নোবেল পুরস্কার! সারা বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মানের একটি পুরস্কার। এটি শুধুমাত্র পুরস্কারই নয়, বরং এই পুরস্কার হচ্ছে সারা বছর যারা বিজ্ঞান, সাহিত্য, অর্থনীতি ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অভূতপূর্ব গবেষণা ও কর্মের নিদর্শন রেখেছেন, তাদের জন্য একটি স্বীকৃতি স্বরুপ। সারা বিশ্ব উন্মুখ হয়ে থাকে নোবেল বিজয়ী কারা হল, তাদের খবর জানার জন্য। এই তো কয়েকদিন আগেই ঘোষণা করা হল এ বছর, অর্থাৎ, ২০১৭ সালে কারা কোন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
প্রতি বছর বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে অভূতপূর্ব অবদান রাখবার জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে। যারা এ বিষয়ে খবরাখবর রাখেন তারা স্বভাবতই উন্মুখ হয়ে থাকেন যে বছরের অন্যতম সম্মানটি কার হাতে যাচ্ছে এবার।
আজ আপনাদের নোবেল পুরস্কার ও এর বিজয়ীদের সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য দেয়া হলঃ
১) যখন তারা ছিলেন কারাগারেঃ
নোবেল বিজয়ীরা সবসময় যে হাসিমুখে তাদের পুরস্কারটি হাতে নেন, তা কিন্তু নয়। বরং কেউ কেউ নিদারুণ কষ্টে থেকেও এই পুরষ্কারটি হাতে নিয়ে থাকেন।
তিনজন নোবেল বিজয়ী তাদের নোবেল পুরস্কারের খবর জানতে পেরেছিলেন কারাগারে থাকাকালীন সময়ে। এদের প্রত্যেকেই নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন শান্তি স্থাপনের জন্য।
তাদের তিনজন হলেন জার্মান সাংবাদিক কার্ল ভন অজিটস্কি (১৯৩৫ সাল), বার্মিজ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অং সান সু চি (১৯৯১ সাল) এবং চৈনিক মানবাধিকার কর্মী লিও জিয়াওবো (২০১০ সাল)।
২) মূল্য কতঃ
আপনার কি ধারণা? নোবেল পুরস্কারের অর্থ কত হতে পারে? জীবন আগে নাকি সম্মান আগে? ঠিক এমনই ঘতেছিল এক নোবেল বিজয়ীর ভাগ্যে। তিনি তার পদকটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন।
১৯৮৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী লিওন লেডারম্যান ২০১৫ সালে তার চিকিৎসার খরচ জোগানোর জন্য তার নোবেল পদকটি বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি যৌথভাবে মুওন নিউট্রিনো আবিষ্কার করেছিলেন।
তার পদকটি কে কিনে নেন তা জানা যায় নি তবে তিনি কতদামে এ পদকটি কিনেছিলেন তা জানা গিয়েছে। এর মূল্য ছিল ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার।
৩) পদকটি ফিরিয়ে দেয়া হলঃ
রাশিয়ান বিলিয়নেয়ার আলিশার উসমানভ ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে জীববিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসনের পদকটি কিনতে খরচ করেন।
জেমস ওয়াটসন ডি এন এ এর সর্পিল আকৃতি (ডাবল হেলিক্স) কেমন করে গঠিত হল, তা নিয়ে গবেষনা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে উসমানভ জেমসের পদকটি ফিরিয়ে দেন এবং তার টাকাও তিনি আর নেন নি। তিনি বলেন যে এই টাকা গবেষণার কাজে ব্যয় করা হলেই তিনি সবচাইতে খুশি হবেন।
৪) এয়ারপোর্টে শঙ্কাঃ
নোবেল বিজয়ীদের নিয়ে মাঝে মাঝে বেশ মজার ব্যপারও ঘটে থাকে কিন্তু। যেমন ঘটেছিল ব্রায়ান শ্মিটের ক্ষেত্রে।
২০১১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল বিজয়ী ব্রায়ান শ্মিট তার স্বর্ণের পদকটি এয়ারপোর্টের চেকিং থেকে বের করতে বেশ বেগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ব্রায়ান ডার্ক এনার্জির অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারার জন্য এই পদকে ভূষিত হন। তিনি বলেন, “আপনি যত বড় মাপের পদকপ্রাপ্ত হন না কে, এয়ারপোর্টে আপনার নিস্তার নেই।”
৫) আমার টাকা কোথায় গেলঃ
অ্যাডলফ হিটলার তিনজন জার্মান নোবেল বিজয়ীদের পুরস্কার গ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তারা হচ্ছেন- রিচার্ড কুন(রসায়নে), অ্যাডলফ বুটেনান্ট(রসায়নে) ও গেরহার্ড ডমাক(চিকিৎসাবিজ্ঞানে)।
পরবর্তীতে তারা তাদের পদক গ্রহণ করেন কিন্তু তাদের প্রাপ্য অর্থটি তারা আর পান নি।
এছাড়াও আরো মজার মজার ঘটনা রয়েছে নোবেল পুরস্কার ও তাদের বিজয়ীদের ঘিরে। আজ এ পর্যন্তই।
প্রিয়লেখার সাথেই থাকুন, সকলের প্রিয় হয়ে থাকুন।