একজন মা যখন জানতে পারেন তার ভেতরে আর একটি প্রানের সঞ্চার হচ্ছে তখন সে নিজের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখে।তখন তার সম্পূর্ন মনোযোগ থাকে তার ভেতরের আস্তে আস্তে বেড়ে উঠা সত্তাটার দিকে । সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া একটি শিশু অনেক বেশি অসহায় থাকে কেননা সে প্রকাশ করতে পারে না তার অনুভূতি তাই তার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা।জন্মের পর থেকে তার খাবারের প্রতি আমাদের বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত।
জন্মের পর থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত যে কোন ব্যক্তিকে আমরা শিশু বলে থাকি। শিশু যখন কথা বলতে পারে না তখন তার সমস্যা কিংবা ভাললাগা কোনটাই সে প্রকাশ করতে পারে না। তবে আসুন জেনে নেই কেমন হবে শিশুর জন্মের পরের খাবার আর তার পরিচর্যা-
জন্ম থেকে ৬মাস-
জন্মের সাথে সাথে যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে মায়ের শালদুধ খাওয়াতে হবে। বাইরের কোন কিছু যেমন মধু, দুধ কিংবা পানি কোনটাই শিশুর মুখে দেওয়া যাবে না। এখানে বলে রাখা উচিত যে শাল দুধ হল শিশুর জন্মের কিছুক্ষনের মধ্যে যে ঘন হলুদাভ ক্লোস্ট্রাম সমৃদ্ধ দুধ নিঃসরন হয়। এতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ করার উপাদান থাকে। এবং শিশুর জন্য তা অতি জরুরী।
শিশুর জন্মের পর থেকে ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে মায়ের বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে কিছু দেওয়া যাবে না । যদি মায়ের দুধ পর্যাপ্ত না হয় সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৬-৯ মাস –
শিশুর বয়স ৬ মাসের বেশি হলে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি তার বাইরের খাবারের প্রয়োজন হয়। এজন্য তাকে তার শরীরের সামর্থ্য অনুযায়ী বাইরের খাবার দিতে হবে।
সকাল-
বুকের দুধ / ৬-৮ আউন্স দুধ।
সকাল ১০টা- ৪-৬ টেবিল চামচ সুজি/খিচুড়ি/ চামচ চটকানো ফল।
দুপুর-
দুপুরে বুকের দুধ / ৬ আউন্স দুধ, ১-৩ টেবিল চামচ খিচুড়ি/সুজি।
বিকাল-
বিকেলে ১-৩ টেবিল চামচ চটকানো ফল। বুকের দুধ, ৩-৬ আউন্স দুধ।
রাত-
রাতে বুকের দুধ/৬-৮ আউন্স দুধ। খিচুড়ি/সুজি ৪ টেবিল চামচ।
৯-১২ মাস –
সকাল-
৭-৮টায় বুকের দুধ/৬-৮ আউন্স দুধ।
সকাল ১০টা- ৪-৬ টেবিল চামচ খিচুড়ি/সুজি/চটকানো ফল।
দুপুর–
দুপুরে বুকের দুধ/৬-৮ আউন্স দুধ। ৪ টেবিল চামচ খিচুড়ি/সুজি/ সবজি/মাংস।
বিকাল-
বিকেলে বুকের দুধ/৬-৮ আউন্স দুধ। বিস্কুট/দই/মিষ্টি জাতীয় যেকোনো একটা খাবার।
সন্ধ্যা-
সন্ধ্যায় ৪ টেবিল চামচ সবজি/মাংস। ৪ টেবিল চামচ পরিমাণ চটকানো ফল। নুডলস/নরম পিঠা/কেক ইত্যাদি।
রাত-
রাতে বুকের দুধ/৬-৮ আউন্স দুধ। ৪-৬ টেবিল চামচ খিচুড়ি/সুজি।
শিশুর বয়স যখন ১২মাস হয় তখন সে মোটামুটি সবধরনের খাবার খাওয়ার উপযোগী হয়ে যায়। পুষ্টিমান যাচাই করে যথাসাধ্য সময়মত শিশুকে খাবার দিতে হবে। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ও সুস্থ-সুন্দরভাবে বেড়ে উঠার জন্য খাদ্যের প্রয়োজনীতা অপরিসীম।
শিশুর বিকাশ ও সমস্যা সংক্রান্ত সকল তথ্য নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত হাজির হব আপনাদের কাছে। সাথে থাকুন আর চোখ রাখুন প্রিয়লেখায়।