আটলান্টিসের কথা আপনাদের মনে আছে তো? সেই যে জলের নিচে কল্পিত এক জগত, জ্ঞানে দীক্ষায় প্রাচুর্যে যাদের ধারণা করা হয় পৃথিবীর থেকেও অনেক এগিয়ে ছিল? আটলান্টিসের খোঁজ এখনো পাওয়া যায় নি তবে আটলান্টিসের মতই একটি অসাধারণ আবিষ্কার করতে সমর্থ হয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা।
কয়েকদিন আগে তুরস্কের লেক ভ্যান পানির নিচে একটি দূর্গসদৃশ একটি নির্মাণ পাওয়া যায়, যার থেকে ধারণা করা হয় যে তুরস্কের মধ্যযুগের নানা রহস্য এবং না পাওয়া প্রশ্নের জবাব দিতে সমর্থ হবে এটি। খ্রিস্টের জন্মের ১৪৫০ বছর সময় থেকে ৪৭৬ বছরের মাঝে এই দূর্গটি তৈরি করা হয়েছিল। তবে এই আবিষ্কার কিন্তু একেবারে নতুন নয়। বিভিন্ন রিপোর্ট ও সূত্রমতে বলা হচ্ছিল যে লেক ভ্যানের নিচে এই দূর্গ রয়েছে। তবে ১৯৫০ ও ৬০’এর সময়ে এসে এই ধারণা একেবারে পাকাপোক্ত হয়।
কিছু কিছু সূত্রানুসারে বলা হয় যে এই দূর্গের যে দেয়ালটি তৈরি করা হয়েছিল সে দেয়ালটি অনেক প্রাচীন এবং খ্রিস্টের জন্মের ১০০০ বছর পূর্বে এই দেয়ালটি তৈরি করা হয়। প্রাচীন ‘রুসা’ নামক এক রাজা, যিনি ‘হালদি’ নামক এক দেবতার উপাসনা করতেন বা ভক্ত ছিলেন, তিনি এই দেয়াল নির্মাণ করেন।
গত দশ বছর ধরে তাহসিন সিলানের একটি দল লেক ভ্যানের নিচে এই দূর্গের খোঁজ শুরু করেন। ১৯১৫ সালের দিকে লেক ভ্যানের এই অঞ্চলে এমন কিছু মাইক্রোবায়ালিটস পাওয়া যায়, যাদের ধারণা করা হয় যে পুরনো বাড়ি কিংবা প্রাচীন স্থাপনার গায়ে শত শত বছর ধরে এরা আবাস গড়ে তুলেছে।
২০১৬ সালে, সিলান তার একটি ছোট দল নিয়ে অভিযান চালান। আডিলসিভাজ নামক নৌঘাটের কাছাকাছি জায়গায় এসে তিনি একটি দেয়ালের অংশ খুঁজে পান। তখন তার সাথে কোন প্রত্নতত্ত্ববিদ ছিলেন না।
সিলানের তথ্যানুসারে এই দূর্গটি প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা এবং শক্ত কাঠামো দিয়ে তৈরি। আজ থেকে ৩০০০ বছর পূর্বে উরারতিয়ান নামক এক জাতি তুরস্কের বিভিন্ন অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করেছিল। প্রথম দিকে এই দূর্গ পাথর কেটে তৈরি করা হয়েছিল। উরারতু অধিবাসীদের মাঝে সিংহের প্রতীক দিয়ে কোন স্থাপনা তৈরি করার প্রবণতা বেশ প্রকটভাবেই ছিল।
মিডিয়াকে দেয়া তথ্যানুযায়ী এবার সিলানের দলের সাথে তুরস্কের ইতিহাস এবং নানা দিক সম্পর্কে জানতে পারঙ্গম, এমন প্রত্নতাত্ত্বিকদের নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তাদের ভাষ্যমতে, এই দূর্গটি পাথর কুঁদে তৈরি করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে এরমাঝে নানা ধরণের পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। দূর্গটি হয়ত উরারতিয়ানদেরই হতে পারে তবে এ সম্পর্কে মিডিয়াকে এখনই কিছু বলতে চান না সিলান। তিনি এটি নিয়ে আরো গবেষণা করতে চান।
(ফিচারটি তৈরি করতে সাহায্য করেছে এই সাইট)