কিছুদিন ধরেই মাকসুদ খানের শরীরটা ভালো ঠেকছে না। থেকে থেকেই পেট ব্যথা করছে। কাজকর্ম করতে গেলে কিংবা কিছু খেতে গেলে পেট চিন চিন ব্যথা করে উঠছে। অবশেষে তাকে নেয়া হল ডাক্তারের কাছে। এন্ডোসকপি করবার পর চমকে উঠলেন ডাক্তাররা। তবে তার আগে মাকসুদ খানের সম্পর্কে জেনে আসি।
৩৫ বছর বয়স্ক মাকসুদ খান বাস করেন ভারতের মধ্যপ্রদেশে। আর দশটা সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করতেন তিনি। তবে তার অবিশ্বাস্য ধরণের একটি অভ্যাস ছিল, যেটি তার পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবরাও জানতেন না। হাসপাতালে নেবার পরপরই চমকে ওঠেন তারা, হয়ে পড়েন ভীত।
মধ্য প্রদেশের সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রিয়াংক শর্মা জানান, তার এত বছরের ক্যারিয়ারে এই ধরণের রোগী প্রথম দেখলেন। কি দেখলেন তিনি?
এন্ডোসকপি করবার পর মাকসুদের পেটে পাওয়া গিয়েছে ২৬৩টি কয়েন, ১০০টি নখের টুকরো, ডজনের অধিক শেভিং ব্লেড, ভাঙা কাঁচের টুকরো, ছয় ইঞ্চি লম্বা লোহার খন্ড ইত্যাদি আরো নানা ধরণের টুকিটাকি ধাতব বস্তু। এদের মধ্যে নাটবল্টুও রয়েছে। ডাক্তাররা বলেন, এই ধরণের জিনিস বের করবার পর তার ওজন পরিমাপ করলে দেখা যায়, মাকসুদের পেটে প্রায় ১৫ পাউন্ড (৭কেজি) ধাতব পদার্থ এতোদিন ধরে জমা ছিল।
ডাক্তার প্রিয়াংক শর্মা জানান,
“রোগীর পেটে ধাতব এই পদার্থগুলো দেখে আমরা চমকে উঠি। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম তার হয়ত ফুড পয়জনিং হয়েছে, কিন্তু এন্ডোসকপি করবার পর সবাই রীতিমত চমকে উঠেছি।”
মাকসুদ খানের ধাতব পদার্থ গিলে ফেলবার মত একটি মানসিক রোগ রয়েছে এবং এতোদিন ধরে তার পরিবারের কোন সদস্য কিংবা বন্ধুবান্ধব কেউই তার রোগ সম্পর্কে জানত না।
গত মাসে ফ্রান্সে ঠিক এমন একজন রোগী পাওয়া গিয়েছিল যার পেটে প্রায় ১০০ টুকরো ধাতব পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। তার মানসিক অবস্থা এত খারাপ ছিল যে শেষপর্যন্ত তাকে সাইকোসিস রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়।
গত বছর, ২০১৬ সালে ভারতে ঠিক এই ধরণের একজন রোগী পাওয়া গিয়েছিল। ছোট ছোট ধাতব ছুরি গিলে ফেলবার অদ্ভুত অভ্যাস ছিল তার। এই ধরণের রোগকে ‘পিকা’ বলা হয়ে থাকে, যার অর্থ হচ্ছে, এমন কোন বস্তু খেয়ে ফেলা যেটি খাদ্যদ্রব্য নয়। অন্তত এক মাস ভক্ষণ করবার একটি সংক্রমণ থাকতে হবে রোগীর মাঝে।
(ফিচারটি তৈরি করতে সাহায্য করেছে এই সাইট)