একজন অভিযাত্রী এগিয়ে চলেছেন নিঃসঙ্কোচে। যত বাঁধার পাহাড় তার সামনে আসুক না কেন, সে তার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেই। এই লক্ষ্য অজানাকে জানার, এই লক্ষ্য অদেখাকে দেখার। পৃথিবীকে জয় করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন তিনি। জানতে চান এবং একই সাথে জানাতে চান সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে যে কত ধরণের বৈরী অঞ্চল এই পৃথিবীতে রয়েছে, রয়েছে কত ভয়ঙ্কর সুন্দর স্থান।
এই অভিযাত্রীর ডায়েরীতেই আজ আপনাদের জন্য রইল পৃথিবীর যত অদ্ভুত স্থানের দ্বিতীয় পর্বঃ
৪) তুলার রাজ্য পামুক্কালেঃ
তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত পামুক্কালে হচ্ছে একটি অসাধারণ মনকারা সৌন্দর্যের স্থান। এর চারপাশে গড়ে উঠেছিল প্রাচীন শহর হিয়েরাপোলিস। ইউনেস্কোর অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলোর মাঝে এটি অন্যতম। বসন্তে এর চারপাশে মায়াকাড়া এক ধরণের জলাধারের সৃষ্টি হয় এবং এটি একটি বাগিচার মত সফেদ নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে। তখন চাইলেই যেন মনে হয় টুপ করে একটা ডুব দিয়ে আসি। জিরিয়ে স্পর্শ নেই শীতলতার!
৫) পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার গোলাপি স্বর্গ লেক হিলিয়ারঃ
এই লেকটি আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৮০২ সালে। বলা হয়ে থাকে, অস্ট্রেলিয়ার আবিষ্কৃত যেসব প্রাচীন লেক রয়েছে, তাদের মধ্যে এই লেক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন?
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই লেকটির পানি সারাবছর জুড়েই গোলাপি হয়ে থাকে। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, শ্যাওলার কারণে পানির রং সবুজ হতে পারে, আকাশের ঐ নীল সমুদ্রের বুকে আছড়ে পড়লে তার রং নীল হতে পারে কিন্তু এই লেকের পানি গোলাপি হবার পেছনে রহস্য কি?
বিজ্ঞানীরা বলেন এই লেকের পানিতে বাস করে ডুনালিয়েলা সালিনা নামের একটি লবণপ্রেমী ব্যাকটেরিয়া, যার কারণে এই লেকের পানি হয়ে থাকে লবণাক্ত। আর গোলাপি হবার কারণ হচ্ছে হালোব্যাকটেরিয়া নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়ার রং গোলাপি। তাই আবাসস্থল যে তার শরীরের রঙে রাঙা হবে না, তা এর আশ্চর্য কি!
৬) ইরানের বাদাব-ই-সুরতঃ
“বাদ” শব্দের অর্থ হচ্ছে গ্যাস বা গ্যাস জাতীয় এবং “আব” শব্দের অর্থ হচ্ছে পানি। অর্থাৎ, মাটির নিচ থেকে উঠে আসা গ্যাসীয় পদার্থের সাথে পানির যে সম্মিলন, তাকে বলা হচ্ছে বাদাব। আর সুরত শব্দের অর্থ হচ্ছে গভীরতা।
ট্রাভেরটাইন হচ্ছে এক ধরণের খনিজ পদার্থ যেটি বসন্তের শেষ দিকে তার আকার ও রুপের নানা ধরণের পরিবর্তন করতে পারে। ইরানের বাদাব-ই-সুরত হচ্ছে এমন একটি অঞ্চল যেখানে মাটির নিচ থেকে প্রবাহিত হয়ে আসা পানির সাথে মিশ্রিত ক্যালসিয়াম যুক্ত হয়ে একটি বড় স্তর তৈরি করে। এছাড়াও বসন্তে এই ক্যালসিয়ামের সাথে যুক্ত হয় আয়রন অক্সাইড, যার ফলে এই স্তরগুলির রং হয়ে যায় লালচে। অদ্ভুত সৌন্দর্যের অধিকারী এই স্থান দর্শনার্থীদের মন কাড়ে সহজেই।
আজ এ পর্যন্তই। সামনে আপনাদের সাথে আবারো অভিযাত্রী হাজির হবে আরো নতুন নতুন অদ্ভুত কিছু স্থান নিয়ে। প্রিয়লেখার সাথেই থাকুন, সকলের প্রিয় হয়ে থাকুন।
তথ্যসুত্রঃ
https://goo.gl/aNXVsu