“সাইকো বইটির প্রত্যেকটি কপি কেনার চেষ্টা করেছিলাম যাতে কেউ মুভির শেষটা আগেই জানতে না পারে!”- আলফ্রেড হিচকক
“মাস্টার অফ সাসপেন্স” নামে খ্যাত আলফ্রেড হিচকক ছোট এবং বড় পর্দায় সমানভাবে দর্শকদের তার রহস্য আর মায়ার জালে জড়িয়ে রেখেছেন। তার বিখ্যাত চলচ্চিত্র “সাইকো”র মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সিনেমাজগত জানতে পারে ছায়াছবির কাহিনীতে থাকতে পারে দারুণ সব টুইস্ট। একেবারেই অভিনব কাহিনী এবং কলাকৌশল দ্বারা ইতিহাসে নিজের নাম চিরস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে রাখা এই পরিচালকের সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের আয়োজন।
হিচককের প্রথম অস্কার অ্যাওয়ার্ডের ভাষণ ছিল মাত্র ৫ শব্দের !
ভাবতেও অবাক লাগে যে হিচককের মতো গুণী এবং সম্মানিত চলচ্চিত্র পরিচালক তার কোন চলচ্চিত্রের জন্যই অস্কার পুরস্কার অর্জন করতে পারেননি। তবে তিনি অ্যাকাডেমির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্মান অর্জন করেন। ২০ বছরের চলচ্চিত্র জীবনে সেরা পরিচালক হিসেবে পাঁচবার মনোনয়ন পেয়েছিলেন হিচকক। এর মধ্যে “লাইফ বোট”, “রেয়ার উইন্ডো” এবং “সাইকো”র মতো মুভিও ছিল। তবুও পুরস্কারটি শেষ পর্যন্ত তার ঘরে ওঠেনি একবারও।
শেষ পর্যন্ত সেই ভুল শুধরে নিতে অস্কার কর্তৃপক্ষ ১৯৬৮ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা হিসেবে ইরভিং জি থ্যালবারগ স্মারক পুরস্কার প্রদান করে। হল ভর্তি মানুষের তুমুল করতালি এবং স্ট্যান্ডিং অভিয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে স্টেজে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে তিনি শুধু “Thank you…very much indeed” এই পাঁচটি শব্দ চয়ন করেই থেমে যান।
নিজের বানানো চলচ্চিত্র দেখতে নিজেই ভয় পেতেন হিচকক !
আপনার যদি মনে হয় হিচককের চলচ্চিত্রে সাসপেন্স আর মৃত্যুর দৃশ্যগুলো সব ধরণের দর্শকদের উপযোগী নয়, তবে এই ধারণা মোটেই আপনার একার নয়। স্বয়ং হিচকক তার নিজের চলচ্চিত্র দেখার সাহস পেতেন না!
১৯৬৩ সালে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি আমার নিজের মুভি দেখতে ভয় পাই। কখনই হলে যেয়ে নিজের কোন সিনেমা আমি দেখিনি। আমি জানি না লোকে কিভাবে এইসব মুভি দেখে!” সাক্ষাৎকার গ্রহীতা তার এধরণের ভীতিকে “অযৌক্তিক” বললে তিনি বলেন, “যুক্তি আসলে কি? আমার তো মনে হয় যুক্তির চেয়ে অর্থহীন আর কিছু নেই”।
কিনে ফেলেছিলেন “সাইকো” বইটির সম্ভাব্য সব কপি !
হিচককের সাড়াজাগানো মুভি সাইকোর একদম শেষে রয়েছে দারুণ একটি টুইস্ট। পরিচালক নিজে এই টুইস্টটি এতো পছন্দ করে ফেলেছিলেন যে তিনি চাননি কোন অবস্থাতেই চলচ্চিত্রটি বের হওয়ার আগে কেউ তা জেনে যাক। ফলাফল, বইটির সম্ভাব্য সব কপি চলে আসে হিচককের ঘরে!
চলচ্চিত্রে কখনও ব্যবহৃত হয়নি এমন কোন প্লট নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন হিচকক। ব্যক্তিগতভাবে তার পছন্দ ছিল কোন নৃশংস সিরিয়াল কিলারের কাহিনী। হিচককের প্রোডাকশন সহকারী পেগি রবার্টসন তার হাতে তুলে দেন “সাইকো” বইটি। গোসলের সেই পাশবিক দৃশ্য আর শেষের দুর্দান্ত টুইস্ট নিমিষেই মন কেড়ে নেয় তার। সাথে সাথে তিনি রবার্টসনকে নির্দেশ দেন দোকান থেকে বইটির সব কপি কিনে নিয়ে আসার যাতে দর্শক আগে পাঠক হয়ে মূল কাহিনী জেনে না নিতে পারে।