ছবিতে ফুটে ওঠে নানা গল্প, নানা কাব্য, নানা মুহুর্ত। একটি ছবিতে প্রকাশ করা যায় অনুভূতি আবার নানা না বলা কথাও ফুটে ওঠে ছবিতে। কিন্তু যদি এমন হয় ছবিতে কি দেখলেন, তাই বোঝা না যায়? অমীমাংসিত এই ছবিগুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে, রয়েছে নানা মতবিরোধ। কেউ কেউ বলেন ছবিগুলো সত্য, আবার কেউবা ফুঁৎকারে উড়িয়ে দেন। যাহ! এমনটিও হয় নাকি? এমনই কয়েকটি অমীমাংসিত ছবি নিয়ে এবারের আয়োজনঃ
১) ছবির মানুষটি কেঃ
ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন খুবই নির্দোষ, নিরীহ চেহারার এক ব্যক্তিকে। ১৯৪১ সালে কানাডার সাউথ ফর্কস ব্রিজের উদ্বোধনের সময় তোলা একটি ছবিতে এই ব্যক্তিকে দেখা যায়। সমস্যা হচ্ছে, ১৯৪১ সালে এই মানুষটির যে ফ্যাশন সচেতনতা দেখা যাচ্ছে, তা বেমানান এবং ঐ সময়ে এই ধরণের জামাকাপড় পড়বার প্রচলনই তৈরি হয় নি। কেউ কেউ বলে থাকেন সময় পরিভ্রমণের একটি অন্যতম দলিল এই ছবিটি।
২) সাগরদানোঃ
১৯৬৪ সালে ফ্রেঞ্চ আলোকচিত্রী রবার্ট সেরেচ অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের উপকূলে একটি নৌ-বিহারে অংশ নেন। সেখানে তিনি দেখা পান অদ্ভুত এই সাগরদানোর। এটির বিশাল শরীর দেখে ভয়ে চমকে যেতে হয়। সেরেচ তার বয়ানে বলেছেন,
“আমি দেখলাম প্রকান্ড একটি ছায়া চলে যাচ্ছে আমার নৌকার নিচ দিয়ে!”
সর্পাকৃতির এই প্রাণীটি সম্পর্কে অনেকে অনেক কথা বলেছেন কিন্তু এটি আসলে কি জীব, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে।
৩) একটি পারিবারিক ভূতঃ
১৯৬০ এর দশকের কথা। টেক্সাসে বাড়ি পরিবর্তন করবার পর কুপার পরিবারের সদস্যরা একটি পারিবারিক ছবি তোলেন। ছবিটি তোলার পর যখন তা হাতে নিয়ে দেখা হয়, তখন দেখা যায় একটি ছায়া সিলিং থেকে ঝুলে আছে এবং এটি ছবিতেও দৃশ্যমান। কেউ কেউ এটিকে অতৃপ্ত আত্মা বলেন, কেউ কেউ বলেন ফটোশপের কারসাজি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি ছবিটি সম্পর্কে। আরেকটি কথা হচ্ছে, যখন এই ছবিটি তোলা হয়েছে তখন ফটোশপের কোন অস্তিত্বই ছিল না!
৪) ছবিতে ভিনগ্রহের আগন্তুকঃ
এই ছবির পটভূমি ১৯৬৪ সাল। জিম টেম্পলটন চড়ুইভাতিতে তার কন্যার সাথে একটি চমৎকার, মনোরম খোলা মাঠে যান। সেখানে মেয়ের একটি ছবিও তোলা হয়। কিন্তু ছবিটি ডেভেলপ হবার পর দেখা গেল, তার মেয়ের পেছনে অদ্ভুত পোষাক পরে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে। তার পরনের পোষাক একদম সাধারণ মানুষের মত নয়। অনেকে এটিকে বলেন ভিনগ্রহের আগন্তুক, আবার অনেকে বলেন এটি একটি ক্যামেরা ট্রিক। কিন্তু কোডাক কর্তৃপক্ষ স্বয়ং জানিয়েছে, এই ছবিতে কোন ধরণের কারসাজি করা হয় নি। তাছাড়া পরবর্তীতে ছবিটির সম্পর্কে নানা পরীক্ষায় জানা যায় যে এটিতে আসলেই কোন ধরণের কারসাজি নেই। তাহলে ছবির মানুষটি কি আসলেই এই গ্রহের কেউ নয়? নাকি একজন সময় পরিব্রাজক? ২০০৮ সালে জিম টেম্পলটন এই বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকারও প্রদান করেন।
৫) মাতা মেরীর ছবিতে উড়ন্ত যানঃ
বলা হয়ে থাকে, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি হচ্ছেন একজন যুগের থেকে শত বছর আগে এগিয়ে থাকা একজন মানুষ। তার আঁকা ছবিতে যে রহস্য লুকিয়ে আছে তা মীমাংসা করা এখনো সম্ভব হয় নি। ভিঞ্চির আঁকা এই ছবিটি লক্ষ্য করলে অবাক হয়ে যেতে হয়। মাতা মেরীর মাথার খানিক ডানদিকে আকাশে একটি বস্তু দেখা যাচ্ছে। বর্তমানকালের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় যখন আমরা ছবিটিকে জুম করি, তখন হতবাক হয়ে যেতে হয়।
এটি একটি ফ্লাইং সসার বা উড়ন্ত যান সদৃশ বস্তু এবং এর চারপাশে রয়েছে প্রজ্জ্বলিত শিখা। এর একটু নিচে তাকালেই দেখা যায় একজন ব্যক্তি তার সাথে একটি কুকুরকে নিয়ে নিবিষ্টমনে ওপরের দিকে তাকিয়ে আছে। ছবিটি আমাদের কি সংকেত দেয়? মীমাংসা আজো সম্ভব হয় নি!