শুভ বাংলা নববর্ষ, ১৪২৫! – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ফিচার / শুভ বাংলা নববর্ষ, ১৪২৫!

শুভ বাংলা নববর্ষ, ১৪২৫!

মুছে যাক সকল কালো স্মৃতি, ঘুচে যাক সকল জরা। বাঙালির জীবনে আসুক সুখ ও সমৃদ্ধির নতুন এক ভোর, স্বর্নালী এক সূর্য। ১৪২৪ বিদায় জানিয়ে আজ আমরা বরণ করে নিচ্ছি ১৪২৫ সাল। বাঙালিদের জীবনে অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসবমুখর যেসব অনুষ্ঠান রয়েছে, তাদের মাঝে পহেলা বৈশাখ বা পয়লা বৈশাখ তালিকায় একদম ওপরে। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরা সমান উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে এই দিনটি পালন করে থাকে। ব্যবসায়ীদের হাতে ওঠে নতুন বছরের হালখাতা। পুরনো সব হিসাব নিকাশ চুকিয়ে হাসিমুখে মিষ্টিমুখের মাধ্যমে বরণ করে নেয় দোকানে আসা অতিথিদের। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ কিংবা ১৫ এপ্রিল পালন করা হয় পহেলা বৈশাখ। বাংলা একাডেমীর বেঁধে দেয়া রীতি অনুসারে ১৪ এপ্রিল বা পহেলা বৈশাখ পালন করে বাংলাদেশের মানুষ ও ১৫ এপ্রিল পালন করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ।


হিন্দুদের সৌরপঞ্জিকা অনুসারে পহেলা বৈশাখ পালন করার রীতি অনেক আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। তবে এখনকার দিনে এটিকে যেমন আমরা একটি সার্বজনীন অনুষ্ঠান হিসেবে পালন করে থাকি, পূর্বে কিন্তু তা ছিল না। নববর্ষ একটি ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালন করা হতো। মূল উপলক্ষ্য বা তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ। প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতা আজ আমরা যেমন উপভোগ করছি, পূর্বের কৃষকরা কিন্তু তেমনভাবে উপভোগ করতে পারত না। তাদেরকে নির্ভর করে থাকতে হতো ঋতুর ওপর।
তবে বাংলা সন প্রবর্তন করবার জন্য মোগল সম্রাট আকবরের কাছে আমরা কিন্তু অনেকটাই ঋণী। ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হবার পর হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষকদের কৃষিজ পণ্যের ওপর খাজনা বা কর দিতে হতো। বিপত্তিটা বাঁধে সেখানেই। হিজরি সন চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হবার কারণে তা কৃষকদের ফসল ফলার সাথে ঠিক মিলত না। ফলে তাদের কাছ থেকে অসময়ে খাজনা আদায় করতে হতো। কৃষকদের সহ্য করতে হতো অবর্ণনীয় কষ্ট। খাজনা আদায়ে একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করবার জন্য এবং কৃষকদের যাতে কষ্ট না হয়, এই কারণে সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। যুগের পর যুগ চলতে থাকা প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতেও সংস্কার আনার আদেশ দেন। এর ফলে কৃষকদের খুব সুবিধা হলো। তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজী সৌর সন ও হিজরী সনের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম প্রবর্তন করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ মার্চ (মতান্তরে ১১ মার্চ) থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। আকবরের সিংহাসনে আরোহণের সময়কাল থেকেই এই গণনা পদ্ধতি চালু হয়। প্রথমে ফসলি সন ও পরবর্তীতে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ হিসেবে পরিচিত হয়।


আজ যেমন আমরা হালখাতা উপলক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের মিষ্টিমুখ করতে দেখি, আকবরের সময়কাল থেকেও এটি প্রচলিত ছিল। চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে বকেয়া খাজনা, শুল্ক ইত্যাদি পরিশোধ করে নতুন খাতা খুলতে হতো। তখনকার সময়ে ভূমিমালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদের মিষ্টিমুখ করাতেন। নানা ধরনের উৎসবে মুখর হয়ে উঠত এই বাংলার জনপদ। সেখান থেকে আস্তে আস্তে পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়ে বাংলার নতুন বছরের উৎসব বর্তমানের পর্যায়ে এসেছে। মূলত হালখাতা ধারণাটি তখন থেকেই শুরু হয়েছিল। হালখাতা বলতে বোঝানো হতো নতুন একটি হিসাবের বই, যেখানে পুরনো কোনো হিসাব থাকবে না। এই প্রথাটি এখনও আমাদের দেশে দেখা যায়, তবে তা মিষ্টি ও স্বর্ণের দোকানেই বেশি দেখা যায়। আধুনিক নববর্ষ পালনের প্রথম খবরটি পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে তখন পহেলা বৈশাখে কীর্তন গাওয়া হয় এবং পূজার ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৩৮ সালেও এমন একটি ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে ১৯৬৭ সনের পূর্বে এখনকার মতো এমন ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি খুব একটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।


আমরা শহরবাসীরা যতটা উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে দিনটি পালন করিনা কেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও রীতির সাথে এই দিনটির সংযোগ অত্যন্ত নিবিড়। ঘরে ঘরে নানাধরনের খাবার রান্না করা হয়ে থাকে, পিঠাপুলি, পায়েস ইত্যাদি খাবার তৈরি করা হয়ে থাকে। নতুন নতুন কাপড় পরে মানুষ এবাড়ি ওবাড়ি গিয়ে সৌজন্য বিনিময় করে। কোথাও কোথাও বসে গ্রাম্য মেলা। মেলায় আসে নাগরদোলা, নানাধরনের বাহারী জিনিস, নৌকাবাইচ, বানর নাচ ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন পহেলা বৈশাখের একটি অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়াও বাচ্চাদের জন্য নানাধরনের আয়োজন করা হয়, উৎসবে মাতে গোটা গ্রাম।
ঢাকা শহরে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের একটি অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখের এই মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। নানাপেশার মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। পুরনো মুছে ফেলে নতুন এক বছরের আবাহনে সকলেই এসে যোগ দেন এই মঙ্গল শোভাযাত্রায়। আয়োজন করা হয় গান, নাচ, গ্রামীন ঐতিহ্যের পরিচায়ক হিসেবে নানাধরনের উৎসবকে। পান্তা ইলিশ, সাথে একটুকরো কাঁচা মরিচ কিংবা পেঁয়াজ- মাটির হাড়িতে করে এটিই মহাসমারোহে গ্রহণ করে বাঙালি। নারীরা শাড়ি চুড়ি পরে বের হয়। চারদিকে লাল হলুদ আর তারুণ্যের সমারোহ। সকলেই এই দিনটিকে বরণ করে নিতে চায় নিজের মতো করে, আশা করে সফল একটি নতুন বছরের।
তবে একটু সাবধানে থাকবেন সবাই। বিগত কিছুবছরে নববর্ষ পালনে বেশ কিছু অপ্রীতিকর অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে মানুষকে। সেসব যেন আবার ফিরে না আসে, সেজন্য উপযুক্ত সাবধানতা অবলম্বন করবেন সবাই।
আবারও সবাইকে শুভ নববর্ষ!

About ahnafratul

লেখালেখি করতে ভালোবাসি। যখন যা সামনে পাই, চোখ বুলিয়ে নেই। চারদিকে তাকাই, উপলব্ধি করার চেষ্টা করি। দুনিয়াটা খুব ছোট, তারচাইতেও অনেক ছোট আমাদের জীবন। নগদ যা পাই, হাত পেতেই নেয়া উচিত। তাই না?

Check Also

কথা বলবার সময় আমরা ‘অ্যা’, ‘উম’ এসব উচ্চারণ করি কেন?

কথা বলবার সময় আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে ‘অ্যা’, ‘উম’ ইত্যাদি আওয়াজ নিঃসরণ করে থাকি। এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *