শচীন টেন্ডুলকার এর শোককে শক্তিতে পরিণত করা এক মহাকাব্যিক ইনিংসের গল্প – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ক্রিকেট / শচীন টেন্ডুলকার এর শোককে শক্তিতে পরিণত করা এক মহাকাব্যিক ইনিংসের গল্প

শচীন টেন্ডুলকার এর শোককে শক্তিতে পরিণত করা এক মহাকাব্যিক ইনিংসের গল্প

শচীন টেন্ডুলকার

‘শোককে শক্তিতে পরিণত করা’- কথাটা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। তবে এর সর্বোত্তম উদাহরণ দেখতে চান? তাহলে চলুন আপনাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাই ১৯৯৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে।

বছরটা এমনিতেই খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না শচীন টেন্ডুলকারের। বিশ্বকাপের বছর, অথচ মৌসুমের শুরুর দিকেই চেন্নাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলতে গিয়ে পিঠের চোটে পরলেন। ব্যাথা নিয়েই ইংল্যান্ডে গেলেন বিশ্বকাপ খেলতে। আত্মজীবনিতে পরে লিখেছেন, “যতবার অনুশীলন করতে নামতাম, আমার পিঠ কেমন অসাড় হয়ে যেত। ঠিক হওয়ার জন্য একটা কুলিং পিরিয়ড লাগত আমার”।

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ সাউথ আফ্রিকা। জ্যাক ক্যালিসের দারুণ পারফরম্যান্সের সাথে না পেরে হার দিয়েই শুরু হয় ভারতের বিশ্বকাপ অভিযান। দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যখন জয় দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনায় ব্যস্ত ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট, তখনই এল বিশাল বড় দুঃসংবাদটা। প্রখ্যাত মারাঠি কবি রমেশ টেন্ডুলকারের মৃত্যুসংবাদে মুষড়ে পড়ল ভারতীয় দল। তবে ভারতীয় দলের কাছে রমেশ টেন্ডুলকারের কবি পরিচয় ছাপিয়েও আরও বড় পরিচয়, তিনি ভারতীয় দলের প্রাণভোমরা শচীন টেন্ডুলকারের বাবা। বাবার মৃত্যুতে হতবিহবল শচীন সেদিনই উড়ে গেলেন ভারতে। বাবার খুব কাছের ছিলেন শচীন, প্রিয় মানুষটিকে শেষবারের মত দেখতে তাঁকে যে যেতেই হতো!

এদিকে দলের সেরা তারকাকে হারিয়ে ভারতও যেন দিশা হারিয়ে ফেলল। প্রথম ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার কাছে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও জিম্বাবুয়ের কাছে অপ্রত্যাশিত হার! অবস্থাটা এমন দাঁড়ালো, বাকি তিন ম্যাচের আর একটিতে হারলেও গ্রুপ পর্বেই থেমে যেতে পারে ভারতীয়দের বিশ্বকাপ যাত্রা।

দলের এমন ক্রান্তিকালে এসেই নিজের মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় আরও একবার দিলেন শচীন টেন্ডুলকার , বোঝালেন কেন তাঁকে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপের নিউক্লিয়াস মানা হয়। বাবার মৃত্যুর মাত্র চারদিনের মাথায় বাবা হারানোর শোককে চেপে রেখে কেনিয়ার বিপক্ষে ব্যাট হাতে নেমে গেলেন দলকে বাঁচাতে। আর তারপরের গল্পটা যেন শচীন টেন্ডুলকার নিজ হাতে লিখবেন বলেই ঠিক করে রেখেছিলেন!

শচীন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়

মরণ বাঁচন ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নামল ভারত। টেন্ডুলকারের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের সাথে ফিফটি করেছিলেন সাদাগোপান রমেশ। সৌরভ গাঙ্গুলীও সাউথ আফ্রিকার সাথে প্রথম ম্যাচে ভালো করেছেন। আর তিন নম্বর জায়গাটা বরাদ্দ রাহুল দ্রাবিড়ের জন্য। দলে ফিরে তাই টেন্ডুলকারকে নেমে যেতে হল চার নম্বরে। আর সেখানে ব্যাট করেই তিনি খেললেন তাঁর সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসটি।

২১ তম ওভারে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাদাগোপান ফিরে যাওয়ার পর দ্রাবিড়ের সাথে জুটি বাঁধলেন শচীন টেন্ডুলকার । দর্শক সমর্থকেরা প্রবল করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানালো তাদের হিরোকে। টেন্ডুলকারের মনে তখন বাবা হারানোর প্রবল শোক, সাথে পিঠে তীব্র ব্যাথা। কিন্তু এদিন যে টেন্ডুলকার খেলবেন শুধুই তাঁর প্রয়াত বাবার জন্য! কেনিয়ান বোলাররা তাই দেখলেন দৃঢ় সংকল্প টেন্ডুলকারের বিধ্বংসী রূপ।

৩৫ তম ওভারে যখন ৫৪ বলে পঞ্চাশ ছুঁলেন তখনো বোঝার উপায় ছিল না কি ঝড় নিয়ে অপেক্ষা করছেন টেন্ডুলকার। পরের ৪৭ বলে যে ৯০ রান আসবে মাস্টার ব্লাস্টারের ব্যাট থেকে, তা কি আর জানতেন কেনিয়ান বোলাররা!

শচীন টেন্ডুলকার

৪৪ তম ওভারে ৯৮ রানে দাঁড়িয়ে টেন্ডুলকার। স্টিভ টিকোলোর বলটাকে মিড অফে ঠেলে দিয়ে দুটো রান সংগ্রহ করে পৌঁছে গেলেন তিন অঙ্কের ঘরে। তাকালেন আকাশের দিকে, যেন মেঘের মাঝে খুঁজে নিতে চাইলেন প্রিয় বাবাকে। বাবাকে যেন বার্তা দিতে চাইলেন, দেশের জন্য সেঞ্চুরি করেই বাবাকে জানালেন শেষ শ্রদ্ধা! শেষ পর্যন্ত সেদিন ১৪০ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে, ভারতও জয় পেয়ে বাঁচিয়েছিল নিজেদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন।

কিন্তু বাবার অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার চারদিনের মাথায় ব্যাট হাতে কিভাবে নেমে পড়া সম্ভব? উত্তরটা দিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার  নিজেই, “চারদিন ভারতে কাটানোর পর কেনিয়ার সাথে ম্যাচের আগের দিন সন্ধ্যায় আমি ইংল্যান্ড এসে পৌঁছাই। আমার মনে হয়েছিল, আমার বাবাও এটাই চাইতেন, যেন আমি দেশের হয়ে খেলি। এটা ভেবেই আমি নিজেকে উদ্বুদ্ধ করেছি বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলোতে খেলতে”।

তবে সেঞ্চুরি করলেও খেলার মাঝপথে যে বারবারই মনোযোগ সরে যাচ্ছিল তাঁর, এটাও স্বীকার করেছেন অকপটে। যতই ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যান হোন না কেন, তিনিও তো রক্ত মাংসে গড়া মানুষ!

এটা অবিশ্বাস্য ছিল। আমরা তাদের জানাচ্ছিলাম পাকিস্তান ব্যাট করতে নামবে না, টিকিটের কোন টাকা ফেরত দেয়া হবে না, সবচেয়ে বড় কথা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিহত হয়েছেন! তারপরেও দর্শকেরা এমনভাবে আচরণ করলেন, যেন কিছুই হয়নি! এটা আসলেই লজ্জাজনক ছিল

ওয়ানডে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি

ইনিংসের তখনো বাকি আরও ৫ ওভার, ২০০ পূর্ণ করতে শচীনের দরকার মাত্র ৯ রান। কাঙ্ক্ষিত সেই ৯ রান তিনি পেলেন বটে, তবে সেটা একেবারে ইনিংসের শেষ ওভারে! মহেন্দ্র সিং ধোনির তাণ্ডবে ইনিংসের শেষ ৩০ বলের মধ্যে মাত্র ৯ টিতে স্ট্রাইকে আসতে পেরেছিলেন শচীন!

 

About Sanjoy Basak Partha

Check Also

প্রসিধ কৃষ্ণা: নেট বোলার থেকে আইপিএল মাতানো তরুণের গল্প

প্রথমবার যখন শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটের স্বাদ পেলেন, প্রসিধ কৃষ্ণার বয়স তখন ১৯ বছর। ২০১৫ সালে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *