বারী সিদ্দিকী: বিদায় বাংলাদেশের ফোক সম্রাট – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ফিচার / বারী সিদ্দিকী: বিদায় বাংলাদেশের ফোক সম্রাট

বারী সিদ্দিকী: বিদায় বাংলাদেশের ফোক সম্রাট

‘শুয়া চান পাখি আমার শুয়া চান পাখি 

আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি

তুমি আমি জনম ভরা ছিলাম মাখামাখি

আইজ কেন হইলে নীরব মেল দুটি আঁখি…’

আঁখি দুটো আর কখনো মেলবেন না তিনি। সারা বাংলাদেশকে সুরের মূর্ছনায় মাতোয়ারা করে রাখা লোকটি নীরব হয়ে গেছেন চিরতরের জন্য। আর কখনো তাঁর কণ্ঠে শুনতে পাওয়া যাবে না, ‘আমি একটা জিন্দা লাশ’। বারী সিদ্দিকী যে সত্যিই আর জীবিত নেই!

বহুদিন ধরেই কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। আজ সকালে ৬৩ বছর বয়সে চিরতরের মত সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। চলে গেলেন সকলের প্রিয়, বাংলাদেশের এক ফোক সম্রাট, বারী সিদ্দিকী।

১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনার কাইলাটি ইউনিয়নের ফচিকা গ্রামে জন্ম বারী সিদ্দিকীর। চার ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট বারী সিদ্দিকীর প্রথম গান শোনা মায়ের মুখে, ‘শাশুড়িরে কইয়ো গিয়া’। সেই যে হৃদয়ে সুরের বসতি হল তাঁর, সেই বসতি অটুট ছিল আমৃত্যু।

তবে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পরিচিত হওয়ার আগেও বারী সিদ্দিকী বিখ্যাত তাঁর বাঁশি বাজানোর প্রতিভা ও দক্ষতার জন্য। তাঁর বয়স যখন পাঁচ বছর, বড় ভাইয়ের বাঁশি বাজানো দেখেই প্রথম বাঁশির প্রতি আগ্রহ জাগে বারী সিদ্দিকীর। সেই আগ্রহ থেকেই নব্বইয়ের দশকে ভারতের পুনেতে গিয়ে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে বাঁশিতে তালিম নেন। তারপর দেশে ফিরে লোকগীতির সাথে ক্লাসিক সঙ্গীতের সম্মেলনে গান গাওয়া শুরু করেন।

হাইস্কুলে পড়ার সময় থেকেই নেত্রকোনা জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে পদ্ধতিগত সঙ্গীতের তালিম নেয়া শুরু করেন তিনি। সঙ্গীতে তাঁর প্রথম ওস্তাদ শ্রী গোপাল দত্ত। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালের দিকে ঢাকায় শুদ্ধ সঙ্গীত প্রসারের এক অনুষ্ঠানে পরিচয় হয় ওস্তাদ আমিনুর রহমানের কাছে। ভারতবর্ষের বিখ্যাত বংশীবাদক পান্নালাল ঘোষের শিষ্য ছিলেন ওস্তাদ আমিনুর রহমান। এই আমিনুর রহমানের বাড়িতেই বাঁশি শিক্ষার যাত্রা শুরু বারী সিদ্দিকীর। ওস্তাদ আমিনুর রহমানের কল্যাণেই তিনি ওস্তাদ তাগাল ব্রাদার্স, পণ্ডিত দেবেন্দ্র মুৎসুদ্দী, ওস্তাদ আয়েফ আলী খান মিনসারীদের সংস্পর্শে আসতে পেরেছিলেন।

শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে বাংলাদেশ রেডিও টেলিভিশন সহ সম্মিলিত একটি যন্ত্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেন। এর পরপরই সরকারী সহযোগিতায় দক্ষিণ এশীয় সার্ক ফেস্টিভালে বাঁশি বাজাতে যান বারী সিদ্দিকী। ১৯৯৯ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব বাঁশি সম্মেলনে উপমহাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

নেত্রকোনা আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও নেত্রকোনা সরকারি কলেজ থেকে পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতক পাশ করেন বারী সিদ্দিকী। এর পরপরই সঙ্গীত নিয়ে পুরোপুরি ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তবে বারী সিদ্দিকীর সঙ্গীত জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সাথে তাঁর পরিচয়।

রাজধানীর একটি স্টুডিওতে গানের কাজ করছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সেখানে বংশীবাদক হিসেবে ছিলেন বারী সিদ্দিকী। রেকর্ডিংয়ের মাঝে হঠাৎ লোডশেডিং হলে সহশিল্পীরা বারী সিদ্দিকীকে অনুরোধ করেন গান শুনানোর জন্য। সেদিন বারী সিদ্দিকীর গাওয়া বিচ্ছেদের গানগুলো গুণমুগ্ধ হয়ে শুনেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ।

এরপর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে বারী সিদ্দিকীকে আমন্ত্রণ জানানো হলে ওই অনুষ্ঠানে গুণে গুণে ৩৫টি গান গেয়েছিলেন তিনি! মূলত এরপরেই হুমায়ূন আহমেদের ছবি ‘শ্রাবণ মেঘের দিনে’তে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় তাঁকে। আর সেই সিনেমায় তাঁর গাওয়া ‘শুয়া চান পাখি’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজ’, ‘পূবালী বাতাসে’ গানগুলো তাঁকে পৌঁছে দেয় জনপ্রিয়তার শিখরে। মানুষ পায় ফোক গানের অন্যরকম এক প্রতিভাকে।

বারী সিদ্দিকীর জনপ্রিয় অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অন্তর জ্বালা’, ‘দুঃখ রইল মনে’, ‘ভালোবাসার বসতবাড়ি’ ইত্যাদি। এছাড়া গান গেয়েছেন বিভিন্ন চলচ্চিত্রেও। গণমানুষের শিল্পী, মানুষের সাথে মিশে যাওয়া সকলের প্রিয় সেই বারী সিদ্দিকী আজ আর নেই আমাদের মাঝে। পরপারে ভালো থাকবেন প্রিয় বারী সিদ্দিকী!

 

 

 

 

About Sanjoy Basak Partha

Check Also

কথা বলবার সময় আমরা ‘অ্যা’, ‘উম’ এসব উচ্চারণ করি কেন?

কথা বলবার সময় আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে ‘অ্যা’, ‘উম’ ইত্যাদি আওয়াজ নিঃসরণ করে থাকি। এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *