দিল্লী ডেয়ারডেভিলস নিলামে তাঁকে কিনেইছিল অধিনায়ক করার জন্য। মৌসুমের অর্ধেকটা না যেতেই সেই গৌতম গম্ভীরই অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করে বসলেন। আইপিএলের ইতিহাসের সফল অধিনায়কদের একজন তিনি, শিরোপা জিতেছেন দুইবার। কিন্তু তাহলে কেন পদত্যাগ করলেন তিনি?
আইপিএলের ১১ তম মৌসুম চললেও একবারের জন্যেও ফাইনাল খেলা হয়নি দিল্লীর। এবার তাই ঘরের ছেলের হাতেই দায়িত্ব সঁপে দিয়েছিল দলটি। কিন্তু প্রথম ছয় ম্যাচের ৫ টিতেই হেরে সেই গুরুদায়িত্ব সামলাতে চরমভাবে ব্যর্থ গম্ভীর। কিন্তু অধিনায়ক গম্ভীর নন, দিল্লীর জন্য বেশি সমস্যার সৃষ্টি করছিলেন ব্যাটসম্যান গম্ভীর। এই মৌসুমে সবচেয়ে বাজে খেলা তিন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের একজন গম্ভীর। পাঁচ ইনিংসে তিনি রান করেছেন মোটে ৮৫, তবে তার জন্য বল খেলেছেন ৮৮ টি! ওপেনিং ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট কিনা ৯৬.৫৯!
গত সোমবার ঘরের মাঠে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ম্যাচে ওপেন করতে নেমে মাত্র ৪ রান করতে ১৩ বল লাগিয়েছেন গম্ভীর! শেষ পর্যন্ত তাঁর দল শেষ বলে গিয়ে ম্যাচ হেরেছে ৪ রানে।
এই মৌসুমে পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে মারাত্মকভাবে ভুগছেন গম্ভীর, আর প্রতিপক্ষরাও তাঁর দুর্বলতা ধরতে পেরে তাঁর বিরুদ্ধে সেটিকেই ব্যবহার করেছে। পেসারদের বিপক্ষে তাঁর স্ট্রাইক রেট মাত্র ৭০, পাঁচ ইনিংসের মধ্যে চারটিতেই আউট হয়েছেন পেসারদের বলে। পেসারদের বিপক্ষে গড়ে প্রতি ১৫ বলে একটি করে বাউন্ডারি বের করতে পেরেছেন এই মৌসুমে! যেখানে পুরো আইপিএল ক্যারিয়ারেই তিনি প্রতি বাউন্ডারির জন্য মাত্র এক ওভার করে সময় নিয়েছেন।
স্পিনারদের বিপক্ষে তিনি বরাবরই স্বচ্ছন্দ, এই মৌসুমেও স্পিনারদের বিপক্ষে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৫৩.৫০। কিন্তু প্রথম ম্যাচে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষেই ৪২ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলার পথে স্পিনারদের বিপক্ষে ২৫ বল খেলেছিলেন। এরপরের চার ম্যাচে মিলিয়ে স্পিনারদের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৩ বল! প্রতিপক্ষ অধিনায়কেরা তাঁর দুর্বল দিক বুঝতে পেরেই তাঁকে পেস দিয়ে আক্রমণ করেছেন, আর তিনিও ব্যর্থ হয়েছেন।
গম্ভীরের বিকল্প কে হতে পারেন:
আন্তর্জাতিক টি-২০ তে ৩ টি সেঞ্চুরি আছে মাত্র ৩ জন ব্যাটসম্যানের। তাদেরই একজন কিনা দিল্লীর বেঞ্চ গরম করছেন! প্রথম দুই ম্যাচে খেলানোর পর কলিন মানরোকে আর খেলায়ইনি দলটি। প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৪ রান, আর পরের ম্যাচে কোন বল খেলার আগেই রান আউট হয়ে ফিরেছিলেন। ড্যান ক্রিশ্চিয়ানের বদলে মানরো দলে এসে হতে পারেন গম্ভীরের বিকল্প, আর ক্রিশ্চিয়ানের জায়গা নেবেন বিজয় শঙ্কর।
আরেকটি বিকল্প হতে পারেন মানজোত কালরা। এবারের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন কালরা, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন সেঞ্চুরিও। দিল্লীরই ছেলে কালরা হতে পারেন গম্ভীরের বিকল্প। আবার পরীক্ষিত ব্যাটসম্যান নমন ওঝাকেও নামিয়ে দেখতে পারে দলটি।
এদিকে গম্ভীরের পদত্যাগের পর ২৩ বছর বয়সী তরুণ ব্যাটসম্যান শ্রেয়াস আইয়ারকে অধিনায়ক ঘোষণা করেছে দিল্লী।
এই মৌসুমে ৩ জন ভারতীয়কে নিয়মিত খেলিয়েছে দলটি, ঋষভ পান্ত ও রাহুল তেওয়াতিয়ার সাথে আরেকজন দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান আইয়ার। তবে সিনিয়ার লেভেলে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা খুব একটা নেই আইয়ারের। এর আগে গত বছর নিউজিল্যান্ড এ দলের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব করেছিলেন ভারত এ দলের হয়ে।