বলিউডের নামীদামি সব পরিচালক তাঁর সাথে কাজ করতে মুখিয়ে থাকেন। বাজিগর, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে, বাদশাহ, কাল হো না হো, চাক দে ইন্ডিয়া, কুছ কুছ হোতা হ্যা, কাভি খুশি কাভি গাম, কয়লা, ওম শান্তি ওম, মাই নেইম ইজ খান, রাব নে বানা দে জোড়ি, দেবদাস, বীর-জারা, ডন, চেন্নাই এক্সপ্রেস এর মত অসংখ্য ব্লকবাস্টার মুভি উপহার দিয়েছেন তিনি। কিন্তু জানেন কি, শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারে আরও এমন দশটি ব্লকবাস্টার মুভি যোগ হতে পারত, যদি না তিনি সেগুলো ফিরিয়ে দিতেন! চলুন জেনে নিন কোন সেই দশটি মুভি।
কাহো না পেয়ার হ্যায় (২০০০)
শাহরুখ খানকে মনে মনে একটা ধন্যবাদ দিতে পারেন হৃত্বিক রোশান। বিশ্বজুড়ে ৮০ কোটি রুপিরও বেশি উপার্জন করা ছবিটি দিয়েই প্রথম বলিউডের লাইমলাইটে আসেন হৃত্বিক রোশান। এই ছবির জন্যই একমাত্র অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ারে সেরা নায়ক ও সেরা অভিষিক্তের পুরস্কার জেতেন হৃত্বিক। অথচ ছবিটি যোগ অন্য মাত্রা যোগ করতে পারত শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারে। পরিচালক রাকেশ রোশান প্রথমে নায়কের চরিত্রে শাহরুখ খানকেই অফার করেছিলেন। শাহরুখ মানা করে দেয়ার পরে নায়কের চরিত্রে নেন ছেলে হৃত্বিককে। আর এরপরই হৃত্বিকের বাজিমাত!
লাগান (২০০১)
মুভিটা প্রথমে আমির খানকেই অফার করেছিলেন পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকার। কিন্তু প্রযোজনা করতে চান না, এই বলে মুভিটা ফিরিয়ে দেন আমির। এরপর শাহরুখের কাছে অফার নিয়ে যান আশুতোষ। কিন্তু ছবিটির সাফল্য নিয়ে সন্দিহান হওয়ায় ফিরিয়ে দেন শাহরুখ। এরপর আবার আমিরকে রাজি করান আশুতোষ, আর বাকিটা ইতিহাস! অস্কারের জন্য মনোনীত হওয়া প্রথম বলিউডি ফিল্ম হয়ে যায় লাগান।
যোধা আকবর (২০০৮)
‘স্বদেশ’ ছবিটির বক্সঅফিস ব্যর্থতার পরেও যোধা আকবর ছবিটিতে আকবর চরিত্রে শাহরুখকেই চেয়েছিলেন পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকার। কিন্তু শুটিং প্লেস পছন্দ না হওয়ায়, এবং বাচ্চাদের সময় দেয়ার কথা বলে ছবিটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন কিং খান। এরপর আকবর চরিত্রে হৃত্বিককে কাস্ট করেন আশুতোষ, ঐশ্বরিয়ার সাথে মিলে দুর্দান্ত হিট মুভি উপহার দেন। মুভিটির জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও জেতেন হৃত্বিক।
মুন্নাভাই এমবিবিএস (২০০৩)
মুন্নাভাই এর চরিত্রে শাহরুখকে কল্পনা করতে পারছেন? পরিচালক রাজকুমার হিরানি কিন্তু পেরেছিলেন। কমেডি মুভি মুন্নাভাই এমবিবিএসের জন্য মুন্নাভাই চরিত্রে প্রথমে শাহরুখকেই ভেবেছিলেন হিরানি, আর জহির চরিত্রে ভেবেছিলেন সঞ্জয় দত্তকে। কিন্তু শাহরুখ মানা করে দেয়ার পরে মুন্নাভাই চরিত্রটি যায় সঞ্জয়ের কাছে, আর জহির চরিত্রে নেয়া হয় জিমি শার্গিলকে।
রাং দে বাসন্তী (২০০৬)
সবকিছু ঠিকঠাক মত চললে রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার রাং দে বাসন্তী মুভিতে শাহরুখ ও আমিরকে একসাথে দেখতে পেতেন দর্শকেরা। সোহা আলী খানের বিপরীতে মাধবন চরিত্রটির জন্য পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখই। কিন্তু দুটি কারণে মুভিটি করেননি শাহরুখ। প্রথমত, আমিরের পেছনে থেকে দ্বিতীয় প্রধান চরিত্র হিসেবে অভিনয় করতে চাননি তিনি। আর দ্বিতীয় কারণ, আমিরের চরিত্রটির তুলনায় তাঁর চরিত্রটি খুবই মামুলি লেগেছিল তাঁর কাছে। ১৫ মিনিটের একটি চরিত্রের জন্য কেউ তাঁকে অফার করেছেন, এটা জেনে নাকি যারপরনাই অবাক হয়েছিলেন এসআরকে!
থ্রি ইডিয়টস (২০০৯)
চেতন ভগতের ‘ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান’ বইয়ের উপর ভিত্তি করে বানানো থ্রি ইডিয়টস ভারতের ইতিহাসেরই অন্যতম ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র। প্রযোজক বিধু বিনোদ চোপড়ার দেয়া তথ্যমতে, আমির খানের করা রাঞ্চোর চরিত্রটি আগে শাহরুখকেই অফার করা হয়েছিল। কিন্তু শিডিউল ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে পারেননি তিনি। এরপর আমির করেন সেই চরিত্রটি। আর জিতে নেন কোটি কোটি ভক্তের ভালোবাসা।
রোবট (২০১০)
বিশ্বজুড়ে ৩৭৫ কোটি রুপি আয় করা মুভিটির জন্য রজনীকান্ত নন, তামিল পরিচালক শঙ্করের প্রথম পছন্দ ছিলেন কিং খান। তিনি ফিরিয়ে দিলে মুভিটি পরে দক্ষিণ সুপারস্টার রজনীকান্তকে নিয়েই বানান তিনি।
এক থা টাইগার (২০১২)
সালমান নন, কবির খানের ‘টাইগার’ হতে পারতেন শাহরুখ খানই। কবির খান প্রথমে এসআরকে কে অফার করেছিলেন। শাহরুখ স্ক্রিপ্ট পছন্দও করেছিলেন, কিন্তু যশ চোপড়ার ‘যাব তাক হ্যায় জান’ মুভির শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় এই মুভির জন্য শিডিউল বের করতে পারেননি কিং খান। এরপর সালমানকেই ক্যাটরিনার বিপরীতে কাস্ট করেন কবির।
স্লামডগ মিলিয়নিয়ার (২০০৯)
প্লট, সাউন্ডট্র্যাক ও পরিচালনার জন্য বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়ানো মুভিটিতে অনিল কাপুরের জায়গায় অভিনয় করতে পারতেন শাহরুখ খান। কিন্তু তিনি রাজি হননি।
তারে জামিন পার (২০০৭)
আরেকটি মুভি, যেটি শাহরুখ ছেড়ে দেয়ার পর আমির সেটিকে ব্লকবাস্টারে পরিণত করেছিলেন। নিজের প্রযোজনা ও পরিচালনায় তারে জামিন পার মুভিটিকে বক্স অফিসের হিটে পরিণত করেন আমির।
(টাইমস অফ ইন্ডিয়া অবলম্বনে)