১৯৯৮ সালে মুক্তি পায় গাই রিচির প্রথম চলচ্চিত্র লক, স্টক অ্যান্ড টু স্মোকিং ব্যারেলস। এই ছবির আশ্চর্য সাফল্যের পর গাই রিচি কাজ শুরু করেন তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র স্ন্যাচের। সেই খবর পেয়ে বিখ্যাত অভিনেতা ব্রাড পিট ছুটে যান পরিচালক গাই রিচির কাছে (প্রথম ছবি দেখে রীতিমত গাই রিচির ফ্যান তখন পিট)। আবদার করে বসেন ছবিতে তাকে একটি চরিত্র দেয়ার জন্যে। পিটের উচ্চারণভঙ্গির কথা চিন্তা করে তাকে এক জিপসি বক্সারের চরিত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন পরিচালক; শুনে প্রথমে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেন পিট। কেননা মাত্র কিছুদিন আগে ফাইট ক্লাব ছবিতে তিনি প্রায় একই ধরণের চরিত্রে অভিনয়ের কাজ শেষ করেছেন। তাই তিনি চাননি পরপর দুই ছবিতে বক্সারের চরিত্রে অভিনয় করার। অবশ্য গাই রিচির চলচ্চিত্রে অভিনয় করার প্রচণ্ড আগ্রহ থাকার কারণে পরে তিনি রাজি হয়ে যান চরিত্রটিতে অভিনয় করতে।
সিনেমার শুরু হয় তুর্কিশ এবং তার পার্টনার টমির সাথে পরিচয় পর্ব এবং একটি হিরা ডাকাতির দৃশ্য দিয়ে। ছবিটি সামনে আগায় তিনটা ধারায়- অসৎ বক্সিং-প্রমোটার তুর্কিশের ম্যাচ ফিক্সিং; রাশিয়ান মবের বিভিন্ন কার্যকলাপ এবং ছবির প্রথমে চুরি যাওয়া ৮৬ ক্যারেটের সেই হিরাকে কেন্দ্র করে। পেশাগত কারণে তুর্কিশকে পড়তে হয় বৃক-টপ নামক লন্ডনের এক পাওয়ারফুল ক্রাইম লর্ডের খপ্পরে। আর ছবির প্রথম দিকেই মিকি নামের এক জিপসির সাথে গোলমালের জড়িয়ে তুর্কিশ হারায় তার রেগুলার বক্সার গর্জিয়াছ জর্জকে। ম্যাচের সময় ঘনিয়ে আসায় এই জিপসিকে নিয়েই নামতে হয় বক্সিং রিংয়ে।
লন্ডনে নির্মিত ক্রাইম-কমেডি ধারার এই ছবিটির পরিচালনার পাশাপাশি এর চিত্রনাট্য রচনা করেছেন পরিচালক গাই রিচি নিজে। ছবির কাহিনী বাদেও আমার কাছে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং লেগেছে ছবিতে ব্র্যাড পিটের অদ্ভুত উচ্চারণ-ভঙ্গি। সাবটাইটেল ছাড়া তার কথা বোঝার কোন উপায় নেই। অবশ্য এই জন্যে দায়ী পরিচালক নিজে। আগের ছবির চরিত্রগুলোর কথা বলার ধরণ নিয়ে সমালোচনা শুনেই তিনি ঠিক করেন ব্র্যাড পিটের দুর্বোধ্য বাচনভঙ্গির।
রাশভারী কাহিনীর মধ্যে কমেডি মেশানো এই চলচ্চিত্রের সিনেমাটোগ্রাফি, চিত্রনাট্য ছিল অসাধারণ। ছবির ভায়োলেন্স, চরিত্রগুলোর পাগলাটে অভিনয় এবং প্রাণবন্ত সংলাপ সৃষ্টি করেছে এক ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্রের।
ছবিতে অভিনয় করেছেন: জেসন স্টাথাম, স্টিফেন গ্রাহাম, অ্যালেন ফোর্ড, ড্যানিস ফ্যারিনা, জেসন ফ্লেমিং, অ্যাডাম ফজার্টি, মাইক রেইড, ভিনি জোনস, রবি জি, ল্যানি জেমস, বেনিচিও দেল তরো এবং ব্র্যাড পিট।
স্ন্যাচ (২০০০)
আইএমডিবি রেটিং: ৮.৩
রটেনটোম্যাটোস: ৭৩% ফ্রেশ।
সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রে অভিনেতা পরচিতি:
তুর্কিশ, জেসন স্টাথাম।
একই পরিচালকের নির্মিত লক, স্টক অ্যান্ড টু স্মকিং ব্যারেলস দিয়ে তার চলচ্চিত্র জগতে হাতেখড়ি। আর স্ন্যাচে তার অভিনয় দেখে ঘুণাক্ষরেও টের পাওয়া যাবেনা যে এটা তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। তার চরিত্র ছিল অসাধু বক্সিং প্রমোটার। মাত্র দ্বিতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে স্ন্যাচে তার অভিনয় ছিল রিমার্কেবল। অনেকেরই প্রিয় অভিনেতার লিস্টে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি অনেক আগে। ৪৯ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ অভিনেতা একাধারে অভিনেতা, প্রোডিউসার, মার্শাল আর্টিস্ট এবং ফরমার ড্রাইভার। লক, স্টক অ্যান্ড টু স্মোকিং ব্যারেলস এবং স্ন্যাচ তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে, দ্য ট্রান্সপোর্টার ট্রিলজি, দ্য ইতালিয়ান জব, রিভলভার, দ্য ব্যাংক জব এবং দ্য এক্সপেনডেবলস।
মিকি ও-নেইল, ব্র্যাড পিট।
উইলিয়াম ব্রাডলি পিট। বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষদের একজন।
৫২ বছর বয়সী আমেরিকান অভিনেতার পর্দায় হাতেখড়ি অখ্যাত এক টিভি সিরিজ দিয়ে। তিনি আলোচনায় আসেন থেলমা এন্ড লুইজি এর মাধ্যমে। এ রিভার রান্স থ্রু ইট এবং ইন্টার্ভিউ উইদ দ্যা ভাম্পায়ার ছিল প্রধান চরিত্রে হাই বাজেট চলচ্চিত্র। এর পর থেকে তিনি আমাদের তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন লিজেন্ড অফ দ্যা ফল, সেভেন, টুয়েলভ মাংকি, মিট জো ব্ল্যাক, ফাইট ক্লাবের এর মত অসাধারণ সব চলচ্চিত্র। তার সবচে বাণিজ্যিক সফল চলচ্চিত্র হচ্ছে, ট্রয়, মিঃ এন্ড মিসেস স্মিথ এবং সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ওয়ার্ল্ড ওয়ার জি।