বারোমাসি ফল কলা বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর ফলগুলোর মধ্যে একটি। কলার মতো সর্বগুণসম্পন্ন ফল খুব কমই পাওয়া যায়। আজকের লেখায় থাকছে কলার উপকারী যত গুণ।
- কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে, যা কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করে। এছাড়া কলার বিভিন্ন উপাদান কিডনির নানাবিধ জটিলতা সারাতে সক্ষম।
- কলাতে এক ধরনের বিশেষ প্রোটিন রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- দেহে পর্যাপ্ত খনিজের অভাবে অনেকেই খিচুনি রোগে ভুগে থাকেন। কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, যা খিচুনি নিয়ন্ত্রণে উপকারী। কলার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম দুটোই এক্ষেত্রে খুব কার্যকরী।
- কলা হৃদরোগ থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধেও কলা বেশ কার্যকরী।
- আমাদের রক্তনালীতে কোলেস্টেরল জমলে সেই পথ দিয়ে রক্ত চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। কলাতে রয়েছে ফাইটোস্টেরলস, এই উপাদানটি শরীরে কোলেস্টেরলের উপাদান সীমিত রাখে, এবং রক্তনালী পরিষ্কার রাখে।
- রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য কলা খুবই উপাদেয় খাদ্য। কারণ কলায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।
- নিয়মিত কলা খেলে হাড় মজবুত থাকে, হাড়ের ক্ষয় হ্রাস পায়।
- গ্যাস্ট্রিক যাদের নিত্যসঙ্গী, তারা প্রতিদিন একটি করে কলা খেয়ে দেখতে পারেন, উপকার পাবেন।
- নিয়মিত কলা খেলে বিষণ্ণতা দূর হয়। কলায় আছে ট্রিপ্টফ্যান, যা সেরাটোনিনে রুপান্তরিত হয়ে বিষণ্ণতা দূর করতে সহায়তা করে।
- কলায় আছে ভিটামিন সি ও ই৬। এছাড়া কলায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় শরীরকে ডিহাইড্রেটেড হতে দেয় না।
- কলায় উপস্থিত উপাদান ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে।
- কলায় পেক্টিন নামক ফাইবার আছে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।
- কলায় প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত, যা শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সহায়তা করে।
এছাড়া বিভিন্ন রূপচর্চার কাজেও কলার ব্যবহার আছে। যেমন-
- কলার খোসা ফেলে না দিয়ে মুখে ঘষে নিন। ১৫ মিনিট পরে মুখ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া অল্প একটু কলা চটকে নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। এতে ত্বকের বলিরেখা দূর হবে।
- পাকা কলা খুব সহজেই পা ফাটা সারিয়ে তোলে। কলা চটকে নিয়ে ১০ মিনিট ধরে পায়ের ফাটা অংশে লাগিয়ে রাখুন। সপ্তাহে তিন-চারদিন এমন করলে পায়ের ফাটা কমে যাবে।
- কলায় কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম ও ভিটামিন আছে, যা চুলের জন্য খুব উপকারী। নিয়মিত কলার ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হয়। তার জন্য একটি পাকা কলা চটকে নিয়ে তাতে অল্প আমন্ড তেল মিশিয়ে চুলে ১৫ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
- কলায় উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় চোখের নিচের ফোলা ভাব দূর করতে কলা উপকারী। এক টুকরো কলা চটকে চোখের নিচে ফোলা অংশে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। কয়েকদিন ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।
- ত্বকের কালো দাগ ও ব্রণ নিরাময়েও কলা খুব ভালো কাজ করে। এক টুকরো কলার খোসা নিয়ে ব্রণ বা কালো দাগের উপর হালকা করে ঘষে নিন। খোসার রঙ কালো না হওয়া পর্যন্ত করতে থাকুন। দিনে তিনবার ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।