চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে বুঁদ হয়ে আছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা, অপরদিকে ক্লাব ফুটবলে মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় খালি সময়ই হয়তো কাটাচ্ছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা । তবে অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে তাদেরও, আর দুদিন পরেই যে শুরু হতে চলেছে কনফেডারেশন্স কাপ ! ২০১৮ বিশ্বকাপের স্বাগতিক রাশিয়ারও একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে এই কনফেডারেশন্স কাপ দিয়ে ।
৮ দলের এই টুর্নামেন্টটি প্রতি বিশ্বকাপের আগের বছরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশে । বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য সে দেশ প্রস্তুত কিনা, তারই একটি আনুষ্ঠানিক মহড়া হয়ে যায় কনফেডারেশন্স কাপের মধ্য দিয়ে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের কনফেডারেশন্স কাপের আসর বসতে যাচ্ছে রাশিয়ায়, আর তাতে অংশ নিচ্ছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি সহ বিভিন্ন মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দলগুলো ।
এবারের আসরে অংশগ্রহণকারী দলগুলো:
বরাবরের মত এবারেও ৮ দলের অংশগ্রহণেই হতে যাচ্ছে কনফেডারেশন্স কাপ । চারটি করে মোট দুইটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে ৮ দলকে । গ্রুপ ‘এ’ তে স্বাগতিক রাশিয়ার সাথে আছে ওশেনিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড, ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল ও কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়ন মেক্সিকো ।
অপরদিকে গ্রুপ ‘বি’ তে আছে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন চিলি, আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন ক্যামেরুন, এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি ।
খেলা হবে যেসকল ভেন্যুতে:
১) স্পার্তাক স্টেডিয়াম; মস্কো। ধারণক্ষমতা- ৪৫,৩৬০ জন।
রাশিয়ান ক্লাব স্পার্তাক মস্কোর হোম গ্রাউন্ড এটি। ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়া এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের ৩ টি ম্যাচ ছাড়াও ৩য় স্থান নির্ধারণী প্লে অফ ও অনুষ্ঠিত হবে।
২) কাজান অ্যারেনা; কাজান। ধারণক্ষমতা- ৪৫,৩৭৯ জন।
২০১৩ সালে পুরানো স্টেডিয়ামের বদলে এই স্টেডিয়ামকে নিজেদের হোম গ্রাউন্ড বানায় রুশ ক্লাব রুবিন কাজান। এই স্টেডিয়ামের বিশেষত্ব হচ্ছে, ইউরোপের মধ্যে এই স্টেডিয়ামেই সবচেয়ে বড় আউটসাইড টিভি স্ক্রিন আছে, যা কিনা স্টেডিয়ামের চার ভাগের এক ভাগ জুড়ে অবস্থিত। একটি সেমিফাইনাল ছাড়াও ৩ টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ হবে এই ভেন্যুতে।
৩) ফিশট স্টেডিয়াম, সোচি। ধারণক্ষমতা- ৪৭,৬৫৯ জন।
মূলত ২০১৪ সালের অলিম্পিক ও প্যারা অলিম্পিকের জন্যই এই স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছিল। প্রথমে ইনডোর স্টেডিয়াম থাকলেও পরবর্তীতে একে ফুটবল স্টেডিয়ামে রুপান্তর করা হয়। একটি সেমিফাইনাল সহ তিনটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ হবে এই ভেন্যুতে।
৪) সেইন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম; সেইন্ট পিটার্সবার্গ। ধারণক্ষমতা- ৬৮,১৩৪ জন।
নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৯ বছর দেরিতে শেষ হওয়া এই স্টেডিয়ামেই হবে এবারের কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনাল। ফাইনাল ছাড়াও ৩ টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ হবে এই ভেন্যুতে।
এবারের আসর মাতাতে পারেন যে তারকারা:
বড় দল খুব বেশি না থাকলেও বড় তারকার অভাব হবে না এই টুর্নামেন্টে। সবচেয়ে বড় তারকা তো স্বয়ং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো! রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দীর্ঘ এক মৌসুম কাটালেও দেশের হয়ে ঠিকই খেলবেন এই পর্তুগীজ সুপারস্টার।
রোনালদো ছাড়াও পর্তুগাল দলে আছেন পেপে, বার্নার্দো সিলভা, রাফায়েল গুয়েরেইরোর মত তারকারা। তবে অনূর্ধ্ব-২১ ইউরোতে খেলবেন বলে কনফেডারেশন্স কাপে খেলছেন না বায়ার্ন মিউনিখের প্রতিভাবান ফুটবলার রেনাতো সানচেজ।
তারকা আছে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন চিলি দলেও। সবচেয়ে বড় দুই তারকা আর্সেনালের অ্যালেক্সিস সানচেজ ও বায়ার্নের আর্তুরো ভিদাল। এছাড়া ম্যানচেস্টার সিটি গোলকিপার ক্লদিও ব্রাভোর উপরেও থাকবে স্পটলাইট।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি তাদের পূর্ণশক্তির দল পাঠাচ্ছে না, তারপরেও তাদের তরুণ দলে থাকছে একঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার। পিএসজির জুলিয়ান ড্র্যাক্সলার, বায়ার্নের জশুয়া কিমিচ, ম্যানচেস্টার সিটির লেরয় সানে ও আর্সেনালের শকোদ্রান মুস্তাফির উপর ভরসা করবে জার্মানরা।
এছাড়া মেক্সিকোর হাভিয়ের হার্নান্দেজ ও অস্ট্রেলিয়ার টিম কাহিলরাও হয়ে উঠতে পারেন ছোট দলের বড় তারকা।
কার পক্ষে বাজির দর কেমন:
বড় কোন টুর্নামেন্ট মানেই সেটা নিয়ে কোটি কোটি টাকার বাজি চলে। বাজির দরে এবারের কনফেডারেশন্স কাপের ফেভারিট বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি, তাদের পক্ষে বাজির দর ৯/৪। তবে পূর্ণশক্তির দল না পাঠানোয় ভালো সম্ভাবনা থাকবে পর্তুগাল ও চিলিরও। ইউরো ও কোপা চ্যাম্পিয়নদের পক্ষে বাজির দর যথাক্রমে ৫/২ ও ৩/১।
এছাড়া রাশিয়া ও মেক্সিকোর পক্ষে বাজির দর ১০/১, ক্যামেরুন ও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বাজির দর যথাক্রমে ২০/১ ও ৪০/১। বাজির দরে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে নিউজিল্যান্ড, তাদের পক্ষে বাজির দর ৫০০/১।