বিশ্বের সবচেয়ে নৃশংস অপরাধী সংগঠন সমূহ – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ফিচার / বিশ্বের সবচেয়ে নৃশংস অপরাধী সংগঠন সমূহ

বিশ্বের সবচেয়ে নৃশংস অপরাধী সংগঠন সমূহ

মাফিয়া’-  না আমি কোন গেমের কথা বলছি না, বলছি না হলিউডের কোন সিনেমার কথা। আমি বলছি অন্ধকার সাম্রাজ্যের সেসব অধিপতিদের কথা যাদের ত্রাসে কাঁপে সরকার হতে প্রশাসন। কিন্তু নীরব নিভৃতে যাদের অর্থ মসৃণতার সাথে চালাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। কি অবাক হচ্ছেন? চলুন তবে আপনাকে নিয়ে যাই বিশ্বের অন্ধকার সাম্রাজ্যের অধিপতিদের কাছে।

আচ্ছা, মাফিয়া সাম্রাজ্যের কথা বলার আগে তাদের আয়ের উৎস সম্পর্কেও তো কিছু বলা দরকার। চলুন তবে জানি মাফিয়া সাম্রাজ্যের আয়ের উৎস নিয়ে। মাফিয়া সাম্রাজ্যের আয়ের উৎসের মাঝে রয়েছেঃ- মাদক পাচার, মানব পাচার, অবৈধ অভিবাসন, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়, প্রাকৃতিক সম্পদের ( হীরা, কয়লা, খনিজ সম্পদ, তেল ও পেট্রোলিয়াম, চন্দন সহ মূল্যবান কাঠ ইত্যাদি)  অবৈধ চোরাচালান, পোচিং (অবৈধ শিকার ও শিকারকৃত পশুর চামড়া সহ বিভিন্ন অঙ্গের অবৈধ চোরাচালান, সাপের বিষ পাচার), জাল ওষুধ প্রস্তুত ও বিক্রয়, সাইবার ক্রাইম, জাল মুদ্রা ও হুন্ডি ব্যবসায় ইত্যাদি।

তবে চলুন জানি বিশ্বের কুখ্যাত মাফিয়া সংগঠন গুলো সম্পর্কেঃ-  

ইয়াকুজাঃ

ইয়াকুজা’ ব্যতীত গোকুডো নামে পরিচিত, এই জাপানি ও কোরিয়ান সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেট এর নামে আতঙ্কিত হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাদের নিজস্ব অফিস ভবন, ব্যবসায়িক পরিচয়পত্র সবই রয়েছে; এমন কি প্রায়ই সংবাদপত্রের ভিন্ন ভিন্ন কলামে  তাদের সংবাদ দেখা যেন নিত্যদিনের বিষয় । তাদের কালো স্যুট এবং কনিষ্ঠ আঙ্গুলের কিছু অংশের অনুপস্থিতি (অপরাধ সংগঠন প্রধানের এর কাছে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতাপ দেখাতে কনিষ্ঠ আঙ্গুল এর উপরিভাগের কিছু অংশ কেটে ফেলা যা Yubitsume নামে পরিচিত) তাদের পরিচিতি প্রকাশ করে, ‘ইয়াকুজা’ সদস্যরা প্রায়ই বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের পরিচালক অথবা কর্পোরেট বোর্ডের পরিচালনায় জড়িত থাকে। ২০১১ সালের সুনামির পর ত্রাণ তৎপরতায় সমর্থন ও সাড়া দেওয়ায় ‘ইয়াকুজা’ সদস্যরাই প্রথমেই ছিলেন। ভাবতে আশ্চর্যই লাগে তাই না !

এইটিন্থ স্ট্রিট গ্যাংঃ

‘এইটিন্থ স্ট্রিট গ্যাং’- ছাড়াও তারা চিল্ড্রেন আর্মি হিসাবে পরিচিত, কারণ তারা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিশু-কিশোরদেরদের অপরাধহ সংগঠনের প্রাত্যহিক কাজে নিযুক্ত করেছে,  এইটিন্থ স্ট্রিট গ্যাং(অথবা এম -১৮) উত্তর গোলার্ধের বৃহত্তম দলগুলোর মধ্যে একটি।  লস এঞ্জেলেস এর কোন অজ্ঞাত বাড়িতে তাদের সদর দপ্তর। শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ৩০,০০০ এর বেশী সদস্য আছে বলে ধারণা করা হয়। তাদের এক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান এমএস-১৩ (আরও নিচে এই তালিকা), এবং তারা মেক্সিকান ড্রাগ কার্টেলস এবং কিছু ছোট সেন্ট্রাল আমেরিকান অপরাধী সংগঠনেরর সাথে সংযুক্ত বলে কথিত রয়েছে।

মুঙ্গিকিঃ

‘মুঙ্গিকি’- এক দুর্ধর্ষ, ভয়ংকর জঙ্গি-সন্ত্রাসী  সংগঠন যারা ধর্মের নামে উগ্রপন্থী কার্যকলাপ চালায়।  

‘কিকুয়ু ভাষায় ‘মুঙ্গিকি’ শব্দের অর্থ জনতা।  মুঙ্গিকি সবধরনের পশ্চিমা রীতিনীতির বিরুদ্ধাচরণ করে ও নিজস্ব ঐতিহ্যের প্রতি সমর্থন জানায়। বর্তমানে এরা  শুধুমাত্র কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতেই সক্রিয় ভাবে ট্যাক্সি ব্যবসায় ও বস্তির চাঁদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত; এবং কেউ যদি মুঙ্গিকিদের বিরোধিতা করে তবে মুঙ্গিকি সদস্যরা নৃশংস ভাবে  সেই ব্যক্তির শিরশ্ছেদ করে অথবা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। এমন কি কেনিয়ার আইন নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থাও যে কোন মানবেতর অপরাধের মাঝে মুঙ্গিকিদের হাত খুঁজে পায়।

রাশিয়ান মাফিয়াঃ

আনুষ্ঠানিকভাবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধী গোষ্ঠী বা সংগঠন হিসেবে ‘রাশিয়ান মাফিয়ার’ নাম উল্লেখ করা হয়।  অজ্ঞাত সাবেক এক এফবিআই স্পেশাল এজেন্ট” রাশিয়ান মাফিয়ার ” সদস্যদের পৃথিবীর বুকে হেঁটে চলা সবচেয়ে বিপজ্জনক মানুষ বলে অভিহিত করেছেন।

৪৫০ টি ভিন্ন ভিন গোষ্ঠীর মধ্যে তাদের সদস্য সংখ্যা প্রায়  ৩,০০,০০০ এর মত। বিস্তৃত ও বহির্মুখী উল্কিগুলির জন্যেও রাশিয়ান মাফিয়ার সদস্যরা  সুপরিচিত। তারা প্রায়ই সামরিক কৌশল ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদ, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচার এবং চুক্তি ভিত্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকে।

হেলস অ্যাঞ্জেলসঃ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর বরাত অনুসারে সংগঠিত অপরাধ চক্র বা ক্রাইম সিন্ডিকেটের তালিকায় একটি উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছে -‘দ্য হেলস অ্যাঞ্জেলস মোটরসাইকেল ক্লাব’। এই সিন্ডিকেটের সকল সদস্য হারলে ডেভিডসন এর বাইক চালায়। তাদের অপরাধের তালিকা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু দ্য হেলস অ্যাঞ্জেলস মোটরসাইকেল ক্লাব – এর অফিশিয়াল পলিসি বলছে ভিন্ন কথা। ক্লাব এর অফিশিয়াল পলিসিতে বলা রয়েছে, ক্লাবের  সকল সদস্য মোটরসাইকেলের ব্যপারে উৎসাহী; কোন সদস্য যদি কোন অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে  তবে তা ঐ সদস্যের ব্যক্তিগত দায়, সেই ঘটনায় দ্য হেলস অ্যাঞ্জেলস মোটরসাইকেল ক্লাব  কোনভাবেই দায়ী নয়। পপ কালচারে বিশ্বাসী এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের ১৯৬৬ সালের ওয়াইল্ড অ্যাঞ্জেলস সিনেমায় নিষ্ঠুর, হিংস্র অপরাধী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই ক্রাইম সিন্ডিকেটের সদস্যদের আয়ের উৎস মাদক পাচার, চাঁদাবাজি ও সেক্স র‍্যাকেট।

সিসিলিয়ান মাফিয়াঃ দ্য কোসা নোস্ট্রাঃ

যদিও উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে  এক তরুণ মাফিয়োসোর হাতে প্রতিষ্ঠিত ইতালীয় মাফিয়া ও মার্কিন মাফিয়া সংগঠন কোসা নোস্ট্রা ; কিন্তু খুব অল্প সময়েই তা অপরাধী সংগঠন গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ, দুর্ধর্ষ ও বিভীষিকাময় সংগঠন হিসেবে পরিচিতি পায়। কঠোরভাবে পরিবার তন্ত্রে বিশ্বাসী সংগঠনটির নিজস্ব গঠনতন্ত্র রয়েছে। সগঠনটির অন্তর্ভুক্ত হতে হলে খাঁটি সিসিলীয় হতে হয়। তারা কঠোর ভাবে ওম্যের্তা  বা গোপনীয়তা রক্ষার মন্ত্রে দীক্ষিত এবং গোপনীয়তার ভঙ্গ মানে নিশ্চিত মৃত্যু।

আলবেনিয়ান মবঃ

পনেরোটি গোষ্ঠী রয়েছে যারা সরাসরি আলবেনিয়ান ক্রাইম সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করে। আলবেনিয়ান অপরাধী সংগঠনগুলো পুরোপুরি ভাবে পরিবারতান্ত্রিক, কঠোর শাসনে নিয়ন্ত্রিত; যা বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে রয়েছে। মাদক পাচার, অস্ত্র চোরাচালান ও বিক্রয়, এবং মানব পাচার তাদের আয়ের প্রধান উৎস। আলবেনিয়ানরা ভীষণ ভাবে আক্রমণাত্মক ও অতি অল্পতেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আলবেনিয়ান মব এর পরিচিত গডফাদার দাউদ কাদরিভস্কি ইউরোপের সবচেয়ে বড় হেরোইন ডিলার হিসেবে অভিযুক্ত।

সার্বিয়ান মাফিয়াঃ

সার্বিয়া ও সার্বিয়ান অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠীর মাঝে থেকে এমন কিছু মাফিয়া সদস্য উঠে আসে যারা যুগোস্লাভ যুদ্ধের পর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। অর্থনৈতিক মন্দা সার্বিয়ান মাফিয়ার সদস্যদের মাঝে নৃশংসতা ও অপরাধ প্রবণতার বিস্তার ঘটায়। ৩০-৪০টি দেশের অভ্যন্তরে সার্বিয়ান মাফিয়ার সক্রিয়তার প্রমাণ মেলে। উল্লেখযোগ্য অপরাধের মাঝে রয়েছে মাদক পাচার,বন্দুকবাজি ও হত্যা প্রভৃতি। সার্বিয়ান মাফিয়াদের নৃশংসতার চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে উঠে আসে ২০০৯ সালের একটি ঘটনায়। মাদ্রিদে সার্বিয়ান মাফিয়া বসেরা একত্রিত হয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করা  সদস্যকে হত্যা করে; কিন্তু ঘটনা সেখানেই থেমে থাকে না, পরবর্তীতে সেই সদস্যের শরীর মিট গ্রাইন্ডার (মাংস পেষন যন্ত্র) এ পিষে সকলে মিলে সেই মাংস ভক্ষন করে। শুধু একবার ভাবুন কতটা নিষ্ঠুর ও নৃশংস তারা!

মন্ট্রিল মাফিয়াঃ দ্য রিজোটোস

রিজোটো পরিবার, যাকে একনামে বলা যায় বিজনেস মাফিয়া। রিজোটো ক্রাইম সিন্ডিকেটের পদচারনা মূলত  কানাডার মন্ট্রিলে হলেও, তাদের অপরাধ জগতের বিস্তার দক্ষিণ ক্যুবেক ও অন্টারিও জুড়েও বিস্তৃত। নিজেদের অন্ধকার সাম্রাজ্যের শক্তি বাড়াতে প্রাথমিক অবস্থায় তারা নিউ ইয়র্কের বোনানা ‘মাফিয়া’ পরিবার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোসা নোস্ট্রা) -যারা নিউইয়র্কের কুখ্যাত “পাঁচ মাফিয়া পরিবার” এর মধ্যে অন্যতম তাদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে। যার পরিণাম ডেকে আনে ১৯৭০ সালের মন্ট্রিলের ভয়াবহ মাফিয়া যুদ্ধ। এই যুদ্ধে রিজোটো পরিবারের ঊর্ধ্বতন নিয়ন্ত্রক ও পরামর্শক হয় পুলিশের ‘স্টিং অপারেশন’ -এ গ্রেপ্তার হয় অথবা গুপ্ত হত্যার শিকার হয়। ফলে নেতৃত্বের স্থানে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। বর্তমানের মন্ট্রিলের নির্মাণ চুক্তির অধিকাংশই রিজোটো পরিবারের মালিকানাধীন।

মেক্সিকান ড্রাগ কার্টেলসঃ

যদিও মেক্সিকোর মাদক পাচারের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস কয়েক দশক ধরে বিদ্যমান, তবে মেডেলিন ও ক্যালি কলাম্বিয়ান কার্টেলের ধ্বংসের সাথে সাথেই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় মেক্সিকান ড্রাগ কার্টেল। মেক্সিকোের অর্থনীতির প্রায় ৬৩% আসে মাদক পাচারের মাধ্যমে যা শত শত মৃত্যুর জন্য দায়ী। সারা পৃথিবী জুড়ে “মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” বিপজ্জনক ও ভয়াবহ সহিংসতার সৃষ্টি করে। মেক্সিকান কার্টেল এর প্রত্যক্ষ মদদে ও সহিংস প্রতিশোধের শিকার হয়ে ২0,000 এরও বেশি মানুষ অদৃশ্য হয়ে যায় । পরবর্তীতে প্রশাসনিক তদন্তের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় গণ কবরের সন্ধান পাওয়া যায়। কবর খননে ২৪০০০ মৃতদেহ পাওয়া যায়। মেক্সিকান কার্টেলের কাছে ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন এর মত অপরাধ খুবই মামুলি ব্যপার, এবং কার্টেল সদস্যদের প্রায় প্রত্যেকেই রকেট লঞ্চার এবং সর্বব্যাপী একে-৪৭ এর মত সামরিক গ্রেড এর অস্ত্র ব্যবহার করে।

মারাত্তু সালভাতুচ্চাঃ

‘এম এস- ১৩’, এর বেশিরভাগ সদস্য-ই সেন্ট্রাল আমেরিকান। ‘মারাত্তু সালভাতুচ্চা’ নামক অপরাধ সগঠনটির প্রাণ কেন্দ্র লস এঞ্জেলেসে অবস্থিত, যদিও তারা উত্তর আমেরিকা ও মেক্সিকোতে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের কার্যকলাপ ভীষণভাবে নৃশংস ও হিংস্র। তাদের আতঙ্ক সৃষ্টির ক্ষমতায়  প্রভাবিত হয়ে  মেক্সিকোর কুখ্যাত সিনোলা কার্টেল ‘মারাত্তু সালভাতুচ্চা’ এর সদস্যদের নিজস্ব অপরাধের কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োগ করা হয়। এই গ্যাংটিতে ৫০,০০০ এরও বেশি সদস্য সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।  ‘মারাত্তু সালভাতুচ্চা’ গ্যাং এর সদস্যদের মুখ এবং বুকের উপর বড় বড় উল্কি আঁকা থাকে যা তাদের পরিচয় প্রকাশ করে।  তাদের স্বতন্ত্র সাইন ল্যাংগুয়েজ ও রয়েছে।

কলাম্বিয়ান ড্রাগ কার্টেলঃ

২০১১ সাল পর্যন্ত, কলাম্বিয়া ছিলো বিশ্বের শীর্ষ কোকেন উৎপাদনকারী দেশ। কিন্তু এক শক্তিশালী মাদকদ্রব্য বিরোধী অভিযানে মেডেলিন ও ক্যালি কার্টেলের মত মাদক পাচারকারি সহিংস অপরাধ সংগঠন সমুলে নির্মূল হয়ে যায়। মেডেলিন ও ক্যালি কার্টেল, সংগঠন দু’টি এতো দুর্ধর্ষ ছিলো যে তারা মাদক পাচারের জন্য রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশল বিশেষজ্ঞদের নিযুক্ত করেছিলো। মেডেলিন ও ক্যালি কার্টেলের মত বৃহত্তর মাদক পাচার গোষ্ঠীর অন্তর্ধানের ফলে কলাম্বিয়ার সংগঠিত অপরাধ জগতে ফাটল ধরে এবং পরবর্তীতে কলাম্বিয়ান গেরিলা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উভয় পক্ষের কম্বিং অপারেশনের ফলে কলাম্বিয়ান ড্রাগ কার্টেলের প্রতাপ প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।

চাইনিজ ট্রায়াডসঃ

 ‘ট্রায়াড’ নামটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে চীনের সংগঠিত ক্রাইম সংগঠনের গুলোর অস্তিত্ব। এই নামটি উঠে এসেছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ব্যবহৃত ত্রিভুজাকার এক চিহ্ন হতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে ‘চাইনিজ ট্রায়াড’ প্রতি বছর এক লাখের উপর অবৈধ অধিবাসীকে, অবৈধ উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করে। চাইনিজ ট্রায়াড মুদ্রা জালিয়াতি ও পাচারের সাথেও জড়িত বলে কথিত রয়েছে। চাইনিজ ট্রায়াডের অপরাধমূলক অপারেশন পরিচালনার প্রধান কেন্দ্র হংকং বলে জানা যায়।

ডি- কোম্পানিঃ 

ভারত, পাকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছড়িয়ে থাকা এই অপরাধী দলটি দাউদ ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন এবং আন্তর্জাতিকভাবে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত। দাউদ ইব্রাহীম ও তার সৃষ্ট  ‘ডি- কোম্পানি’ যে সকল অপরাধের জন্য অভিযুক্ত; তার মধ্যে রয়েছে ১৯৯৩ সালের মুম্বাই বোমা বিস্ফোরণের মতো সন্ত্রাসী হামলা, যে ঘটনায় ২৫৭ জন নিহত হয়েছিলো এবং ৭০০ এর অধিক মানুষ আহত হয়েছিলো। দাউদ ইব্রাহীম এর সাথে আল-কায়েদা ও তালেবানদের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় এবং  ডি-কোম্পানী পরিচালিত বৈধ ব্যবসায় (রিয়েল এস্টেট ও ব্যাংকিং সহ) এবং অবৈধ ও অপরাধমূলক কার্যক্রমগুলোতে তাদের কোটি কোটি ডলারের অর্থায়ন রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বর্তমান সময়, দাউদ ইব্রাহীম প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে নিজের চেহারা পাল্টে পাকিস্তানে লুকিয়ে রয়েছে বলে কথিত আছে।

অপরাধের অন্ধকার সাম্রাজ্যে না হারাক মানুষের মূল্যবোধ ও নৈতিকতা, এই কামনায় আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তীতে আবারো আসবো আপনাদের সামনে নতুন কোন লেখা নিয়ে; ততদিন ‘প্রিয়লেখার’ সাথেই থাকুন।

About Naseeb Ur Rahman

Check Also

কথা বলবার সময় আমরা ‘অ্যা’, ‘উম’ এসব উচ্চারণ করি কেন?

কথা বলবার সময় আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে ‘অ্যা’, ‘উম’ ইত্যাদি আওয়াজ নিঃসরণ করে থাকি। এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *