বগুড়া থেকে ব্রিসবেন: বাংলাদেশি দুই নারী টাইগারের বিগ ব্যাশ অভিজ্ঞতা – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ক্রিকেট / বগুড়া থেকে ব্রিসবেন: বাংলাদেশি দুই নারী টাইগারের বিগ ব্যাশ অভিজ্ঞতা

বগুড়া থেকে ব্রিসবেন: বাংলাদেশি দুই নারী টাইগারের বিগ ব্যাশ অভিজ্ঞতা

রুমানা আহমেদের কাছে সবকিছুই যেন স্বপ্নের মতো ঠেকছিল। প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ায় গেছেন, গিয়েই সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলের সাথে লেগস্পিন বিষয়ে একাকী সেশন কাটানোর সুযোগ পেলেন। আবার আলাপ হলো সময়ের অন্যতম সেরা পেসার মিচেল স্টার্কের সাথেও, যিনি প্রথম দেখায়ই বলে উঠলেন, ‘অবশ্যই আমি জানি ও কে’।

আইসিসির রুকি প্লেসমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় গত মৌসুমে নারী বিগ ব্যাশে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রুমানা আহমেদ বলছিলেন, ‘আমি একদমই আশা করিনি, মিচেল স্টার্কের মতো এত বিখ্যাত ক্রিকেটার বাংলাদেশের কোন নারী ক্রিকেটারকে চেনেন!’ শুধু রুমানাই নন, বাংলাদেশ থেকে নারী বিগ ব্যাশে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তাঁর সতীর্থ খাদিজা তুল কুবরাও।

আইসিসির বিশেষ এই প্রোগ্রামের আওতায় ৫ দেশ থেকে ৮ নারী ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছিলেন বড় বড় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অনুশীলন ব্যবস্থা দেখার, তীব্র উত্তেজনাময় টি-২০ ম্যাচ খেলার। রুমানা অংশ নিয়েছিলেন ব্রিসবেন হিটের হয়ে, আর খাদিজা খেলেছিলেন মেলবোর্ন স্টার্সে।

চলমান সাউথ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে থাকা রুমানা জানাচ্ছিলেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা, ‘শুধু স্কিল ডেভেলপমেন্ট বা ফিটনেস রুটিন না, ওদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, ম্যাচের পরিস্থিতি পড়তে পারার ক্ষমতা, আধুনিক ক্রিকেটের চাপের সাথে মানিয়ে নেয়া- সবকিছু থেকেই শেখার চেষ্টা করেছি আমি।’

গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলার পর এই সাউথ আফ্রিকা সফরের আগে আর কোন ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। সেদিকটাকেই বড় করে দেখাচ্ছিলেন রুমানা, ‘আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে আমরা ৯ নম্বরে। আমাদের পুরুষ দলের মতো আমরা এত ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই না। এ কারণে আমাদের উন্নতির ধারাটাও মন্থর। জেস জোনাসেন, বেথ মুনি, ডেলিসা কিমিন্স, ডিয়েন্ড্রা ডটিনের মতো খেলোয়াড়দের পাশে অনুশীলন করাটা তাই আমাদের জন্য বড় সুযোগ।’

রুমানা এবং খাদিজা দুজনেই ক্রিকইনফোর প্রতিনিধির কাছে দুজনের এই পর্যন্ত উঠে আসার গল্প শুনিয়েছেন, এবং দুজনের গল্প বেশ ভিন্ন।

রুমানা বলছিলেন, ‘কম বয়সে আমার বাবাকে হারাই আমি। চার ভাইবোনের সংসারে ক্রিকেটে আমার প্রথম আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ২০০৮ সালে, এসএসসি পরীক্ষার পরে। আমার ক্রিকেট খেলাটা আমার মা কখনোই পছন্দ করতেন না। বাঁধা যে দিতেন তা কিন্তু না, কিন্তু ক্রিকেট খেলছি এটা মন থেকে পছন্দও করতেন না। এখনো করেন না। আমি যে জাতীয় দলের অধিনায়ক, এটা তিনি মানুষকে খুব কমই বলেন।’

অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার জন্য যখন মনোনীত হলেন, তখন কী হলো? জানতে চাইলে হাসতে হাসতে রুমানার উত্তর, ‘ফোনে যখন মা কে জানালাম যে বিগ ব্যাশ খেলতে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছি, তিনি বলেছিলেন, “খেলতে যাচ্ছ যাও, কিন্তু নামাজ পড়তে ভুলে যেও না যেন” ’।

‘আমি আমার মায়ের সন্তান, সেই হিসেবে আমাকে নিয়ে উনি অবশ্যই গর্বিত। কিন্তু আমার মায়ের চিন্তা ভাবনাকে আপনার বুঝতে হবে আমাদের সমাজে প্রচলিত রীতি-নীতি দিয়ে। আমাদের মতো সমাজে, এমনকি গোটা উপমহাদেশেই মেয়েদের মাঠে আসতে অনেক কষ্ট করতে হয়। আমি আমার কাজের মধ্য দিয়ে মানুষকে জবাব দিতে পছন্দ করি। আমি, আমার সতীর্থ ও কোচেরা যেই পরিশ্রম আমার পেছনে দিয়েছেন, আমি তা নষ্ট হতে দিতে চাই না।’

‘ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে আমি চাইনা বিয়ের জন্য আমার খেলা বন্ধ হয়ে যাক। আমি বিশ্বাস করি বিয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় পড়ে আছে। আমি আমার দেশের এমন কোন নারী খেলোয়াড়কে চিনি না, যিনি খেলতে খেলতে বিয়ে করেছেন, এবং বিয়ের পর আবার খেলার মাঠে ফিরে এসেছেন।’

২৩ বছর বয়সী খাদিজা তুল কুবরার বিগ ব্যাশে খেলতে যাওয়ার খবরটা তাঁর বাবার কাছে পৌঁছেছিল একটু ভিন্নভাবে।

‘বাবা ভেবেছিলেন আমি ভারত সফরের জন্য অধিনায়কত্ব পেয়েছি। কিন্তু যখন আমি তাঁকে পুরোটা খুলে বললাম, তিনি একটা কথাও বলেননি। তিনি কখনো ভাবেননি ক্রিকেট খেলে আমি এতদূর আসতে পারবো।’

ভাইয়ের সাথে ক্রিকেট খেলা ছোট্ট খাদিজাকে দেখে বাবা জামিল আখতার অনুভব করেছিলেন, নিজের মেয়ের জন্য ক্রিকেটই হতে পারে উন্নত জীবনের পাথেয়। পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও মেয়েকে উৎসাহ দিতে থাকেন তিনি।

খাদিজা শোনাচ্ছিলেন সেই গল্প, ‘আব্বু আমার লাঞ্চবক্স নিজ হাতে প্যাক করে দিত, তারপর আমাকে বগুড়ার ক্যাম্পে পাঠাতো। ওখানে তখন শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান সফরের জন্য রুমানা আপুরা অনুশীলন করতেন’- বলছিলেন সেই সময়ে ১৪ বছরের খাদিজা।

আব্বু সবসময় বলতো, বইয়ের পড়াশোনা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এই মেয়েগুলোকে দেখে তুমি যা শিখতে পারবে, সেগুলো তুমি কোন বইয়ে পাবে না। সুতরাং যাও, ওদের খেলা দেখো।’

খাদিজাকে প্রথমবার দেখার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলছিলেন রুমানা, ‘ওকে আমরা কেউ কথা বলতেও শুনিনি। কিন্তু ওর চোখেমুখে প্রবল আগ্রহ দেখেছিলাম আমরা।’

বাবার পর খাদিজার অনুশীলন পর্ব শুরু হয় বগুড়ায় কোচ মুসলিম উদ্দিনের কাছে। গত জানুয়ারিতে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৬ রানের টার্গেটও বাংলাদেশ ডিফেন্ড করে খাদিজার ক্যারিয়ার সেরা ফিগার ৩৩ রানে ৪ উইকেটের কল্যাণে। বিগ ব্যাশ শেষ হওয়ার আগের দিন মেলবোর্ন স্টার্সের হয়ে দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে মাঠে নামার সময় যে রোমাঞ্চ অনুভব করছিলেন, সেটাই জানাচ্ছিলেন খাদিজা।

‘পরের দিন ভোরে আমার ফ্লাইট ছিল, আমি তাই কিট ব্যাগ গুছিয়ে ব্যাগে রেখে দলের সাথে মাঠে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বাসে উঠার ঠিক আগে আগে টিম ম্যানেজার আমাকে জানালেন, কিট ব্যাগ সাথে নিয়ে নাও, আজকের ম্যাচে তুমি দ্বাদশ খেলোয়াড় হচ্ছো।’

‘এই কথা শোনার সাথে সাথেই আমার আগের কথা মনে পড়ে গেলো। আমি আব্বুকে বলেছিলাম অস্ট্রেলিয়ায় একা একা কীভাবে যাব। একা যাওয়ার ব্যাপারে আমি কিছুটা ভয়ে ছিলাম। কিন্তু আব্বু বলেছিল, এয়ারপোর্ট হলো একটা সমাজের রুপক। একা একা যদি এয়ারপোর্ট পার করে যেতে পারো, তাহলে বুঝবে তুমি জীবনে অনেক কিছুই করতে পারবে।’

‘ডাগআউটে বসে সুপার ওভার দেখা থেকে শুরু করে অ্যামি স্যাটারওয়েইট, মিগনন ডু প্রিজ ও লিজেলে লী’র মতো খেলোয়াড়দের সুপার ওভারের চাপ সামলাতে দেখা- আমি বলবো আমি অনেক ভাগ্যবান। তাদের একাগ্রতা, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ- সবকিছুই শিক্ষণীয় ছিল।’

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রুমানা আহমেদ একাধারে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। একমাত্র নারী ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিকের মালিকও রুমানা। ২০১১ সালে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের খেলা সবকয়টি ওয়ানডেতেই ছিলেন রুমানা। ভারত সফরে ওয়ানডে ও টি-২০ দুই সিরিজেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন রুমানা। বোলিংয়ে ছয় ম্যাচে পেয়েছিলেন ৫ উইকেট, লং অফ থেকে ৩০ গজ দৌড়ে নেয়া দুর্দান্ত ক্যাচ সাড়াও ফেলেছিল বেশ।

ক্রিকইনফো অবলম্বনে সংক্ষেপিত

About Sanjoy Basak Partha

Check Also

এ.বি.ডি ভিলিয়ার্স: ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’র অবিশ্বাস্য কিছু রেকর্ড  

মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি নামটা তাঁর চেয়ে ভালো আর কারোর সাথে যাওয়া সম্ভব না। বল যেখানেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *