বেগম রোকেয়া দিবস আজ – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ফিচার / বেগম রোকেয়া দিবস আজ

বেগম রোকেয়া দিবস আজ

আজ ৯ ডিসেম্বর। বেগম রোকেয়া দিবস। সাহিত্যিক, শিক্ষাব্রতী, সমাজসংস্কারক এবং নারী জাগরণ ও নারীর অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালের একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। সে হিসেবে বেগম রোকেয়ার ১৩৭তম জন্মদিন ও ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৯ ডিসেম্বর।

নারীমুক্তি আন্দোলন ও নারী জাগরণ বেগবান করার দৃপ্ত শপথে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সারাদেশে আজ দিবসটি পালিত হবে। বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে ‘বেগম রোকেয়া পদক ২০১৭’ প্রদান করা হবে। পদক প্রদান উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

বেগম রোকেয়া দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দিবসটি উপলক্ষে তার জন্মস্থান পায়রাবন্দে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রোকেয়া হল, বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসুচি পালন করবে।

সাহিত্যিক হিসেবে তৎকালীন যুগের প্রেক্ষাপটে রোকেয়া ছিলেন এক ব্যতিক্রমী প্রতিভা। নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী, নবপ্রভা, মহিলা, ভারতমহিলা, আল-এসলাম,নওরোজ, মাহে নও, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, The Mussalman, Indian Ladies Magazine  প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯০৩ সালে নবনূর পত্রিকায়। মতান্তরে, তাঁর প্রথম লেখা ‘পিপাসা’ (মহরম) প্রকাশিত হয় ইংরেজি ১৯০২ সালে, চৈত্র ও বৈশাখ ১৩০৮-১৩০৯ (যুগ্মসংখ্যা) নবপ্রভা পত্রিকায়। সমকালীন সাময়িক পত্রে মিসেস আর.এস হোসেন নামে তাঁর রচনা প্রকাশিত হতো। রোকেয়ার সমগ্র সাহিত্যকর্মের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে সমাজের কুসংস্কার ও অবরোধ প্রথার কূফল, নারীশিক্ষার পক্ষে তাঁর নিজস্ব মতামত, নারীদের প্রতি সামাজিক অবমাননা এবং নারীর অধিকার ও নারী জাগরণ সম্পর্কে তাঁর প্রাগ্রসর ধ্যানধারণা। বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধেও তাঁর লেখনী ছিল সোচ্চার। পুরুষশাসিত সমাজে নারীর দুরবস্থা এবং দৈহিক-মানসিক জড়ত্ব থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় যে শিক্ষা এ ধারণাই রোকেয়া তুলে ধরেন তীক্ষ্ণ ভাষায় ও তীর্যক ভঙ্গিতে। এক প্রতিকূল সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের খন্ড খন্ড চিত্র ফুটে উঠেছে তাঁর রচনায়। সমাজের নিচুতলার মানুষের জীবনের দুর্দশার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে তাঁর বহু প্রবন্ধ ও নকশাজাতীয় রচনায়।

রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থায় নারীর সমান অধিকারের জন্য বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন আমৃত্যু লড়াই করেছেন। মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী ইত্যাদি কালজয়ী গ্রন্থে ক্ষুরধার লেখনির মাধ্যমে তিনি ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার ও নারীর বন্দিদশার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন। এ ছাড়াও বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও পণপ্রথাসহ নারীর প্রতি অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সচেষ্ট।

প্রায় সব রচনাতেই রোকেয়া প্রকাশ করেছেন ধর্মীয় বিধানের অপব্যবহারের কথা, সে যুগের নারীদের শারীরিক, মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক অবরুদ্ধতার কথা। কোনো কোনো রচনায় প্রকাশিত হয়েছে সমাজ উন্নয়নে নারী-পুরুষের যৌথ অবদানের গুরুত্ব। এমনকি কিছু রচনায় নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও তার বিভিন্ন মাত্রিকতার বিশে­ষণে তাঁর গভীর অন্তর্দৃষ্টি এবং সংস্কারমুক্ত আধুনিক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সমকালীন রাজনীতির প্রসঙ্গও স্থান পেয়েছে তাঁর লেখায়। মুক্তচিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি এবং শাণিত লেখনীর মধ্য দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ শতকের একজন বিরল ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। সে যুগের প্রখ্যাত চিন্তাবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সরোজিনী নাইডু, তদানীন্তন বড়লাট পত্নী লেডী চেমসফোর্ড, লেডী কারমাইকেল, ভূপালের বেগম সুলতান জাহান প্রমুখ বেগম রোকেয়ার সাহিত্য ও সামাজিক কর্মকান্ডের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং তাঁর কাজের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেন।

বাঙালি মুসলমান সমাজে নারীর স্বাতন্ত্র্য ও নারী স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বেগম রোকেয়া। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনালগ্নে নারীশিক্ষা ও নারী জাগরণে তিনিই প্রধান নেতৃত্ব দেন। মুসলমান সমাজের ঘোর অন্ধকার যুগে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে রোকেয়ার ভূমিকা ছিল একক, ব্যতিক্রমী এবং অনন্যসাধারণ। অবরোধ প্রথার শেকল ভেঙে তিনি বেরিয়ে আসেন অসামান্য সাহস, প্রবল আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে। বেগম রোকেয়াই প্রথমবারের মতো বাঙালি মুসলিম সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকারের দাবি তুলে ধরেন এবং নারী স্বাধীনতার পক্ষে নিজের মতবাদ প্রচার করেন।

সাহিত্যচর্চা, সংগঠন পরিচালনা ও শিক্ষাবিস্তার এই ত্রিমাত্রিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বেগম রোকেয়া সমাজ সংস্কারে এগিয়ে আসেন এবং স্থাপন করেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর অন্যতম লক্ষ্য ছিল নারীশিক্ষার প্রসার, নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি এবং মুসলমান সমাজের অবরোধ প্রথার অবসান। শিক্ষা ব্যতীত নারীজাতির অগ্রগতি ও মুক্তি সম্ভব নয়, এ সত্য অনুধাবন করেই তিনি নারীশিক্ষা প্রসারের কাজে ব্রতী হন। নারীদের তিনি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন মানুষ হিসেবে এবং সমাজের অর্ধেক হিসেবে নারীর মর্যাদার স্বীকৃতির লক্ষ্যেই পরিচালিত হয় তাঁর সমগ্র প্রয়াস। তাঁর মধ্যে ছিল একজন যোগ্য শিক্ষকের প্রজ্ঞা, সমাজসংস্কারকের অন্তর্দৃষ্টি এবং মানবতাবাদীর নির্মল চেতনা।

বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের ইতিহাসে বেগম রোকেয়ার অবদান চিরঅম্লান। মুসলমান মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং তাদের অধিকার আদায়ের জন্য ১৯১৬ সালে বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠা করেন আঞ্জুমানে খাওয়াতীনে ইসলাম  বা মুসলিম মহিলা সমিতি। তাঁর জীবনব্যাপী সাধনার অন্যতম ক্ষেত্র এই মহিলা সমিতি। এ সমিতির ইতিহাসের সঙ্গে রোকেয়ার সংগ্রামী কর্মজীবনের কাহিনী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মুসলিম মহিলা সমিতি থেকে বহু বিধবা নারী অর্থ সাহায্য পেয়েছে, বহু দরিদ্র মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছে, অসংখ্য অভাবী মেয়ে সমিতির অর্থে শিক্ষালাভ করেছে, সমাজ-পরিত্যক্ত অসহায় অনাথ শিশুরা আশ্রয় ও সাহায্য পেয়েছে। শুধু তাই নয়, কলকাতার মুসলমান নারী সমাজের ক্রমোন্নতির ইতিহাসে এই সমিতির উলে­খযোগ্য অবদান ছিল।

লোকচক্ষুর অন্তরালে এই সমিতি মুসলমান নারীদের কল্যাণে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেছে। সমিতিতে যোগদানের জন্য রোকেয়া নানা অপবাদ মাথা পেতে নিয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে মহিলাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। এই সমিতি ভারতবর্ষের শাসন-সংস্কারে নারীর রাজনৈতিক অধিকার সম্বন্ধে মতামত তুলে ধরে। নারীদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য এই সমিতি শিল্প প্রতিষ্ঠানও স্থাপন করে। নারীর শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার নেতৃত্বে আঞ্জুমানে খাওয়াতীনে ইসলাম সে যুগে এক বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে যেসব মহিলা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই বেগম রোকেয়ার স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভ করে তাঁরই আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। বেগম রোকেয়াকে বাংলার জনগণ আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

About farzana tasnim

Check Also

কথা বলবার সময় আমরা ‘অ্যা’, ‘উম’ এসব উচ্চারণ করি কেন?

কথা বলবার সময় আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে ‘অ্যা’, ‘উম’ ইত্যাদি আওয়াজ নিঃসরণ করে থাকি। এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *