লিওনেল মেসির পর স্প্যানিশ কর বিভাগের অভিযোগ এবার রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দিকে। রোনালদোর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ‘ইচ্ছাকৃত’ ভাবে প্রায় ১৪.৭ মিলিয়ন ইউরো কর ফাঁকি দিয়েছেন তিনি।
গত মঙ্গলবার মাদ্রিদের প্রসিকিউটর এক আদালতে চারবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই ফুটবলারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ইমেজ স্বত্ব থেকে পাওয়া আয় কর বিভাগের কাছ থেকে লুকিয়ে যেতে ২০১০ সালে রোনালদো একটি ব্যবসায়িক কাঠামো গড়ে তোলেন, এবং তার সাহায্যেই তিনি ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কর ফাঁকি দিয়েছেন।
কিন্তু রোনালদোর প্রতিনিধিরা দৃঢ়ভাবে রোনালদোর বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রোনালদোর এজেন্ট হোর্হে মেন্ডেসের সংস্থা গেস্টিফুট এর বরাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর ফাঁকি দেয়ার ন্যূনতম কোন চেষ্টাও কখনো করা হয়নি। এছাড়া তার ক্লায়েন্টের কর সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলীও তুলে ধরেন মেন্ডেস।
যেই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিয়ে এত বিপত্তি, সেই টলিন কোম্পানিটি রিয়াল মাদ্রিদে আসার বহু আগে থেকেই রোনালদো চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন মেন্ডেস। কোম্পানিটি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বলে জানান তিনি, এবং তখন রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে না, বরং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলতেন।
বিজ্ঞপ্তিতে মেন্ডেস জানিয়েছেন, ‘পাবলিক প্রসিকিউটর বলেছেন রোনালদো একটা সমুদ্রতীরবর্তী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, যার মাধ্যমে তিনি আয় পাচার করেছেন বলে রোনালদোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এরকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কেবল রোনালদোর একার নয়, আরও বহু ফুটবলারেরই রয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, এটি কর ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা কোন প্রতিষ্ঠান নয়। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি সম্পূর্ণভাবে রোনালদোর মালিকানাধীন। রিয়াল মাদ্রিদে যোগদানের ৬ বছর আগে, ২০০৪ সালে ম্যানচেস্টারে থাকার সময়ই রোনালদো এটি গড়ে তোলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার পরেও এই প্রতিষ্ঠানের কাঠামোতে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি, বরং যুক্তরাজ্যে থাকতে যেই কাঠামোতে পরিচালিত হত, সেই একই কাঠামোতে মাদ্রিদে আসার পরেও ব্যবসা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। কোন নতুন কাঠামো তৈরি করা হয়নি বলে জোরালো দাবিও করেছেন মেন্ডেস।
এত বছর ধরে শীর্ষ পর্যায়ে খেলা সত্ত্বেও রোনালদোর বিরুদ্ধে কখনো কর ফাঁকির অভিযোগ আসেনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে মেন্ডেস বলেছেন, রোনালদো কখনোই কর ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যে কিছু করেননি।
স্পেনের ফুটবলে কর ফাঁকির অভিযোগ উঠা নতুন কিছু নয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে কর ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসিকে ২১ মাসের স্থগিত কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন স্প্যানিশ আদালত। কিন্তু প্রথমবার দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এবং ২ বছরের কম শাস্তি পাওয়ায় স্প্যানিশ আইন অনুযায়ী মেসিকে সরাসরি কারাভোগ করতে হবে না।