গত দুইবারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ী দল তাঁরা। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গতকাল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হয়েছিল টানা তৃতীয় ফাইনাল নিশ্চিত করতে। সমর্থকদের হতাশ করেনি জিনেদিন জিদানের দল, ঘরের মাঠে ২-২ গোলে ড্র করে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলের অগ্রগামিতা নিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেছে লস ব্লাঙ্কোসরা। আর ফাইনালে যাওয়ার পর দলটির অধিনায়ক সার্জিও রামোস বলছেন, ফাইনালে খেলাটা প্রাপ্যই ছিল তাঁর দলের।
সেমিফাইনালে স্বভাবসুলভ দাপট দেখাতে না পারলেও নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই ইউক্রেনের কিয়েভে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে রিয়াল, এমনই অভিমত রামোসের। ম্যাচ শুরুর মাত্র তিন মিনিটের মাথায়ই জশুয়া কিমিচের গোলে ফিরে আসার সমস্ত সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বায়ার্ন। কিন্তু বিরতির ৮ মিনিট আগে মার্সেলোর ক্রস থেকে হেডে গোল করে রিয়ালকে দুই লেগ মিলিয়ে আবারও এগিয়ে দেন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা।
দ্বিতীয়ার্ধের একদম শুরুতেই বায়ার্ন কিপার উলরেইখের হাস্যকর ভুলে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন বেনজেমা। কিন্তু তারপরেও ম্যাচে ফেরার আশা ছেড়ে দেয়নি ইয়ুপ হেইঙ্কেসের দল। হামেস রদ্রিগেজ গোল করলে ম্যাচে ২-২ সমতা আসে, আরেকটি গোল করলেই অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে ফাইনালে পৌঁছে যেত বাভারিয়ানরা। কিন্তু কেইলর নাভাসের দৃঢ়তায় ২-২ স্কোরলাইন ধরে রেখেই ফাইনালে পা রাখে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
ম্যাচের বেশিরভাগ সময়টা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছে বায়ার্নই, মার্সেলোর বিপক্ষে জোরালো হ্যান্ডবলের দাবিও উঠেছিল। রামোস নিজেও পড়িমরি করে লেভানডোস্কিকে গোলবঞ্চিত করেছেন বার দুয়েক। তারপরেও নিজের দলকেই ফাইনালের জন্য যোগ্য মানছেন রামোস, ‘এই দল নিয়ে আমি গর্বিত। দল হিসেবে আমরা দুর্দান্ত, এবং কয়েক বছর ধরেই আমরা তা দেখিয়ে আসছি।’
গোলকিপার কেইলর নাভাসও সমর্থন জানিয়েছেন অধিনায়কের কথায়, ‘কষ্ট হয়েছে ঠিকই, তবে শেষ পর্যন্ত আমরা ফাইনালে উঠেছি। এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। ইতিহাস রচনা করছি আমরা। এই জয় সকলের জন্য।’
তবে বায়ার্নের জার্মান ডিফেন্ডার ম্যাটস হামেলস বলছেন, ভালো খেলেও শুধু ফিনিশিংয়ের অভাবে ফাইনালে যাওয়া হয়নি তাঁর দলের, ‘পুরো ম্যাচে কিন্তু আমরা শ্রেয়তর দল ছিলাম। আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি, কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। এই পর্যায়ে এসে সুযোগ কাজে না লাগানোর মাশুল আপনাকে দিতেই হবে। আমরা দুর্দান্ত লড়াই করেছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা কোন কাজে আসেনি।’ তবে বায়ার্নকে দুইটি পেনাল্টি দেয়া হয়নি বলেও দাবি করেছেন হামেলস।
এদিকে দুই লেগ মিলিয়ে কোন গোল না পেলেও চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে আরেকটি রেকর্ডের মালিক হয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বার্নাব্যুতে গতকাল নিজের ১৫২ তম চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ম্যাচ খেলতে নেমে ম্যাচ সংখ্যার দিক থেকে ছাড়িয়ে গেছেন বার্সা কিংবদন্তি জাভি হার্নান্দেজকে।
গোলকিপার ছাড়া আউটফিল্ড খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা এতদিন জাভির দখলেই ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা রোনালদোরই সাবেক সতীর্থ ইকার ক্যাসিয়াসের দখলে। স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইউরোপের অভিজাত এই টুর্নামেন্টে ম্যাচ খেলেছেন সর্বোচ্চ ১৬৭ টি। আগামী দুই মৌসুম ঠিকভাবে খেলতে পারলে ক্যাসিয়াসকে ছাড়িয়ে যাবেন রোনালদো।