একবারের জন্যে হলেও কোকাকোলার ভোক্তা হননি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া হয়তো মুশকিলই হবে। আমেরিকান এই কোমল পানীয় যে বিশ্বজুড়েই সবচেয়ে জনপ্রিয় কোমল পানীয়! তবে এর সম্পর্কে এই চমকপ্রদ তথ্যগুলো হয়তো আপনার অজানাই ছিল এতদিন। আজ প্রিয়লেখার পাতায় দেখে নিন কোকাকোলা সম্পর্কে চমকপ্রদ ও অজানা যত তথ্য।
- আজকে কোমল পানীয় হিসেবে বিক্রি হচ্ছে যেটি, সেই কোকাকোলার উৎপত্তি আসলে হয়েছিল ঔষধ হিসেবে! ১৮৮৬ সালে আমেরিকার আটলান্টায় ডাঃ জন এস. পেম্বার্টন ঔষধ হিসেবে কোকাকোলার ব্যবহার শুরু করেন।
- কোকাকোলায় একসময় মাদকদ্রব্য হিসেবে সুপরিচিত কোকেইনের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল। কোকেইন তৈরি করা হয় যেই কোকো পাতা থেকে, সেই পাতাই ছিল কোকাকোলার অন্যতম প্রধান উপকরণগুলোর একটি। পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে কোকাকোলার উপকরণ সামগ্রী থেকে বাদ দেয়া হয় এটি।
- পৃথিবীর মাত্র দুইটি দেশে এটি বিক্রি হয় না। জানেন কোন সে দুটো দেশ? কিউবা এবং উত্তর কোরিয়া।
- কেবল পানীয় হিসেবেই নয়, ক্লিনার হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হতে পারে! কোকাকোলায় খুবই শক্তিশালী এসিডের উপস্থিতি বিদ্যমান, যে কারণে এটি খুব ভালো ক্লিনার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
- কোকাকোলা কোম্পানি যে শুধু কোকই বিক্রি করে, তা কিন্তু নয়! আরও অনেক ধরণের পণ্য বিক্রি করে তারা। সংখ্যাটা জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন, প্রায় ৩৯০০ বেভারেজ এর মালিকানা এই কোম্পানির অধীনে! এমনকি আপনি যে স্প্রাইট, ফান্টা খান, ওগুলোও এই কোম্পানিরই পণ্য।
- কোকাকোলা কোম্পানির মোট ব্র্যান্ড ভ্যালু ৭৪ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যা এটিকে বানিয়েছে বিশ্বের তৃতীয় দামী ব্র্যান্ড।
- ঘানা থেকে শুরু করে নেপাল, বিশ্বের যে প্রান্তেই যান না কেন আপনি, বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি যে শব্দটির অর্থ বুঝে, সেটি হল ‘ওকে’। দ্বিতীয় কোনটি জানেন? কোকাকোলা! এতটাই বাজার দখল করে রেখেছে এই ব্র্যান্ডটি।
- একটি ৩৫৫ মি.লি.র কোকাকোলার ক্যানে ১০ চা-চামচ সমপরিমাণ চিনি থাকে, যা একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির সারাদিনের প্রয়োজনীয় চিনির প্রায় সমান!
- কোকাকোলার প্রথম সার্ভিংয়ের বিক্রয়মূল্য ছিল প্রতি গ্লাস ৫ সেন্ট।
- ডায়েট কোকের উদ্ভব ঘটে ১৯৮২ তে। এরপর থেকে এটিই হয়ে যায় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ডায়েট ড্রিঙ্ক।
- এখনো পর্যন্ত যে পরিমাণ কোকাকোলা তৈরি হয়েছে, তা দিয়ে একটি ৩০ কিলোমিটার লম্বা, ১৫ কিলোমিটার চওড়া ও ৬৫৬ ফুট গভীর চৌবাচ্চা পূর্ণ করা যাবে! হাফ বিলিয়ন লোক সেই চৌবাচ্চায় আরামসে সাঁতারও কাটতে পারবে!
- এত জনপ্রিয় এই কোকাকোলার রেসিপি খুবই গোপনে এবং উচ্চ নিরাপত্তায় সংরক্ষিত আছে আটলান্টার কোকাকোলা জাদুঘরে। বিশ্বের অন্যতম টপ সিক্রেট এই রেসিপি।
- কোকাকোলা একবার একটা প্রচারণা চালিয়েছিল, যেখানে তারা বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করছিল যেন তারা কাস্টমারদের এমনভাবে প্রভাবিত করে যাতে করে তারা খাবার পানি অর্ডার না দিয়ে কোকাকোলা অর্ডার দেয় বেশি করে!
- ১৯৮৫ সালের ১২ জুলাই, প্রথম কোমল পানীয় হিসেবে ‘কোকাকোলা স্পেস ক্যান’ নভোযান ‘চ্যালেঞ্জার’ এ বসেই খেয়ে দেখেন নভোচারীরা!
- বিশ্বজুড়ে একজন ব্যক্তি গড়ে অন্তত চারদিনে একবার কোকাকোলা খেয়ে থাকেন।
- কোকাকোলার বোতলের ডিজাইন বানানো হয়েছিল কোকো বীজের আকৃতি অনুকরণ করে। পরবর্তীতে এতে কোকো ব্যবহার বাদ দেয়া হলেও বোতলের আকৃতি আর বদলানো হয়নি।
- ১ লিটার কোকাকোলা প্রস্তুত করতে ২.৭ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। শুধু মাত্র ২০০৪ সালেই কোকাকোলার প্রস্তুত করতে ব্যবহৃত হয়েছিল ২৮৩ বিলিয়ন লিটার পানি!
- ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ নামে পরিচিত অলিম্পিকের প্রথম স্পন্সর ছিল কোকাকোলা। ১৯২৮ আমস্টারডাম অলিম্পিকে স্পন্সর হয়েছিল কোকাকোলা।
- ফেসবুকে কোকাকোলার অ্যাক্টিভ ফ্যানের সংখ্যা প্রায় ১০৫ মিলিয়ন, সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড কোকাকোলা।
- প্রতিষ্ঠার দুই বছর পরে, ১৮৮৮ সালে আমেরিকান ব্যবসায়ী আসা গ্রিগস ক্যান্ডলার মাত্র ৫৫০ ডলারের বিনিময়ে কোকাকোলা কোম্পানিটি কিনে নেন এর প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জন এস. পেম্বার্টনের থেকে।
লিস্ট ২৫ অবলম্বনে