সুপার ক্লাসিকোর জন্য অনেকদিন ধরেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আসছিলেন তাবৎ বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা। তবে বাকিদের চেয়ে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের অপেক্ষাটা বোধহয় একটু বেশিই দীর্ঘতর ছিল। নতুন কোচ হোর্হে সাম্পাওলির অধীনে এটিই যে ছিল আর্জেন্টিনার
প্রথম ম্যাচ।
তা শুরুটা মন্দ হয়নি আকাশি-নীলদের। একে তো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর
বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু, তার উপর আর্জেন্টিনা নেই চেনা ছন্দে। নতুন কোচ সাম্পাওলির উপর তাই চাপ ছিল দলকে একটা ভালো শুরু এনে দেয়ার। দলের সার্বিক পারফরম্যান্সে সবার মন হয়তো ভরাতে পারেননি, কিন্তু ব্রাজিলের বিপক্ষে দলকে ঠিকই ১-০ গোলের জয় এনে দিয়েছেন সাবেক এই চিলির কোচ।
ব্রাজিল কোচ তিতে আগেই জানিয়েছিলেন, এ ম্যাচে মূল একাদশ নামাবেন না তিনি। অন্যতম মূল আকর্ষণ নেইমারও যে খেলবেন না, সেটিও জানা ছিল। মেসি-নেইমার দ্বৈরথ দেখার প্রত্যাশা তাই পূর্ণ হয়নি ভক্তদের। তাই বলে দুই দলে তারকার অভাব ছিল না। মেসি-ডি মারিয়া-দিবালা-কৌটিনহোরা ছিলেন দর্শকদের ফুটবল পিপাসা মেটানোর জন্য।
ম্যাচের শুরুটা হয়েছে বেশ জমজমাট। ম্যাচের ৬ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত আলবিসেলেস্তেরা। কৌটিনহোর কাছ থেকে বল নিয়ে ডি মারিয়াকে দারুণ এক বল বাড়িয়েছিলেন দিবালা। কিন্তু ডি মারিয়া সেটিকে বারের উপর দিয়ে মেরে সুযোগ হারিয়েছেন।
২২ মিনিটে ফিরতি সুযোগ পেয়েছিলেন কৌটিনহোও। ফিলিপে লুইসের পাস থেকে বল পেয়ে দ্রুত কৌটিনহোকে বাড়িয়েছিলেন উইলিয়ান, কিন্তু ফাঁকায় পেয়েও সুযোগ হেলায় হারিয়েছেন তিনি।
আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের মাঝে বাজিমাতটা করেছে আর্জেন্টিনাই। প্রথমার্ধ শেষের একটু আগে ম্যাচে এগিয়ে যায় আকাশি-নীলেরা, তবে কাঙ্ক্ষিত সেই গোলটি মেসি বা দিবালার মত কোন সুপারস্টারের কাছ থেকে না, বরং এসেছে ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল মার্কেদোর কাছ থেকে। ডি মারিয়ার ক্রস থেকে বলে মাথা ছুঁইয়েছিলেন নিকোলাস ওটামেন্ডি, বারে লেগে ফেরত আসলে ফিরতি চেষ্টায় বল জালে ঢুকান মার্কেদো।
বিরতি থেকে ফিরে গোল শোধের মরিয়া চেষ্টা চালায় ব্রাজিল। ৬১ মিনিটে কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিল তারা। উইলিয়ানের ফ্রিকিকে পা ছোঁয়াতে পারলেই গোল পেয়ে যেতেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। তবে ম্যাচে নিজেদের সেরা সুযোগটা ব্রাজিল পেয়েছে এর মিনিট দুয়েক পরে। জেসুসের পাস থেকে পাওয়া বল ফাঁকায় পেয়েও বারে মারেন ফার্নানদিনহো। ফিরতি বলেও গোলের সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল, কিন্তু উইলিয়ান আবারো বারে মারলে আর গোল পাওয়া হয়নি ব্রাজিলের। শেষ পর্যন্ত ওই ১ গোলের অগ্রগামিতা ধরে রেখেই ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছে সাম্পাওলি ছাত্ররা।
প্রীতি ম্যাচে জিতলেও অবশ্য সাম্পাওলির দুশ্চিন্তা শেষ হচ্ছে না। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে এই মুহূর্তে ৫ নম্বরে আছে আর্জেন্টিনা, সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে ৪ দল, ৫ম দলকে খেলতে হবে প্লে অফ। শেষ চার ম্যাচেই তাই সাম্পাওলিকে দিতে হবে আসল পরীক্ষা। ১৩ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আরও একটি প্রীতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছেন সাম্পাওলি, দলকে গুছিয়ে নেয়ারও আরেকটা সুযোগ পাবেন। এর আগে প্রীতি ম্যাচ জিতে সমর্থকদের হয়তো আস্থা রাখার বার্তাই দিয়ে রাখলেন মেসিদের নতুন কোচ!