নিজেকে তিনি দাবি করেন ‘স্পেশাল ওয়ান’ হিসেবে। তা এক দিক থেকে তিনি স্পেশাল ওয়ানই বটে। কোচিং জীবনে সাফল্য তো আর কম পাননি! এই ‘স্পেশাল ওয়ান’ মরিনহোর আছে একটি স্পেশাল রেকর্ড। বিশ্বজুড়ে যেখানেই কোচিং করিয়েছেন, ক্লাবে নিজের দ্বিতীয় মৌসুমে কখনও খালি হাতে ফেরেননি মরিনহো। পোর্তো, চেলসি, ইন্টার মিলান, রিয়াল মাদ্রিদ, এবং দ্বিতীয় দফায় চেলসি, সবখানেই নিজের দ্বিতীয় মৌসুমে লিগ শিরোপার মালিক ছিলেন এই পর্তুগীজ। ২০১৭-১৮ মৌসুম হতে যাচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে মরিনহোর দ্বিতীয় মৌসুম। তাহলে কি নিজের সাফল্য ধারা বজায় রেখে এই মৌসুমে ইউনাইটেডকে চ্যাম্পিয়ন বানাচ্ছেন মরিনহো?
গত মৌসুমে ইউরোপা লিগের সাফল্য ও এই মৌসুমে প্রাক প্রস্তুতি ম্যাচের ফলাফল দেখে মরিনহো আত্মবিশ্বাসী হলেও শিরোপা জিতবেনই, এমন কোন নিশ্চয়তা তিনি দিচ্ছেন না। শুনুন মরিনহোর ভাষ্যই, ‘প্রতিবার দ্বিতীয় মৌসুমে শিরোপা জিতেছি বলে এই মৌসুমেও জিতব, এমন কোন কথা নেই। এভাবে নিশ্চয়তা তো দেয়া সম্ভব না, তবে সাধারণত একজন ম্যানেজার প্রথম মৌসুমের তুলনায় দ্বিতীয় মৌসুমে তার দলকে আরও ভালভাবে চেনেন।’
‘গতবারের তুলনায় এবার আমাদের ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। ইউরোপা লিগ জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে ফেরত আসা একটা দলে যতটা আত্মবিশ্বাস থাকা দরকার, ততটা আমাদের আছে। প্রথম মৌসুমের চেয়ে ভালো ফলাফল এনে দেয়ার মত অবস্থায় আমরা আছি’।
তবে লিগ জয়ের জন্য গোল করার মানুষ খুঁজে বের করতে হবে ৫৪ বছর বয়সী পর্তুগীজ কোচকে। গত মৌসুমে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার জন্য প্রিমিয়ার লিগ থেকে যে ৭ টি দল উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম গোল করেছিল মরিনহোর ইউনাইটেড, সবচেয়ে বেশি গোল করা টটেনহামের চেয়ে যা ৩২ টি কম!
গত মৌসুমে লিগে ইউনাইটেডের হয়ে গোলের খাতায় ডাবল ফিগারে পৌঁছাতে পেরেছিলেন কেবল ইব্রাহিমোভিচই, সুইডিশ স্ট্রাইকার একাই করেছিলেন ১৭ গোল। ইউনাইটেডের ২য় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন হুয়ান মাতা ও ওয়েইন রুনি, কয় গোল করে জানেন? মাত্র ৬ গোল!
বিপুল অর্থ খরচ করে রোমেলু লুকাকুকে নিয়ে আসলেও মরিনহো খুব ভালভাবেই জানেন, একা তার উপর ভরসা করে এত বড় লিগের বৈতরণী পার হতে পারবে না ইউনাইটেড। গোলের জন্য লুকাকুর পাশাপাশি হেনরিখ মেখিতারিয়ান, মার্কাস রাশফোর্ডদের উপরেও ভরসা করতে হবে মরিনহোকে।
এই বিষয়ে মরিনহো নিজেও তার দলের দুর্বলতা স্বীকার করেছেন, ‘অন্য ক্লাবে আমার গোল করার মত আরও খেলোয়াড় ছিল। মিডফিল্ডাররা গোল করত, উইঙ্গাররা গোল করত, এমনকি সেন্ট্রাল ডিফেন্ডাররাও সেট পিস থেকে গোল করত। উইঙ্গার ও মিডফিল্ডারদের থেকে অন্তত ১০ গোল এবং ডিফেন্ডার থেকে কমপক্ষে ৫ টি সেট পিস গোল আদায় করতে হবে আমাদের, যা আমরা গত মৌসুমে পারিনি’।
আগামীকাল ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে ইউনাইটেডের লিগ অভিযান। দেখা যাক মরিনহো তার দ্বিতীয় মৌসুমের সাফল্য ধারা বজায় রাখতে পারেন কিনা!
তথ্যসূত্র- ফোরফোরটু ডট কম