হারকিউলিস ও মেগারাঃ কালজয়ী এক প্রেমের আখ্যান – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ইতিহাস / হারকিউলিস ও মেগারাঃ কালজয়ী এক প্রেমের আখ্যান

হারকিউলিস ও মেগারাঃ কালজয়ী এক প্রেমের আখ্যান

গ্রিক বীর হারকিউলিসের জন্ম থিবিসে। দেবরাজ জিউসের ছেলে হলেও তার মা আক্লমিনা একজন মানুষ। জিউসের সন্তান হওয়ায় হারকিউলিসের জীবনের শেষ পর্যন্ত সৎ মা দেবী হেরা তাকে কখনই ক্ষমা করেননি। এমনকি জন্মের পর থেকেই হারকিউলিসকে দুই চোখের বিষ মনে করতেন হেরা। হারকিউলিস যখন শিশু তখনই তাকে হত্যা করার জন্য দুটি ভয়ঙ্কর সাপ পাঠান সৎ মা দেবী হেরা। কিন্তু কে জানত ইতিহাসের তখন কেবল শুরু। এই শিশুই যে ভবিষ্যতের ভয়ঙ্কর বীর!

সাপের আগমন টের পেয়েই হোক আর নিয়তির লিখনেই হোক সাপ ছোবল দেওয়ার আগেই জেগে উঠল ঘুমন্ত হারকিউলিস। আশ্চর্যের বিষয়, এই শিশুটির যেখানে এমন সাপ দেখে আঁতকে ওঠার কথা সেখানে শিশুটি ঠিক সাবলীল থাকল। শুধু কী তাই? ভয়ঙ্কর প্রাণীর দুটির গলা ধরে একেবারে মেরেই ফেলল। এই ঘটনা তৎকালীন গ্রিসে বেশ সাড়া ফেলে দিল। অবশ্য সবাই যে অবাক হয়েছিল তা নয়।

কারণ হারকিউলিস ছিলেন দেবরাজ জিউসের ছেলে। কিন্তু মা একজন সাধারণ মানবী হওয়ায় দেবতাসুলভ গুণাবলি তার মধ্যে থাকার কথা ছিল নয়। কিন্তু ঘটনাটি দেবতাসুলভ না হলেও বীরত্বের মোড়কে সবাইকে চমকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। সেই সময় থিবিসের অন্ধ ভবিষ্যদ্বক্তা টাইরেসিয়াস খুব বিখ্যাত ছিলেন। হারকিউলিসের এ ঘটনার পর টাইরেসিয়াস হারকিউলিসের মা আক্লমিনাকে বলেছিলেন যে এই ছেলে এক দিন মানবজাতির গর্ব হয়ে উঠবে। আস্তে আস্তে এই ভবিষ্যদ্বাণীর প্রমাণ মিলতে লাগল। ১৮ বছর বয়সের মধ্যে হারকিউলিস একাই মেরে ফেলে এক বিশাল থেসপিয় সিংহ। আর হারকিউলিসের জীবনে এরকম অনেক কীর্তি রয়েছে। রয়েছে নানা ভয়ঙ্কর অভিযান। সেইসব অভিযানের ফাঁকেই এক সুন্দরীর প্রেমে পড়ে যান বীর হারকিউলিস। প্রেমের কারণে একজন বীর কীভাবে পাগলপ্রায় হয়ে উঠতে পারেন, হারকিউলিস তার অন্যতম উদাহরণ।

হারকিউলিস নানা অভিযানে নানা কীর্তি করেছেন। ভয়ঙ্কর দানব অ্যান্টিউসের বিরুদ্ধে, নদী-দেবতা অ্যাকিলাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি ট্রয়ের যুদ্ধে এক কুমারীকে উদ্ধার করেও তিনি মহিমান্বিত হন। অ্যাডমিটাসের মৃত স্ত্রী অ্যালসেস্টিসকে মৃত্যু-দেবতার হাত থেকে লড়াই করে ফিরিয়ে আনেন হারকিউলিস। তবে এসবের বাইরে অস্বাভাবিক শক্তি থাকার জন্য সামান্য অসাবধানতার জন্যই হারকিউলিসের হাতে মানুষ মারা যাওয়ার একাধিক ঘটনাও রয়েছে।

মজার ব্যাপার হলো সব দেবতা হারকিউলিসকে খুব পছন্দ করলেও জিউসের ভাই হেডস তাকে প্রচণ্ড ঘৃণা করত। হেডস জিউসের মতো অলিম্পিয়াসের রাজা হতে চেয়েছিলেন। সেজন্য হেডস তিন ভাগ্যদেবীর (ক্লোতো, ল্যাচেসিস, এট্রোপোস) সাহায্য চেয়েছিলেন। সেই তিন ভাগ্যদেবী সব অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ জানতেন। ভাগ্যদেবীরা হেডসকে জানায়, ১৮ বছর পরে, টাইটান নামের এক দৈত্য জিউসকে হত্যা করবে। কিন্তু সেই দৈত্যই পরে হারকিউলিসের হাতে মারা পড়বে। পরে হেডস নানা পরিকল্পনায় হারকিউলিসকে মারার চেষ্টা করলেও একের পর এক পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

হারকিউলিস তার জন্ম রহস্য জানত না। সেই রহস্য উন্মোচনের জন্য জিউসের মন্দিরে যায়। আর সেখানে গিয়ে সে অবাক হয় যখন সে দেখতে পায় জিউসের এবং হেরার মূর্তি জীবিত হয়ে গেছে। তারা হারকিউলিসকে নিজেদের সন্তান হিসেবে স্বীকার করে নেয়। তখন হারকিউলিস তাদের সঙ্গে যেতে চাইলে জিউস তাকে বলে, ‘এখানে শুধু দেবতারাই থাকতে পারবে। তুমি যদি কোনোদিন নিজেকে এই পৃথিবীর সত্যিকারের বীর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পার, তবেই তুমি এখানে থাকতে পারবে।’

বাবার কথা অনুসারে হারকিউলিস নিজেকে সত্যিকারের বীরে পরিণত করার জন্য বীর তৈরির শিক্ষক ফিলোকটেসের কাছে যায়। তার কাছ থেকে কঠিন রকমের দীক্ষা নিয়ে জীবনের প্রথম পরীক্ষার জন্য থেবসের দিকে রওনা হয়। পথিমধ্যে হারকিউলিস একটা অর্ধমানব এবং অর্ধ ঘোড়ার সংমিশ্রণে কিম্ভূতকিমার এক দৈত্যের মুখোমুখি হয়। এই দৈত্যটি একটি সুন্দরী মেয়েকে আক্রমণ করেছিল। হারকিউলিস তখন নিজেকে সামলাতে পারেনি। ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই দৈত্যের ওপর। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর হারকিউলিস দৈত্যটিকে বধ করতে সক্ষম হয় এবং সেই সুন্দর মেয়েটিকে সসম্মানে উদ্ধার করে। এ মেয়েটির নাম ছিল মেগারা। মেয়েটি এতই সুন্দর ছিল যে হারকিউলিস মেয়েটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার প্রেমে পড়ে যায়। এদিকে জিউসের ভাই হেডস হারকিউলিসকে হত্যা করার জন্য একের পর এক দানব পাঠাতে থাকে। অসামান্য বীরত্বে হারকিউলিস সব দানবকেই পরাজিত করে। ফলে একসময় হারকিউলিস পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী বীরে পরিণত হয়।

কথা ছিল বীরে পরিণত হলেও হারকিউলিস অমরত্ব পাবে, থাকতে পারবে দেবরাজ্যে। কিন্তু তারপরও সমস্যা থেকে যায়। হারকিউলিস অমরত্ব পায় না। হারকিউলিস বাবা জিউসকে জিজ্ঞেস করে, সে এত দৈত্য বধ করার পরেও কেন অমরত্ব পাচ্ছে না। জবাবে জিউস তাকে বলে, ‘তুমি যত বড় বীরই হও না কেন, যতদিন তোমার হৃদয়ে কোনো দুর্বলতা থাকবে, ততদিন অমরত্ব পাবে না।’ তখন হারকিউলিস হন্যে হয়ে খুঁজতে শুরু করে তার হৃদয়ের দুর্বলতা। অবশেষে হারকিউলিস উপলব্ধি করে তার একমাত্র দুর্বলতা মেগারা। এর মধ্যেই জিউসের ভাই হেডস এই গোপন কথা জেনে যায়। আর তখনই মেগারাকে বন্দী করে ফেলে। অবশেষে মেগারাকে মুক্ত করার জন্য হারকিউলিস এক দিনের জন্য তার শক্তি সমর্পণ করতে রাজি হয়। এ সময় হেডস সাইক্লোপস নামক একচোখা দৈত্যকে পাঠায় হারকিউলিসকে হত্যা করার জন্য। হারকিউলিস ফিলোকটেসের সহায়তায় সাইক্লোপসকে হত্যা করে। কিন্তু সাইক্লোপসের যুদ্ধের সময় মেগারা আহত হয়। ফলে হেডসের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী হারকিউলিস তার শক্তি ফিরে পায়, কারণ শর্ত ছিল মেগারাকে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় ফেরত দিতে হবে।

এর পর হেডস টাইটান নামক এক দৈত্যকে অলিম্পিয়াসে পাঠায় দেবতা জিউসকে হত্যা করার জন্য। হারকিউলিস আহত মেগারাকে ফিলোকটেসের কাছে রেখে, জিউসকে রক্ষা করতে ছুটে যায়। হারকিউলিস কোনো অস্ত্র ছাড়াই টাইটানকে হত্যা করে তার পিতাকে রক্ষা করে। যখন হেডস দেখল যে তার কোনো পরিকল্পনাই কাজে দিচ্ছে না, তখন সে নতুন ফন্দি আঁটল। সে হারকিউলিসকে মিথ্যা সংবাদ দিল। জানাল যে, মেগারা মারা গেছে। এই কথা শুনে হারকিউলিস ভেঙে পড়ে এবং সে মেগারার সঙ্গে সহমরণের ইচ্ছা জানায়। শুধু তাই নয়, হারকিউলিস আরও দাবি করে মেগারার আত্মা যেখানে থাকবে সেখানে যেন তার আত্মা রাখা হয়। ভালোবাসার জন্য এই আত্মাহুতির ইচ্ছার জন্য হারকিউলিস দেবতাদের কাছে সত্যিকারের বীরের মর্যাদা পায়। যে দুর্বলতা হারকিউলিসের অমরত্ব পাওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়েছিল, সেই দুর্বলতাই সবচেয়ে বড় শক্তিতে পরিণত হলো। আত্মাহুতির ইচ্ছা প্রকাশের পর হারকিউলিস এবং মেগারা অমর হয়ে দুজনে একসঙ্গে পৃথিবীতে বসবাস করতে লাগল।

About farzana tasnim

Check Also

মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য

তাঁকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে যেই নামটি চিরকাল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *