গতকাল ছিল ‘বিশ্ব ডিম দিবস’। ডিমের উপকারিতা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে ১৯৯৬ সালে ভিয়েনা সম্মেলনে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উচ্চমাত্রার প্রোটিন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ডি, বি৬, বি১২, জিঙ্ক, আয়রন, কপার সহ অসংখ্য উপকারী উপাদান মিলে ডিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য। তবে এই ডিম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে ভ্রান্ত কিছু ধারণা। তেমনি ৫ টি ধারণা নিয়ে আজকের প্রিয়লেখার আয়োজন।
ভ্রান্ত ধারণা ১ঃ ডিম রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে
ফ্যাক্ট: প্রোটিনের একটি অন্যতম প্রধান উৎস হল ডিম। কোন একটি খাদ্য মানুষের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রায় প্রভাব ফেলবে কিনা, তা নির্ভর করে ওই খাদ্যের স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট লেভেলের উপর। ব্যাঙ্গালোরের একজন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডঃ অঞ্জু সুদের ভাষ্যমতে, ‘ডিমের কোন অংশটা খাবেন আর কোনটা খাবেন না, সেটা মানুষ ভেদে নির্ভর করতে পারে। ডিমের কুসুম শরীরের লিপিড প্রোফাইল বৃদ্ধি করে, সেক্ষেত্রে যাদের সমস্যা তারা কেবল ডিমের সাদা অংশটা নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। দুটো ডিমের সাদা অংশ খাওয়া মানে আপনার সারাদিনের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যাওয়া’।
ভ্রান্ত ধারণা ২: খাওয়ার আগে ডিম ধুয়ে নিলে ডিমে উপস্থিত স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া দূর হয়
ফ্যাক্ট: স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া ডিমের আবরণে না, বরং ডিমের ভেতরে থাকে। সুতরাং খাওয়ার আগে ডিম ধৌত করায় ব্যাকটেরিয়া দূর হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
ভ্রান্ত ধারণা ৩: দিনে একাধিক ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর
ফ্যাক্ট: বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ সবল মানুষ দিনে ৩ টি ডিম কোন প্রকার চিন্তা ছাড়াই খেতে পারেন। পুষ্টিবিদ রুপালী দত্তের ভাষ্যমতে, যারা মাছ মাংস খান না তাদের প্রোটিনের একটা বড় চাহিদা মিটাতে পারেন ডিম দিয়ে। তবে আপনি যদি নন-ভেজ হন, সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে রেড মীট খান, তাহলে সেদিন বেশি ডিম না খাওয়াি আপনার পক্ষে মঙ্গলজনক।
ভ্রান্ত ধারণা ৪: সাদা নাকি বাদামী ডিম, কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর
ফ্যাক্টঃ ডিমের রঙয়ের উপর ডিমের পুষ্টিগুণ নির্ভর করে না। মুরগি যে রঞ্জক পদার্থ উৎপাদন করে তার উপরে নির্ভর করে ডিমের রং কিরকম হবে। তাই আপনি সাদা বা বাদামী যে ডিমই খাননা কেন , পুষ্টিগুণের কোন তারতম্য হবে না।
ভ্রান্ত ধারণা ৫: ডিম খাওয়ার পর দুধ খেতে হয় না
ফ্যাক্ট: পুষ্টিবিদ মেহের রাজপুতের ভাষ্যমতে, ‘ডিম প্রোটিন, অ্যামিনো এসিড ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের খুব সুন্দর উৎস। দুধে থাকে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম। রান্না করা ডিমের সাথে দুধ খেলে সেটা শরীরে গৃহীত প্রোটিনের একটা ব্যালেন্স করে। তবে আপনি যদি কাঁচা কিংবা রান্না না করা ডিমের সাথে দুধ খান, সেক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হওয়া, খাদ্যে বিষক্রিয়া কিংবা বায়োটিন এর অভাব দেখা যেতে পারে।
এনডিটিভি অবলম্বনে