেশ খরুচে বোলিং করেছেন। ২০১৮ এর আইপিএলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে রাশিদের ইকোনমি ১০.১, গড়ে প্রতি চার বলে একটি করে বাউন্ডারি খেয়েছেন। এর আগে পরপর দুই ম্যাচে ক্রিস গেইল ও সুরেশ রায়না তাঁর বলে প্রচুর রান তুলেছেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে আবার দারুণ ভয়ংকর রাশিদ। ইকোনমি রেট মাত্র ৬.১, গড়ে প্রতি বাউন্ডারি খেয়েছেন ৮.৭ বলে। কলকাতা তাই নিতিশ রানা ও সুনীল নারাইনকে ব্যবহার করতে পারে রাশিদকে সামলানোর জন্য। রাশিদ যেহেতু সাধারণত ইনিংসের মাঝপথেই বেশি বল করেন, এই এক ম্যাচের জন্য শুবমান গিলকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে নারাইনকে ওয়ান ডাউন বা টু ডাউনে নামিয়ে আনতে পারে কলকাতা। নারাইন না পারলেও সেক্ষেত্রে অপশন হিসেবে থেকে যাবেন নিতিশ রানা।
টুকিটাকি পরিসংখ্যান:
- ওভার ৭ থেকে ওভার ১৮- ইনিংসের মাঝের এই সময়টায় কেন উইলিয়ামসনের স্ট্রাইক রেট এক কথায় দুর্দান্ত। যেই সময়টায় রান তুলতে হিমশিম খায় অনেকে, হায়দ্রাবাদ অধিনায়ক সেখানে রান তুলেছেন ১৫০.৩ স্ট্রাইক রেটে। ডেথ ওভারে এসে আবার তাঁর স্ট্রাইক রেট কমে দাঁড়াচ্ছে ১৩২.৬ এ।
- ২০১৫ থেকে সব ধরনের টি-২০তে হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে গড় স্কোর ৮ উইকেটে ১৩৯।
- এই আইপিএলে চেজ করতে নেমে দীনেশ কার্তিকের গড় ৮১.৫। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে এখনো পর্যন্ত ২৪৫ রান করেছেন কলকাতা অধিনায়ক। সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ৪৫।
সম্ভাব্য দল:
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ-
শিখর ধাওয়ান, অ্যালেক্স হেলস, কেন উইলিয়ামসন, মনীষ পান্ডে, দীপক হুদা, সাকিব আল হাসান, শ্রীবৎস গোস্বামী, ভুবনেশ্বর কুমার, রাশিদ খান, সন্দ্বীপ শর্মা, সিদ্ধার্থ কৌল।
কলকাতা নাইট রাইডার্স-
ক্রিস লিন, সুনীল নারাইন, রবিন উথাপ্পা, নিতিশ রানা, দীনেশ কার্তিক, আন্দ্রে রাসেল, শুবমান গিল, পিয়ুশ চাওলা, মিচেল জনসন, কুলদীপ যাদব, শিভাম মাভি।