ম্যাক ইউরী : বাংলাদেশের ‘ সুপার হিউম্যান ‘-এর গল্প – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ফিচার / ম্যাক ইউরী : বাংলাদেশের ‘ সুপার হিউম্যান ‘-এর গল্প

ম্যাক ইউরী : বাংলাদেশের ‘ সুপার হিউম্যান ‘-এর গল্প

নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আমরা অনেকেই আজকাল ভীষণভাবে শঙ্কিত থাকি। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো নয়। প্রতিদিনের পত্রিকার খবরগুলো দেখলে শিউরে উঠতে হয়। কী করে ভালো থাকবে মানুষ? নিজেকে রক্ষার উপায় কী? আচ্ছা ঠিক আছে। এই কথা বাদ দিয়ে চলুন এবার অন্য কথায় যাওয়া যাক। একজন মানুষের নাম বলছি।

ব্যুত্থান এর জনক ম্যাক ইউরী

তার পরিচয় দেবার আগে জেনে আসা যাক প্রাপ্তিগুলো সম্পর্কে। ডিসকভারি চ্যানেল ২০১৩ সালে তাকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করে। এই প্রামাণ্যচিত্রে তাকে বিশ্বের অন্যতম অতিমানব বা সুপারহিউম্যান হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এমন কী করলেন তিনি, যার কারণে তাকে এই আখ্যা দেয়া হলো?
ডিসকভারি চ্যানেলে নিযুক্ত পাঁচজন বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক তার ক্ষমতা বিশ্লেষণ করে বলেছেন বিশ্বের সব মানুষের চাইতে তার পায়ে অধিক শক্তি। অর্থাৎ, সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা যতটুকু শক্তি নিজেদের পায়ে ধারণ করতে পারি, তার চাইতে অনেক অনেক বেশী শক্তি রয়েছে ম্যাক ইউরির পায়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ওয়েন ইউনিভার্সিটি একটি গবেষণায় দেখায় যে একটি আদর্শ বেসবল ব্যাট ভেঙে ফেলতে ৭৪০ পাউন্ড শক্তির প্রয়োজন।

ব্যুত্থান এর জনক ম্যাক ইউরীইউরী একাই খালি পায়ে লাথি দিয়ে একসাথে তিন তিনটে বেসবল ব্যাট ভেঙে ফেলতে পারেন! বৃটেনের নটিংহামের মেয়রের উপস্থিতিতে ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস রেজিস্ট্রি অ্যাডজুডিকেটর জন ইভান্স আনুষ্ঠানিক ভাবে এই কৃতি মার্শাল আর্ট গ্র্যান্ডমাস্টারের হাতে বিশ্ব স্বীকৃতি সনদ হস্তান্তর করেন। ম্যাক ইউরীকে বজ্র মুনি বা থান্ডার শিনম্যান হিসেবে ডাকা হয়ে থাকে। তিনি বিশ্ব রেকর্ডধারী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পৃথিবীর একজন শীর্ষস্থানীয় মার্শাল আর্ট গ্র্যান্ডমাস্টার। মনঃসংযোগ প্রশিক্ষণ, ধ্যান, প্রেরণাদায়ী বক্তা এবং আত্মরক্ষা কৌশল প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ম্যাক ইউরি বিশ্বের একজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব। আইন-প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের প্রশিক্ষণ, সন্ত্রাস-বিরোধী কৌশল এবং নিরাপত্তা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও তার সুপরিচিতি রয়েছে। এছাড়াও তিনি একজন লেখক ও দার্শনিক। এছাড়া তিনি বজ্রপ্রাণ এবং ব্যুত্থান ক্রীড়াদ্বয়ের প্রতিষ্ঠাতা। বজ্রপ্রাণ এবং ব্যুত্থান দক্ষিণ এশিয়ায় উদ্ভূত দুইটি প্রাচীণ আত্মরক্ষামূলক ক্রীড়া, যা শরীর-মনের ভারসাম্য বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তিগত উন্নয়ন ঘটিয়ে থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী জঙ্ঘাস্থি বা শিন-এর জন্যে এবং মস্তিস্কের মাধ্যমে সর্বোচ্চ মনোনিবেশ অর্জনের তিনি ৪টি বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করেছেন।

ম্যাক ইউরী ‘র ছেলেবেলা ও শিক্ষা

ম্যাক ইউরীর জন্ম ১৯৬৪ সালে। পিতার নাম শামসুল আলম এবং মায়ের নাম আমিনা আলম। সোভিয়েত নভোচারী ইউরি গ্যাগারিনের নামানুসারে তার নাম রাখা হয় ইউরি। শৈশবে এলিজাবেথ মার্বেল প্রাইমারি স্কুলের মাধ্যমে ম্যাক ইউরি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভ শুরু করেন। পঞ্চম শ্রেণী থাকা অবস্থায় তিনি তার সহপাঠী ও বন্ধুদের সাথে একত্রে শারীরিক প্রশিক্ষণ বিষয়ক একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। শারীরিক প্রশিক্ষণের উপরে তিনি সেসময় একটি ছোট বই রচনা করেন, বইটি তিনি তার বন্ধুদের মাঝে বিতরণ করেন। এরপর তিনি বার্মিজ মনস্তাত্বিক প্রশিক্ষণ বান্দো এবং মিনজিং বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। কৈশোরে তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি শৃঙ্খলা ও রণকৌশল বিষয়েও সম্যক জ্ঞান অর্জন করেন। নবম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় তিনি সামরিক বিজ্ঞান বিষয়ক একটি সংস্থার সাথে জড়িত হন, পরবর্তিতে তিনি নিজেই ‘সেলফ ডিফেন্স সোসাইটি’ বা আত্মরক্ষা বিষয়ক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭ বছর বয়সে ম্যাক ইউরী নিজেই মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ড ভ্রমণ করেন। মার্শাল আর্টস, ধ্যান, যোগশাস্ত্র এবং ভেষজ ঔষধ সম্পর্কে জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে পরবর্তিতে তিনি বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন।

ইত্যাদিতে ব্যুত্থান এর জনক ম্যাক ইউরী
ব্যুত্থান কী

ব্যুত্থান সংস্কৃত শব্দ থেকে উদ্ভূত একটি বাংলা শব্দ যার আভিধানিক অর্থ স্বাতন্ত্র্যের সাথে প্রতিরোধ বা সনাতনকে সত্যদ্বারা প্রতিস্থাপন করবার এক বৈল্পবিক পদ্ধতি। ব্যুত্থান একটি বাংলাদেশী মার্শাল আর্ট। এটি প্রাচীন দক্ষিণ এশিয়ার আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধকলার ঐতিহ্যের ধারায় গঠিত নিরাপদ ক্রীড়া, বিজ্ঞানভিত্তিক এক বাস্তবধর্মী আত্মরক্ষা ও আত্মউন্নয়নের পদ্ধতি।

কর্মজীবন

ম্যাক ইউরী মার্শাল আর্টসের প্রশিক্ষণের জন্য মায়ানমারে গমন করেন, সেখানে তিনি বার্মিজ মার্শাল আর্টস বান্দো এবং বানশে সম্বন্ধে হাতে-কলমে জ্ঞান লাভ করেন। ইউরী পরবর্তীতে দক্ষিণ ভারতে কাঞ্চিপুরাম এবং চীনের শাওলিন টেম্পলে যান। এই দুই জায়গা থেকে তিনি মার্শাল আর্টসের অভ্যুথান বিষয়ে জানবার জন্য ঐতিহাসিক তথ্য সংবলিত তামিল ও চীনা ভাষার দলিলাদি ও পুস্তকের অনূদিত প্রতিলিপি সংগ্রহ করেন। ইউরী তাঁর পেশাজীবন শুরু করেন আত্মরক্ষা কৌশল বিষয়ের প্রশিক্ষক হিসেবে। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, সামরিক বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি কমব্যাট সেলফ ডিফেন্স উদ্ভাবন করেন। ইউরী এমওয়াই ব্যাটন নামের একটি কন্ট্রোল ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন, এটি নিরাপত্তা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের কাজে ব্যবহৃত হয়। তিনি অ্যামেরিকান সোসাইটি অফ ল এনফোর্সমেন্ট ট্রেইনারস-এর প্রশিক্ষক সদস্য।


পদক

ম্যাক ইউরী ‘র জীবনে প্রাপ্ত পদকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। আসুন, এক নজরে দেখে নিই ম্যাক কী কী অর্জন করেছেন-
১. ইয়ুথ ইন্সপারেশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ – সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক
২. ব্র্যান্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ২০১৩ – বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম
৩. মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং পারফর্মারস অ্যাওয়ার্ড ২০১১ – ইন্টারন্যাশনাল মার্শাল আর্টস এক্সিবিশন, ইউকে
৪. গ্র্যান্ড মাস্টার পিনাকল অ্যাওয়ার্ড ওয়ার্ল্ড – গ্র্যান্ড মাস্টার্স কাউন্সিল, ইউএসএ, ২০০৯
৫ . গ্র্যান্ড মাস্টার অফ দ্যা ইয়ার – লন্ডন মার্শাল আর্টস হল অফ ফেম, ইউকে, ২০০৯
৬. গ্র্যান্ড মাস্টার অফ দ্যা ইয়ার – ওয়ার্ল্ড ব্ল্যাক বেল্ট মার্শাল আর্টস হল অফ ফ্রেম, মালয়েশিয়া, ২০০৮
৭. গ্র্যান্ড মাস্টার অফ দ্যা ইয়ার – ইউনিভার্সাল মার্শাল আর্টস হল অফ ফেম, ইউএসএ, ২০০৭
৮. গ্র্যান্ড মাস্টার অফ দ্যা ইয়ার – ওয়ার্ল্ড ব্ল্যাক বেল্ট মার্শাল আর্টস হল অফ ফ্রেম, ইউএসএ, ২০০৭

লেখার শুরুতেই বলেছিলাম নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত থাকতে হয় আজকাল। ম্যাক ইউরী আমাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার নাম। বাবা মায়েরা নিজেদের সন্তানদের আত্মরক্ষার সাহায্যে সুরক্ষিত রাখতে চাইলে বাংলাদেশী এই বীর হয়ে উঠতে পারেন অনুকরণীয় আদর্শ।

(তথ্যসূত্র ও ছবিসূত্রঃ ইন্টারনেট)

About ahnafratul

লেখালেখি করতে ভালোবাসি। যখন যা সামনে পাই, চোখ বুলিয়ে নেই। চারদিকে তাকাই, উপলব্ধি করার চেষ্টা করি। দুনিয়াটা খুব ছোট, তারচাইতেও অনেক ছোট আমাদের জীবন। নগদ যা পাই, হাত পেতেই নেয়া উচিত। তাই না?

Check Also

কথা বলবার সময় আমরা ‘অ্যা’, ‘উম’ এসব উচ্চারণ করি কেন?

কথা বলবার সময় আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে ‘অ্যা’, ‘উম’ ইত্যাদি আওয়াজ নিঃসরণ করে থাকি। এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *