মঞ্চটা তাঁর জন্য সাজানোই ছিল। সেমিফাইনালের আগেই ছিটকে পড়েছিলেন রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জোকোভিচ, ইনজুরির কারণে তো অ্যান্ডি মারে অংশই নেননি। তবুও ২০ নম্বরের অপেক্ষাটা ফুরানোর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত তাঁর ভক্তদের। শেষ পর্যন্ত ভক্তদের অপেক্ষাকে মিষ্টতায় ভরিয়ে দিয়েছেন রজার ফেদেরার, হাতে তুলেছেন রেকর্ড সর্বোচ্চ ২০ নম্বর গ্র্যান্ডস্ল্যাম টাইটেলটি!
তবে জয়টা সহজে আসেনি। ক্রোয়াট প্রতিপক্ষ মারিন চিলিচ প্রথম চার সেটে সমানে সমানে লড়েছেন, চতুর্থ সেটেই যেখানে ম্যাচ শেষ হবে বলে মনে হচ্ছিল, সেই ম্যাচ টেনে নিয়ে গেছেন পঞ্চম সেটে। কিন্তু শেষ সেটে এসে কিছুটা ক্লান্তি আর ফেদেরারের অভিজ্ঞতার দেয়ালে আটকে গেলেন দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্ল্যামের অপেক্ষায় থাকা চিলিচ। ৩ ঘণ্টা ৩ মিনিটের জমজমাট লড়াই শেষ হয়েছে ফেদেরারের ৬-২, ৬-৭, ৬-৩, ৩-৬, ৬-১ গেমে জয়ের মধ্য দিয়ে।
ম্যাচের শুরুটা অবশ্য ফেদেরারসুলভই হয়েছিল। চিলিচের প্রথম সার্ভটাই ব্রেক করেছিলেন। এরপর ওই সেটে ঘুরে দাঁড়ানোর আর কোন সুযোগই দেননি প্রতিপক্ষকে। মাত্র ২৪ মিনিটেই সেট জিতে নেন ৬-২ গেমে। পুরো টুর্নামেন্টেই একটিও সেট না হারা ফেদেরার ফাইনালেও সেই ধারা বজায় রাখবেন বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু প্রবল প্রতাপে ফিরে এসে সেই আশা নস্যাৎ করেন চিলিচ।
দ্বিতীয় সেটে চিলিচের চোখ মুখ ঠিকরে বেরোচ্ছিল আত্মবিশ্বাসের ঝিলিক। আগুনে সব সার্ভ আর গোলার মত ফোরহ্যান্ড উইনার দিয়ে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলেন ফেদেরারকে। সার্ভ ব্রেক করতে না পারলেও ফেদেরারকেও সার্ভ ব্রেক করার সুযোগ দেননি। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকে ৭-৫ এ জিতে ম্যাচে ফেরেন চিলিচ।
কিন্তু তৃতীয় সেটে আবারো দুরন্ত ফেদেরার। চিলিচের সার্ভ ব্রেক করে সেট জিতলেন ৬-৩ এ, ম্যাচে এগিয়ে গেলেন ২-১ সেটে। চতুর্থ সেটের শুরুতেও যখন চিলিচের সার্ভ ব্রেক করে এগিয়ে গেলেন, ফেদেরারের জয়ই তখন মনে হচ্ছিল একমাত্র ফল। কিন্তু সব দান উল্টে দিয়ে দুইবার ফেদেরারের সার্ভ ব্রেক করে চতুর্থ সেট জিতে ম্যাচে নিজের আশা বাঁচিয়ে রাখেন চিলিচ।
কিন্তু ফাইনাল সেটে গিয়ে আর পারলেন না। স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে ম্যাচ নিজের করে নেন ফেদেরার, সাথে জিতলেন নিজের ষষ্ঠ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শিরোপাও।
এই নিয়ে মোট ২০ টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম হল ফেডেক্সের, পুরুষদের মধ্যে যা সর্বকালের সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন ৬ বার, ফ্রেঞ্চ ওপেন ১ বার, উইম্বলডন ৮ বার আর ইউএস ওপেন জিতেছেন ৫ বার।