বৃষ্টির দিনে কাদার চোটে রাস্তায় হাঁটার কোন উপায় নেই। আর এখনকার ঢাকার জ্যামের কথা আলাদা করে বলাই বাহুল্য। ৯-৫টা অফিস শেষে হাটে গরু দেখতে যাওয়ার মতো উদ্যম যাদের থাকে তারা মহামানবই বটে! আর যাদের সেই শক্তিটুকু আর অবশিষ্ট থাকে না তাদের কথা মাথায় রেখে রাজধানী ঢাকা বাদেও দেশের বেশ কয়েকটি বিভাগীয় শহরে এসেছে অনলাইনে পশুর হাটের সুব্যবস্থা। আজকের আয়োজনে থাকছে তারই খুঁটিনাটি।
কয়েক বছর ধরে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি করছে সাদেক এগ্রো, আমারদেশ ই-শপ, বিক্রয় ডটকম, বেঙ্গল মিট, ক্লিকবিডি ডটকম, কাইমু ডটকম, বাগডুম ডটকমসহ আরো কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। এছাড়া পেশাদার অনলাইন বাজারগুলোর (ই-কমার্স সাইট) পাশাপাশি ঈদকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি কোরবানির হাট। এসব সাইটে কোরবানির পশুর পাশাপাশি কোরবানি পশু জবাইয়ের বিভিন্ন সরঞ্জামাদিও বিক্রি করা হচ্ছে।
এসব সাইট ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন জাতের গরু ও ছাগল রয়েছে। তবে দেশি গরুর প্রাধান্যই বেশি। গরুর দাম ৬৫ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ছাগলের দাম ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়েছে। ঈদের কত দিন আগে বাসায় গরু নিতে চান, তা নির্ধারণ করার সুযোগও আছে। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রামেও পৌঁছে যাবে পছন্দের গরু-ছাগল।
অনলাইনে পশু ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুটা প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তারা অনলাইনে পশু কেনার প্রতি ঝুঁকছেন। তবে বিক্রেতারা বলেছেন, ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও ক্রেতাদের সন্তুষ্টিই সবচেয়ে বড় কথা। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। এজন্য তারা সাইটে পশুর ছবির পাশাপাশি পুরো বিবরণ তুলে ধরেন। এতে পশুর জাত, উচ্চতা, ওজন, রং, দাম, কোন এলাকা থেকে আনা হয়েছে তা তুলে ধরা হয়।
এরপরও গ্রাহকদের আশঙ্কা দূর করতে বিভিন্ন সাইটে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া কোনো কোনো সাইটে অনলাইনে গরু অর্ডার দেওয়ার পর সরাসরি খামারে এসে তা দেখার সুযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছে।
কোরবানির গরু বিক্রি হচ্ছে ফেসবুকেও। ‘গরু’, ‘গাবতলী গরুর হাট’, ‘গাবতলী কাউ ক্যাটেল মার্কেট’, ‘ঢাকা গরুর হাট’, ‘আফতাবনগর গরুর হাট’, ‘ফেসবুকে গরুর হাট’, ‘গাবতলী কাউ হাট’, ‘কোরবানির বিরাট হাট’সহ আরও বেশ কয়েকটি পেজেও বিক্রি হচ্ছে গরু-খাসি। ‘গাবতলী কাউ হাট’ নামের একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনা করেন মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দা হাসানসহ ৬ জন। ৫ বছর আগে কোরবানির ১০ দিন আগে পেজটি খুলে ফেসবুকের মাধ্যমে গরু বিক্রি শুরু করেন তিনিসহ ৬ উদ্যোক্তা
বিক্রেতারা জানান, উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যার কারণে গরুর সরবরাহ কম। তবে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশা করছি, উত্তরাঞ্চলের গরু আসা শুরু হবে। তারা বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার অনলাইনে কোরবানির পশু কেনার ক্রেতাদের সাড়া বেশি পাওয়া যাচ্ছে। ঈদ যতই এগিয়ে আসবে অনলাইন কোরবানির পশুর হাট ততই জমে উঠবে বলে তারা জানান।