চোকার অপবাদ তাদের নিত্যসঙ্গী। সারা বছর দুর্দান্ত ক্রিকেট উপহার দিয়ে আইসিসি ইভেন্টে এলেও বারবারই রিক্ত হাতে ফিরতে হয়েছে ডি ভিলিয়ার্সদের। ব্যতিক্রম হয়নি এবারেও, ভারতের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নিতে হয়েছে সাউথ আফ্রিকাকে।
এরপর থেকেই ডি ভিলিয়ার্সের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আরও একবার ডি ভিলিয়ার্সের নেতৃত্বে আইসিসি ইভেন্ট থেকে বিদায় নিলেও ডি ভিলিয়ার্স নিজে আত্মবিশ্বাসী, তাঁর নেতৃত্বেই বিশ্ব আসরের শিরোপা জিততে পারে সাউথ আফ্রিকা। ২০১৯ বিশ্বকাপেও তাই নিজ দলের কাণ্ডারি হতে চাইছেন ভিলিয়ার্স।
২০১১ সাল থেকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সাউথ আফ্রিকার নেতৃত্ব সামলাচ্ছেন ডি ভিলিয়ার্স। ২০১৩ সালে টি-২০ অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেও ওয়ানডে অধিনায়কত্বটা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত ১৩ টি আইসিসি ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন, এর মধ্যে ৫ টিতে নিজেই ছিলেন অধিনায়ক। কিন্তু একবারও সাউথ আফ্রিকার শিরোপা তৃষ্ণা মেটাতে পারেননি।
কেন সাউথ আফ্রিকা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ডি ভিলিয়ার্স নিজেও, “আমাদের দলটা সবদিক থেকেই ভারসাম্যপূর্ণ, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। আমরা ক্যাম্পের পর ক্যাম্প করেছি, নেটে প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছি। আমরা একে অপরের সামর্থ্য সম্পর্কে জানি, একে অপরকে ভরসা করি। তারপরেও জানিনা কেন বারবার এমনটা হতেই থাকে!”
চাপের মুখে বারবার ভেঙ্গে পরেন বলে যে অপবাদ আছে, সেটা অবশ্য মেনে নিলেন না ডি ভিলিয়ার্স। পুরো ব্যাপারটার দায়ভার নিজেদের দুর্বল ব্যাটিং প্রদর্শনীর উপরেই চাপিয়েছেন সাউথ আফ্রিকান অধিনায়ক, ‘আমাদের দলটা সংগঠিতই ছিল। কিছু ব্যাটিং ভুল, আর সিদ্ধান্ত নেয়ায় কিছু ভুল হওয়াতেই আমাদের ম্যাচটা হারতে হয়েছে। এটা কোন মানসিক বিষয় ছিল না। আমরা ভালো খেলতে পারিনি, এই যা। মাঠে কি হয়েছিল সেটা সকলেই দেখেছে, আমি কিছু ব্যাখ্যা করতে পারব না। এটা শুধু একটা খারাপ ব্যাটিং প্রদর্শনী ছিল, এখানে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ার কোন বিষয় ছিল না’।
ডি ভিলিয়ার্সকে বরং পোড়াচ্ছে খামখেয়ালি ব্যাটিং ও ৩ টি রান আউটের ঘটনা, ‘ম্যাচটা আমরা যেভাবে হেরেছি, সেটাই সবচেয়ে হতাশাজনক। ব্যাটিংয়ে আমরা শুরুটা ভালই করেছিলাম, কিন্তু কিছু সহজ আউটে আমাদের সম্ভাবনা কমে যায়। এটা নিয়েই আমি সবচেয়ে বেশি হতাশ’।
এরকম শোক ডি ভিলিয়ার্স প্রথমবার পাননি, বহুবার পেতে হয়েছে। এবার এতটাই শোকাচ্ছন্ন হয়েছেন, যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাবতেও পারছেন না তিনি, ‘পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আমি এখনই ভাবছি না, আগে আমাকে এই শোক কাটিয়ে উঠতে হবে।
নিজের অধিনায়কত্ব নিয়ে যে গুঞ্জন উঠেছে সেটা নিয়েও সরাসরি কিছু বলেননি সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান, ‘আমি অধিনায়ক থাকব কি থাকব না, এর উত্তর আমি দিতে পারব না। প্রশাসনে যারা আছেন তারাই এটা সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন। দেখা যাক তারা কি সিদ্ধান্ত নেন’।
তবে এখনই যে আশা হারিয়ে ফেলছেন না, সেটাও খুব স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি, ‘ অনেকেই আমাকে বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু আমার মন বলছে, খুব শিগগিরই আমরা বড় কোন ট্রফি জিতব। এরকম একটা পারফরম্যান্সের পর এই কথাটা জোর দিয়ে বলা খুব কঠিন, কিন্তু তাও আমি মন থেকে বিশ্বাস করি, আমরা জিততে পারি। আমাদের প্রতিভার অভাব নেই, শুধু একসাথে জ্বলে ওঠাটাই বাকি’।