ঝড় হচ্ছে, বৃষ্টি বাদল হচ্ছে, কিংবা নীল আকাশ ফুঁড়ে চকচক করছে পৃথিবীপৃষ্ঠ। কেমন লাগবে এসব দেখতে যদি আপনি সরাসরিই পৃথিবীর বাইরে থেকে এসব দেখতে পান? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, কিছুদিন পর মানুষ এসব সরাসরিই দেখতে পাবে। চোখের সামনে ভেসে উঠবে আমাদের ধরণী। তবে তার জন্য খরচ করতে হবে বেশ কিছু টাকা।
বিশ্বের নামকরা কিছু প্রতিষ্ঠান এবং ধনকুবের এমনই একটি দক্ষযজ্ঞের আয়োজন করতে যাচ্ছেন। এই আয়োজনের ফলে পৃথিবীর বহিঃঅঞ্চলে স্থাপন করা হবে বেশকিছু স্যাটেলাইট ক্যামেরা এবং এগুলো সর্বক্ষণ চালু থাকবে, যাতে যে কেউ পৃথিবীকে বাইরে থেকে কেমন দেখায়, তা বুঝতে পারবেন।
EarthNow LLC এর মতো কিছু কোম্পানীর সাথে যোগ দিয়েছেন বিল গেটস, এয়ারবাস, সফটব্যাঙ্ক এবং গ্রেগ ওয়াইলারের মতো টেক টাইকুনরা। এরা সবাই এগিয়ে আসছেন পৃথিবীকে যাতে বাইরে থেকে চমৎকারভাবে দেখা যায়। এছাড়াও পৃথিবীতে কখন কী ঘটছে এবং কোন স্থানে কী ঘটছে, সেটিরও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা যাবে এই স্যাটেলাইট ক্যামেরার সাহায্যে। বড় বড় ঘূর্ণিঝরগুলো কীভাবে সৃষ্টি হচ্ছে, কোথায় সৃষ্টি হচ্ছে, এমনকি কোনদিকে ধেয়ে যাচ্ছে, সেটিও দেখা যাবে এই স্যাটেলাইট সুবিধার সাহায্যে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সমুদ্রের নীল বুকে ছুটে চলা মাছেদের সাঁতার কাটার দৃশ্যও দেখা যাবে নির্বিঘ্নে।
এককথায় এটিকে বলা যায়, মহাশূণ্যে একদম নিজের মতো করে আপনি সার্ভেইল্যান্স করতে পারবেন!
স্যাটেলাইটে ক্যামেরা স্থাপন করা শুরু হবে কিছুদিনের মাঝেই এবং সর্বস্তরে পৌঁছে দিতে সাহায্য করছে এয়ারবাস। এছাড়াও ওয়াইলারের ইন্টারনেট কোম্পানী ওয়ানওয়েব এই ক্যামেরা উন্নতকরণের কাজটি করেছে।
তবে এসবকিছুর পেছনে কাজ করেছে একটি পুরনো চিন্তা, যেটি এতোদিন কষ্টকল্পনা হিসেবেই মানুষের কাছে ছিল। আর্থনাউ এর সিইও রাসেল হ্যানিগান তার একটি বয়ানে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে পৃথিবীতে কেবল বাস করাই নয়, বরং পৃথিবীকে দেখতে হবে আরও ভালো ও নিবিড়ভাবে। বাসযোগ্য পৃথিবীকে কী করে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা যায়, সেটিই হবে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
কোম্পানীটি আরও বেশি কিছু নিয়ে চিন্তা করছে। আর্থনাউ এখন লাইভ ভিডিওগুলোকে পণ্য হিসেবে তৈরি করতে চাচ্ছে এবং যাদের স্যাটেলাইট ক্যামেরা কিনে দেখবার সামর্থ্য নেই, তাদের কাছে এই লাইভ ভিডিওগুলো বিক্রি করা হবে। সরকারের কাছে এবং যাদের থেকে কোনো ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই, তাদের কাছে বিক্রয় করা হবে এসব লাইভ ভিডিও। সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে, হাতের কাছে থাকা মোবাইল ও ট্যাবলেটের সাহায্যেই দেখা যাবে পৃথিবীকে।
(সূত্রঃ লাইভ সাইন্স)