ষড় ঋতুর বাংলাদেশে ঋতুর পরিবর্তন হয় বছর জুড়ে। আর হাওয়া বদলের হাওয়ার প্রভাব পড়ে আমাদের শরীর ও মনে। গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা শীতে আবহাওয়ার পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে আমাদের উপরে। আর যখন প্রসঙ্গ আসে সর্দি-কাশির তখন তার জন্য কোন ঋতুর প্রয়োজন হয়না। আমরা সকলে কম বেশি বছর জুড়ে এই সমস্যায় ভুগে থাকি।
অন্যান্য রোগের মত খুব বেশি প্রাধান্য না দিলেও এই সর্দি- কাশিই কিন্তু আপনার জন্য বয়ে আনতে পারে বিপদ। শীতকালে অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে অথবা ধূলা ময়লা কিংবা এলার্জি জনিত কারণে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন সর্দি-কাশি, মাথাব্যাথা, বুকে কফ জমে যাওয়া আর সাথে জ্বরে।
এখন আসি এইসব রোগের জন্য প্রতিকার হিসেবে আপনি নিবেন বস্তা বস্তা ঔষধ। যাতে করে আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো কমবেই সাথে আপনি হয়ে পড়বেন শারীরিকভাবে দূর্বল।আচ্ছা এইসব বিষয়ের সমাধান যদি আমরা ঘরোয়া ভাবে করতে পারি তাহলে?? তবে আসুন জেনে নেই ঘরোয়া উপায়ে কি করে সমাধান করা যায় সর্দি-কাশির-
দুধ ও হলুদ–
বাচ্চা থেকে বুড়ো সকল বয়সের মানুষের সর্দি-কাশি নিরাময়ে দুধ-হলুদ একটি উপকারী খাবার। হলুদে অ্যান্টি ভাইরাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় তা সর্দি-কাশি উপশমে সহায়তা করে। গরম দুধে ২/৩ চামচ হলুদ গুড়ো দিয়ে ভালভাবে গুলিয়ে খেতে হবে।
সরিষা–
সর্দি-কাশি উপশমে সরিষা তেল কিংবা তেলবীজ উভয়ই বেশ উপকারী। সরিষা তেল বীজ ভর্তা করে কিংবা সরিষার তেল খানিকটা গরম করে নাক,গলা, বুক, হাত পায়ের তালুতে ঘষে দি্তে পারেন। পুরনো সর্দি-কাশির জন্য সরিষা তেলে রসুন কোয়া থেঁতলে দিয়ে গরম করে ব্যবহার করতে পারেন আবার এটি খেতেও পারেন। এটি খুব বেশি উপকারী।
আদা–
সর্দি কাশি দূর করতে আদা খুব বেশি উপকারী।লবণ দিয়ে আদা কুচি খেতে পারলে তা অনেক পুরনো কাশি দূর করে। এছাড়া আপনি পানিতে আদা দিয়ে গরম করে পানি কমিয়ে অর্ধেক করে ফেলুন চা এর মত খান আশা রাখছি বেশ কাজে দেবে।
মধু-
মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে ঠান্ডা লাগা, কফ, কাশি ইত্যাদি সমস্যা কমে যায়। লেবু দিয়ে পানি গরম করে ১চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে বেশ ভালো ফল পাওয়া যায়।
কালোজিরা-
সর্দি-কাশি উপশমে খুব কার্যকর কালোজিরা । কালোজিরা বেটে ভাতের সাথে খেতে পারেন। তবে তীব্র গন্ধযুক্ত ও ঝাঁঝালো হওয়ায় অনেকে খেতে পারেন না সেক্ষেত্রে রুমাল অথবা টিস্যুতে কিছু কালোজিরা নিয়ে তার ঘ্রাণ নিলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
রসুন-
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ম্যারিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারের এক গবেষণায় বলা হয়েছে সর্দি-কাশি উপশমের অন্যতম নিয়ামক রসুন। রসুনের কোয়া সামান্য থেঁতলে ঘি অথবা সরিষার তেলে ভেজে খেয়ে দেখুন ফলাফল নিজেই পাবেন।
ঔষধ খেয়ে নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর আগে হাতের কাছে থাকা খাবার খেয়ে আরোগ্য লাভ করুন তবে সমস্যার সমাধান না হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ঔষধ খেতে হবে।কোন রোগকে অবহেলা না করে প্রতিকার করুন।সুস্থ থাকুন, সুস্থ রাখুন। এটাই সকলের কাম্য।