রহস্যময় এই পৃথিবী!
আমাদের চারপাশে কত অদ্ভুত কিছু ছড়িয়ে আছে তা কি আমরা জানি? বিজ্ঞানীরা কতটুকু তার সমাধান করতে পেরেছেন বলুন? সব কিছুর ব্যাখা পাওয়া যেমন সম্ভব নয়, ঠিক তেমন মানুষও চায় ব্যাকার অতীত এই বিষয়গুলো কোন কোন সময় অনাবিষ্কৃতই যেন থেকে যাক। একটি অঞ্চলের মানুষের কথাবার্তা, হাবভাব যেমন অন্য একটি অঞ্চলের মানুষের থেকে আলাদা, ঠিক তেমনি মানুষের চাইতেও বিচিত্র হচ্ছে তারা যে অঞ্চলে বাস করে, তার প্রাকৃতিক বর্ণনা। দম বন্ধ করে এসব সৌন্দর্যের সাথে সাথে মানুষকে ভাবতেও হয়। কেমন করে সম্ভব হল এই স্থানগুলো তৈরি করা?
মিশরের পিরামিডগুলোর কথাই ধরুন না! হাজার হাজার বছর আগে এমন কোন গাড়ি বা মেশিন ছিল না যার সাহায্যে এই বিশাল বিশাল পাথরগুলো এত উপরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ঈজিপ্টের পিরামিড আজ সগৌরবে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এমন আরো অনেক স্থান আছে যা পৃথিবীর বুকে রহস্য তৈরি করে দাঁড়িয়ে আছে। আজ এমন কিছু স্থান নিয়েই আমাদের আয়োজনঃ
১) স্পটেড লেক, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, কানাডাঃ
স্থানীয় ওকানাগান গোত্রের কাছে কানাডার এই স্পটেড লেক বা ছোপ হ্রদ খুবই পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ন। এর বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য হল, গ্রীষ্মকালে এই হ্রদের পানি বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং এর ফলে হ্রদে ছোপ ছোপ জলজ পুলের মত জন্ম নেয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই জলদ পুলের রঙ একটি অন্যটি থেকে একদম ভিন্ন। আপনি যদি উঁচু কোন স্থান থেকে এই হ্রদের ছবি তোলেন, তাহলে এর দম আটকে দেয়া সৌন্দর্য অবশ্যই আপনাকে বিমোহিত করবে। তবে স্থানীয় গোত্রের কাছে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় একটি স্থানও বটে। এর সাথে জড়িয়ে আছে নানা ধরণের মিথ ও কুসংস্কার। তাই এখানে পর্যটকদের যেতে একরকম নিষেধই করে থাকে স্থানীয় পুলিশ।
২) দ্য জায়ান্ট কজওয়ে, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডঃ
মনে করুন, হাজার লক্ষ বছর আগে একটি বিশালাকার দানবের তৈরি করা কীর্তি আজো এই পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের এই বিশাল স্থাপনাটি আজ থেকে প্রায় ৬ কোটি বছর আগে তৈরি হয়েছিল। আগ্নেয়গিরির লাভার উদগীরণের ফলে কালান্তরে তা ঠান্ডা হয়ে আজকের এই জায়ান্ট কজওয়ে। মজার ব্যপার হচ্ছে, ঠান্ডা হয়ে যাবার পরে এর আস্তরগুলো যে রুপ নেয়, এটি হচ্ছে জ্যামিতিকভাবে নেয়া অন্যতম একটি আকৃতি। বলা হয়ে থাকে যে, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এমন জ্যামিতিক উদাহরণ পৃথিবীর বুকে খুব কমই রয়েছে। বিশাল বিশাল এই আকৃতিগুলো একইসাথে আপনাকে আনন্দ দেবে, আবার ভাবতেও বাধ্য করবে। সত্যিই লাভার উদগীরণের ফলে এত সৃষ্টিশীল কিছু তৈরি হওয়া সম্ভব? কে জানে, কত রহস্যই না ছড়িয়ে আছে এই পৃথিবীতে!
৩) থর’সওয়েল, অরেগন, যুক্তরাষ্ট্রঃ
মিথলজি বা পৌরাণিক কাহিনী নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে, তারা অবশ্যই নর্স দেবতা থরের নাম শুনে থাকবেন। ওডিনের পুত্র থরের নামে এই পৃথিবীর বুকে একটি বিশাল কুয়ো আছে, এর নাম থর’স ওয়েল বা থরের কুয়ো। না, চমকে যাবেন না। এমন কিছুই আসলে নয় তবে যুক্তরাষ্ট্রের অরেগনে একটি বড় ধরণের প্রপাত রয়েছে যেটির মাঝে রাশি রাশি জল এসে পড়তে থাকে এবং এবং একসময় নিচ থেকে তা বন্দুকের গুলির মত পানি ওপরের দিকে ছুঁড়ে মারে। পারপেচুয়া গুহা ধরে যদি আপনি ক্যাপ্টেন কুকের চিহ্ন ধরে সামনে এগিয়ে যান, তাহলে থরের এই বিশাল কুয়োর দেখা আপনার মিলবে।
তবে অবশ্যই মনে রাখবেন, ঝড়ের রাতে কিংবা কোন বৃষ্টি বাদলার দিনে যদি এখানে যান, তাহলে তা আপনার জন্য বয়ে নিয়ে আসবে অমোঘ মৃত্যুবাণ! (চলবে)
আজ এ পর্যন্তই। সামনের দিন আপনাদের জন্য এমন আরো কিছু অসাধারণ স্থানের নাম নিয়ে হাজির হব। প্রিয়লেখার সাথেই থাকুন, সকলের প্রিয় হয়ে থাকুন।